Friday, December 4, 2020

Halum Hulum Food Centre, one of the best street food vendors of Barasat

বাংলায় এম এ পাশ করা এক শিক্ষিত যুবকের দৈনিক লড়াই এর কাহিনী। বারাসাত এর নিবেদিতাপল্লি নিবাসি বিবেক মন্ডল বারাসাত ডাকবাংলো মোড়ের এর কাছে এলাহাবাদ ব্যাংক এর বিপরীত এ ফুটপাত এ চিলি চিকেন, ফ্রায়েড রাইস, বিরিয়ানি বিক্রি করে তার সংসার চালান। রাস্তার পাশের ফুডস্টল, নাম দিয়েছেন হালুম, হুলুম ফুড সেন্টার


যাতায়াত এর কারনে প্রায় রোজই চোখে পরে, কিন্তু কোনো দিন গিয়ে খাওয়ার সুযোগ বা সময় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু কাল রাতে এই ভিডিও টা চোখে পরায় এটা কে শেয়ার করার সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। যিনি এই ভিডিও টা করেছেন, তাকে আমার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। 

Friday, November 27, 2020

ফুটবলের রাজপুত্র, স্টেডিয়াম আর এক রাশ স্মৃতি বারাসতের কাছে

ফুটবল পাগল বাঙালির কাছে দিয়েগো মারাদোনা যেন ঈশ্বরসম। তাঁর সময়ে তাঁকে ছোঁয়া, দেখা, স্পর্শ করা সবই ছিল বাঙালির কাছে কল্পনা, অবাস্তব ভাবনা। উত্তর চব্বিশ পরগণার বারাসতের মানুষের সেই কল্পনা বাস্তব হল, ২০১৭ সালে শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের উদ্যোগে। একটি স্টেডিয়াম উদ্বোধন করতে মারাদোনা উপস্থিত হলেন বারাসতে। ‘হ্যান্ড অব গড’-এর মালিক তখন হাতের নাগালে। মারাদোনা আজ শুধুই স্মৃতিতে। বারাসত স্কুলের সেই স্টেডিয়ামে রয়ে গিয়েছে সে দিনের স্মৃতি।


স্কুলের চেয়ারম্যান অনির্বাণ আদিত্য বলেন, “মারাদোনা আসার দিন বেশ কয়েকবার পাল্টে যায় তাঁর অসুস্থতার কারণে। কিন্তু আচমকা যখন দিন ঠিক হল, আমরা চার মাসের মধ্যে গোটা স্টেডিয়ামটা তৈরি করে ফেলেছিলাম। দিয়াগো ভার্সেস দাদা (সৌরভ গাঙ্গুলি) একটি ম্যাচ রাখা হয়েছিল অনুষ্ঠানের দিন। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় তিনি ম্যাচটা খেলতে পারেননি। আর তারপরই হঠাৎ তিনি স্কুলের ছেলে মেয়েদের নিয়ে একটি ফুটবল ওয়ার্কশপ শুরু করে দেন।” বাংলাতে মেয়েরা ফুটবলে এই ভাবে অংশ নেয় তা দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন মারাদোনা। সে দিন তাঁর কাছ থেকে ফুটবলের ট্রেনিং পাওয়া এক ছাত্রী অদিতি রায় বলেন, “আমরা খুব ভাগ্যবান যে এত মানুষের মধ্যে ওনার সঙ্গে  ফুটবলে পা মেলাতে পেরেছিলাম।” অন্য এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র দীপ্তক বিদ্যার্থী বলেন, ‘‘মারাদোনা আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁর দর্শন মানে ঈশ্বরের দর্শন।’’ স্কুলের প্রিন্সিপাল পারমিতা ঘোষাল বলেন, “সে দিনের স্মৃতি বারবার মনে পড়ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত ফুটবলার শ্যাম থাপা,  দীপেন্দু বিশ্বাস, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মনোজ তিওয়ারির মতো বিখ্যাত খেলোয়াড়।’’ 


সেই দিন মারাদোনার সঙ্গে মাঠের পর ওঁর হোটেলের ঘরে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছিলেন ফুটবলার ও বিধায়ক দিপেন্দু বিশ্বাস। তার সঙ্গে ভারতীয় ফুটবল, ডার্বি, দর্শক এই সব নিয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ফুটবলের ঈশ্বর মারাদোনার বাঁ পা আমি হাত দিয়ে ধরতে পেরেছি সেই দিন। এটা আমার সারা জীবনের বড় স্মৃতি।’’


একটা স্কুলের অনুষ্ঠানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ দর্শকাসনে উপস্থিত ছিলেন। বারাসাত টাকি রোড জুড়ে ছিল মানুষের ভিড়। যাঁরা কাছে পৌঁছতে পারেননি, তাঁদের দূর থেকে দেখেই আশ মেটাতে হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মহম্মদ আলি বলেন, ‘‘গাড়ির মধ্যে থেকে হাত নাড়তে নাড়তে চলে গিয়েছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র।’’


Source: Ananda Bazar 

বারাসতে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীরাও পাবেন সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা

 অনেকেই এখন হোম আইসোলেশনে থেকে করোনার সঙ্গে লড়ছেন। বারাসত পুরসভা এলাকায় এ বার সেই রকম রোগীরাও সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। বিষয়টি নিয়ে আজ বুধবার বারাসত পুরসভায় বৈঠক হয়। কী ভাবে এই পরিষেবা দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। গোটা রাজ্যেই এমন পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য সরকার।


বারাসতের মুখ্য পৌর প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়ের মতে, অনেক সময় করোনা টেস্ট পজিটিভ এলেও সে খবর প্রশাসনের কাছে পৌঁছচ্ছে না বা দেরিতে পৌঁছচ্ছে। ভীতি বা আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণে অনেকে বাড়িতে থাকতে চাইছেন। তাই যাতে মানুষ ভীত না হন এবং বাড়িতে বসেই করোনার সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা পান, সে জন্যই এই উদ্যোগ।


হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের টেলিফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা চালানো হবে। যদি অবস্থার অবনতি হয় তবে তাঁদের নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।


বুধবারের বৈঠকে সুনীল ছাড়াও ছিলেন বারাসতের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা তাপস রায় এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বারাসত শাখার প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ সাহা এবং জেলার কোভিড ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক বিবর্তন সাহা।


Source: Ananda Bazar

কাজীপাড়া ব্রিজের যানজট! বারাসতে নাজেহাল বাসিন্দারা চান শুধু একটা ব্রিজ

 একটা ব্রিজ চাইছে বারাসত। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এখন এই একটি ব্রিজই দিতে পারে আপাত স্বস্তি। অন্তত জেলা সদর শহরকে কিছুটা যানজটের হাত থেকে বাঁচাতে পারে একটি চওড়া ব্রিজ। বারাসত চাঁপাডালি মোড় থেকে পূর্ব দিকে এগোলেই তিতুমীর বাস স্ট্যান্ডে ঢোকার পথ, মাছ বাজার, তারপর জেলা সদর হাসপাতাল, তারপর কাজীপাড়া রেলগেট আর এই জগদীঘাটা ব্রিজ। বনগাঁ,  হাবরার মত শহরের সঙ্গে জেলা সদর ও কলকাতার যোগাযোগের সহজতম পথ হল যশোর রোড।যাকে ৩৫ নং জাতীয় সড়ক বলে জানেন লোকে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পেট্রাপোল ও বেনাপোল বন্দরের জন্য এই যশোর রোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


কলকাতা শহর বা বারাসাত হয়ে গাড়িগুলি বনগাঁর দিকে এগোতে গেলে এই অপরিসর ব্রিজ হয়ে উঠছে প্রধান সমস্যা। দুই দিক থেকে বাস, ট্রাক, অটো, টোটো এসে জট পাকিয়ে যায় এখানে। এমনিতেই বারাসত চাঁপাডালি মোড় একপ্রকার পাকদন্ডির মত। সামান্য দূরত্বে বেশ কয়েকটি মোড় আর রাস্তার সংযোস্থল হওয়ায় যানজট অতি স্বাভাবিক ঘটনা। তার উপর এই কাজীপাড়া ব্রিজের কারনে যানজটে নাজেহাল সাধারন মানুষ।


আর কাজীপাড়া ব্রিজের  জটের রেশ গিয়ে পড়ে সারা শহরে। এই ১০ মিনিটের পথ পাড় হতে তখন সময় লেগে যায় এক ঘন্টা, দাবি এই পথের অটো চালক তারক হাজরার। ছোটবেলা থেকেই এই সরু ব্রিজ চওড়া হবে শুনে আসছেন এনতিয়াজ আলি। কাজীপাড়ার বাসিন্দা এনতিয়াজের দাবি এই ব্রিজের দু’ধারের দোকানগুলি সরানোই ব্রিজ চওড়া হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা। সেই ছোট্ট কাজীপাড়া ব্রিজই এখন শহরের যানজটের অন্যতম সমস্যা। আ্যাম্বুলেন্স হোক আর যাত্রী বোঝাই বাস হোক, নিস্তার নেই কারও। সকালে অফিস টাইম আর সন্ধ্যায় এই পথ সব যাত্রীদের যাতায়াত  বিরক্তিকর ও বিপদজনক।


ছোটখাটো দূর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে বলে মত এই পথের যাত্রীদের। বারাসত পুরসভার পুর প্রশাসক সুনীল মুখার্জি র অভিযোগ গত ১০ বছরে বারবার ন্যাশানাল হাইওয়ের অথরিটিকে বারবার বলা হয়েছে কাজীপাড়া ব্রিজ চওড়া করতে। পুরপ্রশাসকের আক্ষেপ, বারবার বলা সত্বেও সমাধান হয়নি এই ব্রিজের সমস্যার।


Source: News 18

Monday, November 9, 2020

লকডাউনে গার্ডরেলে ঘিরল বারাসত স্টেশন, যাত্রা–স্বাচ্ছন্দ্যে চলমান সিঁড়ি, লিফট

 লকডাউনে গত প্রায় ৮ মাস ধরে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ লোকাল ট্রেন পরিষেবা। আর এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে হাওড়া, শিয়ালদহর মতো ব্যস্ত স্টেশনগুলি যাত্রীহীন থাকার সুযোগে সেজে উঠেছে। বিশ্বমানের সমস্ত সুযোগ–সুবিধা পাওয়া যাবে ওই স্টেশনগুলি থেকে। এবার একইভাবে ভোলবদলে আমূল পরিবর্তন হচ্ছে বারাসত স্টেশনের। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ফুট ওভারব্রিজ, চলমান সিঁড়ির পাশাপাশি প্রবীণদের জন্য লিফটও তৈরি হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বারাসত স্টেশনে।


বারাসত স্টেশন সাজিয়ে তুলতে খরচ করা হচ্ছে ৫ কোটি টাকা। এর বাইরে রয়েছে নির্মাণের খরচ। সমস্ত কাজ শেষ হতে আরও কিছু দিন লাগবে বলে জানা গিয়েছে। আর কী কী হচ্ছে বারাসত স্টেশনে?‌ ব্যস্ততম এই স্টেশনের সর্বত্র ছাউনি ছিল না। বৃষ্টি এলে সমস্যায় পড়তে হত যাত্রীদের। সেই কথা মাথায় রেখে পুরো স্টেশন জুড়ে বসানো হচ্ছে ছাউনি। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অকারণ অনেকে স্টেশনে ঢুকে পড়ে। তাতে যেমন ভিড় বাড়ে তেমনই নানা সমস্যা দেখা দেয়। সেই প্রবণতা আটকাতে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে বারাসত স্টেশন। অবৈধ নির্মাণ ভেঙে লাগানো হচ্ছে গার্ডরেল।


এদিকে, বারাসত স্টেশনে জোরকদমে চলছে সৌন্দর্যায়নের কাজ। কলকাতার ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান, মনীষীদের ছবি আঁকার কাজ চলছে দেওয়ালে দেওয়ালে। ১ নম্বর থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত চলমান সিঁড়ি তৈরির কাজও প্রায় শেষ। গার্ডরেল দিয়ে স্টেশন ঘিরে ফেলার এই উদ্যোগে লাইন পারাপারের জন্য দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও অনেক কাজ বাকি থাকলেও বুধবার থেকে ট্রেন চলাচল ফের শুরু হলে নতুন কাজকর্মের বেশ কয়েকটি সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। স্বাভাবিকভাবেই রেলের এই উদ্যোগে খুশি তাঁরা।


Source: Hindustan Times


চলমান সিঁড়ি, ফুটব্রিজ সংস্কারে ভোল বদলাচ্ছে বারাসত স্টেশন

 যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে লক্ষ রেখে সংস্কার করা হচ্ছে ফুট ওভারব্রিজের, তৈরি হচ্ছে চলমান সিঁড়ি, প্রবীণদের জন্য লিফট। যাত্রীরা রোদ-জলে অসুবিধায় যাতে না পড়েন, তার জন্য যে সব জায়গায় ছাউনি ছিল না, সেখানে তৈরি হচ্ছে ছাউনি। স্টেশন চত্বর ঘিরে দেওয়া হচ্ছে গার্ডরেল দিয়ে। এ ছাড়াও, দেওয়ালে লাগানো হচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান, মনীষীদের ছবি। দীর্ঘদিন লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে শিয়ালদহের ধাঁচে এ ভাবেই সেজে উঠছে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বারাসত জংশন স্টেশন। রেল সূত্রের খবর, বারাসত স্টেশনকে আগেই মডেল স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বার স্টেশনের নানা পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে জোরকদমে। আগামী বুধবার থেকে ট্রেন চলাচল ফের শুরু হলে নতুন পরিকাঠামোর কয়েকটির সুবিধা পাবেন যাত্রীরা।



এত দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় স্টেশনে ভিড় নেই বললেই চলে। তাই সুষ্ঠু ভাবে সব কাজ করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী। তিনি আরও বলেন, ‘‘চলমান সিঁড়ি, বয়স্কদের জন্য লিফট বসানো ছাড়াও অকারণ স্টেশনে ঢুকে পড়ার প্রবণতা আটকাতে বারাসত স্টেশন গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে।’’


রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের পরে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বারাসতই একমাত্র জংশন স্টেশন যেখানে চলমান সিঁড়ি তৈরি হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ওই স্টেশনের এক আধিকারিক জানান, জংশন হিসেবে বারাসত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। শিয়ালদহ থেকে এসে এখান থেকেই বনগাঁ এবং বসিরহাটের লাইন ভাগ হয়ে যায়। ফলে এই স্টেশনে যাত্রীদের চাপও বেশি থাকে। তাই চলমান সিঁড়ি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


বারাসত স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, অবৈধ নির্মাণ ভেঙে লোহার গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে গোটা স্টেশন চত্বর। এক নম্বর থেকে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত চলমান সিঁড়ি তৈরির কাজও প্রায় শেষ। পূর্ব রেল সূত্রের খবর, অসচেতন ভাবে লাইন পারাপারের জন্য দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি হয়। সেই সমস্যার সমাধানে গার্ডরেল দিয়ে স্টেশনের চার দিক ঘিরে ফেলা হচ্ছে। তবে স্টেশনের এ-পার থেকে ও-পারে যাওয়ার জন্য পুরনো ফুটব্রিজটিই ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে।


রেল সূত্রের খবর, স্টেশনের সর্বত্র ছাউনি না থাকায় বৃষ্টি হলেই ভিজতে হত অনেক যাত্রীকে। সেই সমস্যা থেকে বাঁচতে পুরো স্টেশনে ছাউনি নির্মাণের কাজও চলছে। বারাসত স্টেশনটি শুধুমাত্র সাজিয়ে তুলতেই ৫ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল। এর বাইরে রয়েছে নির্মাণের খরচ। কিছু দিনের মধ্যেই সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।


এই কাজের প্রশংসা করছেন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। বারাসত কলেজের ছাত্র রাজা দে বলেন, ‘‘স্টেশন চত্বর ঘিরে দেওয়ায় অকারণে লোকের আনাগোনা, স্টেশনে বসে আড্ডা দেওয়া কমবে। ফুটব্রিজ ব্যবহার করলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে।’’


Source: Ananda Bazar

চিনা আলোর সামগ্রীকে টেক্কা দিচ্ছে বারাসতের এই ‘প্রদীপ গ্রাম’

 দিওয়ালির আলোর বাজার ছেয়ে গিয়েছে চিনা সামগ্রীতে। রং বেরঙের টুনি বাল্ব, এলইডি আলোর পসরা সাজিয়ে বসছে দোকানদার। কালীপুজো হোক কিংবা দিওয়ালি মণ্ডপ থেকে ঘর আলোকসজ্জাতেও থাবা বসিয়েছে সস্তার এসব চিনা আলো। এসেছে প্লাস্টিকেরতৈরি প্রদীপও। কিন্তু বারাসাত থেকে একটু দূরে চালতাবেড়িয়া। আর এখানেই মাটির তৈরি হাতে গড়া প্রদীপ আর পিলসুজ এখনও সমান তালে টক্কর দিচ্ছে বাজারে।


এই গ্রামের কুটির শিল্পের মোটামুটি গোটা পশ্চিমবঙ্গে বেশ নামডাক আছে। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় এখানকার হাতে তৈরি মাটির জিনিস রফতানি হয়।


যদিও তৃতীয় পক্ষের ব্যবসায়ীরা এখানকার হরেক কিসিমের প্রদীপ কিনে নিয়ে তারাই পাইকারি দরে বিক্রি করে বাজারে। কুটির শিল্পীরা তাদের হাতে তৈরি জিনিসগুলো পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তি করে বানান। 


দু’হাতের দশ আঙুলের জাদুতে হরেক রকমের মাটির প্রদীপ তৈরি করেন এই পুরুষ থেকে মহিলা সকলে। বারাসত থেকে একটু বেড়িয়ে যশোর রোড হয়ে যেতে দু’পাশে চোখে পড়বে মাটির বিভিন্ন মূর্তি, পট, বিশেষ করে পিলসুজ আর প্রদীপ তৈরির কাজ চলছে। 


শুধু জাতীয় সড়কের দু'পাশেই এই এলাকার ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের মতো ছেয়ে গিয়েছে মাটির প্রদীপ তৈরির শিল্পে। সারা বছরের চব্বিশ ঘণ্টায় এখানে প্রদীপ তৈরির কাজ চলে। করোনা মহামারীর জন্যে গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।


এই সময় চালতাবেড়িয়ায় এই প্রদীপের গ্রামে প্রথম দু'সপ্তাহ প্রদীপ রফতানি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল এখানকার শিল্পীদের। এরপর পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিজেরাই গাড়ির ব্যবস্থা করে নিজেরাই শিল্পীদের কাছ থেকে মাটির জিনিস নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শিল্পী পঙ্কজ পাল।


নতুন প্রজন্মের কিছু ছেলে মেয়েরা এই পেশায় আসতে চাইছিল না। গত বছর পর্যন্ত এমনটাই ছিল। তবে এই বছর অনেকে কাজ চলে যাওয়াতে এবং পরিবারে আর্থিক সঙ্কট শুরু হওয়াতে তারা এই কুটির শিল্পকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।


বছর ষাটের জয়দেব পাল বলেন, 'করোনা মহামারী হোক বা বছরের অন্যান্য সময় কুটির শিল্পীদের বাইরে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন পড়ে না। ঘরে বসেই কাজ করলেই রোজগার হয়, এতে করোনারও ভয় নেই উপার্জনও ভালো হয়। যার ফলে এখন গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে মাটির জিনিস বানানোর আগ্রহ হচ্ছে।


হিন্দু-মুসলিম মিলে মিশে সকলে এই মাটির জিনিস তৈরি করেন। একটি পিলসুজের উপরে এক সঙ্গে পাঁচ, সাত, নয়, একুশ, একান্নটি প্রদীপও তৈরি হচ্ছে। একান্নটি প্রদীপ থাকলে নাম, 'একান্ন দিয়া।' বাজার ধরতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে প্রদীপের আদল। থাকছে বিভিন্ন কারুকাজ, সুক্ষ থেকে সুক্ষ কাজ যত্ন সহকারে করেন এখানকার শিল্পীরা। 


স্বামীর সঙ্গে প্রদীপ বানানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন তসলিমা বিবি। বললেন, '১০’বছর ধরে এই কাজ করছি। আমার মতো অনেকেই প্রদীপ তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।' কারখানা মালিক কামাল ইসলাম বলেন, 'এলাকার মানুষ রোজগার করছেন, আমাদের ব্যবসাও বেড়েছে আগের থেকে অনেক।'


বাপ ঠাকুরদার সময় থেকে চলে আসা শিল্পের ধরণও আগের অনেক বদলেছে। মানুষ বিভিন্ন ধরণের মাটির কারুকার্যের জিনিস দিয়ে ঘর সাজাতেও এখন পছন্দ করে। এসবের কথা মাথায় রেখে সেই মতন জিনিস করেন শিল্পীরা। চালতাবেড়িয়ার কুটির শিল্পীরা মনে করেন মাটির প্রদীপ এর সঙ্গে প্লাস্টিক বা চিনা আলোর পাল্লা দিয়ে পারবে না।


কারণ শিল্পীরা মনে করেন, পুজো-আচ্চার ক্ষেত্রে ভক্তিভাব প্রকাশে মাটি প্রদীপকে এখনও বেশী গুরুত্ব দেন মানুষ। তবে চিনা মালের সঙ্গে পাল্লা দিতে দামের উপরে রাশ টানতেই হচ্ছে এটাই মূল সমস্যা।


এখানকার মানুষের মাটির সঙ্গে কারবার তার জন্যে এখানে সকলে মা মনসার পুজো করেন। মূর্তি পূজার থেকে তারা বিশ্বাস করেন ঘট পুজায়। মাটির ঘটে দেবদেবীর ছবি এঁকে পুজো করা হয়। শিল্পীরা সকলে ২০ টাকা ঘণ্টা হিসেবে বেতনে কাজ করেন।


কাজের মান অনুযায়ী কারও একদিনের রোজগার দুশো থেকে তিনশো টাকা। প্রদীপ তৈরির পাশাপাশি দিওয়ালির জন্য লক্ষ্মী-গণেশ মূর্তিও গড়ছেন অনেকে। কলকাতা ছাড়াও দিল্লি, মুম্বই, হায়দরাবাদ, গুজরাত, অসম, পটনায় চলে যাচ্ছে এখানকার লক্ষ্মী-গণেশ। 

বাইরের রাজ্যেও বেশ চাহিদা রয়েছে এখানকার মাটির জিনিসের। এই গ্রামের শিল্পীরা মনে করেন চিনা সামগ্রী বর্জনের ডাক নয়, প্রতিযোগিতায় নেমে চিনা সামগ্রীকেই হারাবে তাদের হাতে তৈরি মাটির প্রদীপ।



Source: Indian Express 

Thursday, October 22, 2020

বারাসতের বাড়ির পুজোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী!‌ ষষ্ঠীতে অপেক্ষা করছে চমক

 বৃহ‌স্পতিবার সকালে বারাসতেও হাজির হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে সশরীরে নয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে। বারাসত পুরসভার ৩০ নং ওয়ার্ডের নিশীথ রায়চৌধুরীর বাড়ির পুজো উদ্বোধন করবেন তিনি। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে প্রকাশিত উদ্বোধন পত্রিকার লেখক ও টেলিকম বিভাগের অবসর প্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার নিশীথ রায়চৌধুরীর কথায় কর্মজীবনে তিনি অপটিক্যাল ফাইবার বিছিয়ে ছিলেন তিনি। আবার তিনিও রামকৃষ্ণ বিবেকান্দেরও ভক্ত। নরেন্দ্র মোদিও ঠাকুর রামকৃষ্ণ ও বিবেকান্দকে আদর্শ করেছেন। ফলে কর্মজীবনে বিছানো সেই অপট্যিকাল ফাইবারের সাহায্যে আসা ইন্টারনেট দিয়েই তাঁর বাড়ির পুজোর উদ্বোধন করবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।


২৩০ বছর আগে তাঁদের সপ্তম পুরুষ সর্বেশ্বর রায় এই পুজো শুরু করেন। বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় দশভূজার পুজো আজও হয়ে আসছে বলে জানান নিশীথ রায়চৌধুরী। বাংলাদেশে বর্তমানে ভাটদি বাবু বাড়ির পুজো হিসাবে সবাই জানে সেই পুজোটিকে। দেশভাগের পর তাঁদের কয়েক জন বংশধর এই দেশে চলে আসেন। ১৯৫৪ সালে অন্যদের মত নিশীথ রায়চৌধুরীও চলে আসেন। পড়াশোনার পর মেধাবী নিশীথ রায়চৌধুরী টেলিকম বিভাগে চাকরি পান। আর্থিক সাচ্ছন্দ ফিরলে ১৯৯২ সাল থেকে বাড়িতে শুরু করেন দেবী দুর্গার পুজো। পারিবারিক পুজোর রীতিনীতি এই দেশে পুজোয় স্বপরিবারে সবাই সামিল হন। সেই অর্থে এই পুজোর কোনও উদ্বোধন কোন বছরই হয়নি। এই বছর করোনা অতিমারির জন্য পুজোর আয়োজন অত্যন্ত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এবছর আর আসছেন না বলে জানান তিনি। আর তারই মধ্যে চমকে দেওয়ার মত যোগাযোগ এনে দেন পাড়ার কয়েকজন। দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাড়ির পুজো ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেম। আক্ষরিক অর্থে এবারই প্রথম তাঁদের বাড়ির পুজো উদ্বোধন হবে। তাও আবার প্রধানমন্ত্রী মোদির হাতে। তাতেই উচ্ছ্বসিত পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যে দিল্লী থেকে টেকনিক্যাল টিম চলে এসেছে তাঁদের বাড়িতে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধনের ট্রায়াল রানও শুরু হয়ে গেছে। এই বাড়ির কন্যা সুপর্ণা গাঙ্গুলীদের নাওয়া খাওয়ার সময় নেই। কারন ছোট করে আয়োজন করা পুজো দেশের প্রধানমন্ত্রী ও সারা দেশ দেখবে। তাই চারিদিকে আলপনা দেওয়া ও নান্দনিক ভাবে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত তাঁরা।

সুত্রঃ নিউজ ১৮ বাংলা 


Monday, October 5, 2020

এবছর জৌলুসহীন বারাসাতের কালীপুজোও

 করোনাসুরের দাপটে এবছর যেমন দুর্গা পুজোর যেমন মন মরা, অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমক আরম্ভর নেই ঠিক তেমনই কলকাতার দুর্গাপুজোর মতো এবছরের বারাসাতের কালীপুজোও অন্যান্য বারের মতো জমকালো না করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুজো কমিটিগুলি।


জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বারাসত পুরসভার সঙ্গে বারাসাতের বিগ বাজেটের পুজো কমিটিগুলির দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়, এবার খোলামেলা মণ্ডপ করা হবে। জমকালো পুজো প্যান্ডেল চোখ ধাঁধানো আলোর রোশনাইয়ের প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সেই টাকায় শহরের দুঃস্থদের সাহায্য ও গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তারা।


বারাসতের কালীপুজোর সুনাম শুধু এই বাংলা নয়, ওপার বাংলা সহ গোটা দেশে রয়েছে। বেশ কয়েকটি পুজো কমিটির বাজেট কোটির উপরে। তাই প্রত্যেক বছরই দুর্গাপুজোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় কালী পূজার প্রস্তুতিও। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি ভিন্ন,তাই একদিকে নজরকাড়া পুজো মন্ডপ, আলোকসজ্জা ও দর্শক টানার যে লড়াই, তা থেকে এবার বিরত থাকছে বারাসাতের প্রথম সারির কালীপুজোর কর্মকর্তারা। বারাসত পুরসভার প্রশাসক জানান, এ শহরের তিনটি বড় পুজো কমিটির কর্মকর্তারা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীতে রয়েছেন। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে আগের মতো পুজো হওয়া সম্ভব নয়। তাই বড় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবার আর কেউ আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন করবে না।

সুত্রঃ Bengali One India 

Wednesday, September 16, 2020

আইনজীবী রজত দে হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন স্ত্রী অনিন্দিতার, রায় ঘোষণা বারাসত আদালতের

 আইনজীবী রজত দে (Rajat Dey) হত্যাকাণ্ডে সাজা ঘোষণা করল বারাসত আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে দোষী অনিন্দিতা পালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। যদিও রজতের স্ত্রীর সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছিলেন নিহত আইনজীবীর পরিবার। তবে আদালতের রায়ে খুশি তাঁরা। 


গত ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে নিউটাউনের ডিবি ব্লকের ফ্ল্যাটে আইনজীবী রজত দে’র অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। আইনজীবীর বাবা দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁর আইনজীবী পুত্রবধূ অনিন্দিতা পাল (Anindita Paul)। সে-ই রজতকে পরিকল্পনামাফিক খুন করিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। যদিও অনিন্দিতা সেই দাবি খারিজ করে দেয়। প্রথমে জানায়, স্বামীর মৃত্যু নিছকই দুর্ঘটনা। পরে আবারও নিজের বয়ান বদল করে। জানায়, তার স্বামী রজত আত্মঘাতী হয়েছেন। তদন্তে নেমে পুলিশ অনিন্দিতাকে গ্রেপ্তার করে। হাই কোর্টে তার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ঘটনার জল গড়ায় সর্বোচ্চ আদালতেও। সুপ্রিম কোর্ট থেকেও জামিন পায় অনিন্দিতা। তাই আপাতত জেলের বাইরেই ছিল সে।


এদিকে, মূল মামলাটি বারাসত আদালতে (Barasat Court) চলছিল। একাধিক সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখা হয়। সোমবার মামলার শুনানি চলাকালীন পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারক। তারপরই তিনি জানিয়ে দেন, দুর্ঘটনা কিংবা আত্মহত্যা নয়। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে রজতকে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় রজতের স্ত্রী অনিন্দিতাকেই দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। অনিন্দিতার চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন নিহতের পরিজনেরা। বুধবার সকালে বারাসত আদালতের বাইরেও প্রচুর মানুষ সেই একই দাবি জানান। তবে বিচারক সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে অনিন্দিতার যাবজ্জীবন সাজার কথাই ঘোষণা করেন। যেহেতু অনিন্দিতার সন্তান অনেকটাই ছোট, সেকথা মাথায় রেখে এই রায় দেওয়া হয়েছে। রায় শুনে এদিনও এজলাসে ফের কান্নায় ভেঙে পড়ে অনিন্দিতা। সে বলে, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত বিশ্বাস করব ফাঁসানো হয়েছে।” 

Source: Sanbad Pratidin


Sunday, August 23, 2020

দীর্ঘ অপেক্ষায় সাফল্য, ১২০০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ মেরুর শব্দতরঙ্গ শুনলেন বারাসতের শ্রোতা

 মেরু অভিযানের উদ্দেশ্য শুধুই যে দুর্গম অঞ্চল জয়ের বিজয় নিশানা ওড়ানো, তা তো নয়। সেখানকার প্রকৃতি, আবহাওয়া বুঝতে অভিযাত্রী বিজ্ঞানীরা রীতিমতো তাঁবু খাঁটিয়ে সেখানে দিন কাটান। বরফ মোড়া জমিতে শরীর সূঁচ ফোটানোর মতো ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করে বছরের পর বছর চলে পরীক্ষা। সেসব গবেষণা কতদূর এগোল, তা জানাতে প্রতি বছর একদিন করে রেডিও সিগন্যালের (Radio Signal) মাধ্যমে নিজেদের কাজ সম্প্রচার করেন বৈজ্ঞানিকরা। এ বছরও ব্যতিক্রম নয়। ব্যতিক্রম অন্য একটি ঘটনা। সুদূর দক্ষিণ মেরু থেকে সেই প্রচারিত সেই শব্দতরঙ্গ এসে পৌঁছল বারাসতে। দীর্ঘ চেষ্টার পর এখানকার হ্যাম রেডিও অপারেটর বাবুল গুপ্ত প্রথমবার শুনতে পেলেন অ্যান্টার্কটিকার শব্দ। আর তাতেই উচ্ছ্বসিত তিনি।


বাবুল গুপ্তর এই সাফল্য কিন্তু সহজে আসেনি। তার কারণ বিবিধ। প্রথমত ভৌগলিক দিক থেকে ভারতের অবস্থান এই দক্ষিণ মেরুর (South Pole) এই বৈজ্ঞানিক ক্যাম্প সাপেক্ষে সম্পূর্ণ বিপরীতে। ফলে সেখান থেকে সম্প্রচারিত রেডিও সিগন্যাল শুনতে পাওয়াটা দুর্লভ। এছাড়া বহু বছর ধরে অপেক্ষার পরও রেডিও সিগন্যাল ধরা দেয় না। তাই তো মেরুপ্রদেশ থেকে এই সম্প্রচার শোনার জন্য বছরের পর বছর ধরে মানুষজন অপেক্ষা করে থাকেন। কবে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পেরিয়ে ধরা দেবে সেই শব্দতরঙ্গ। 


সেভাবেই জীবনের অনেকগুলো বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন বাবুল গুপ্ত। কিন্তু আশা ছাড়েননি। তিনি নিজে একজন হ্যাম রেডিও অপারেটর। আর তাতে তাঁর নিজের কৃতিত্বও তো কম নয়। পৃথিবীর সব ক’টি দেশের সঙ্গে স্রেফ রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের বিরল কাজের নজির রয়েছে বারাসতের বাবুল গুপ্তর। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সাম্মানিক সদস্য তাই জানতেন, তাঁর এই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান একদিন হবেই, আসবেই সাফল্য।


সাফল্য এলও। গত ৮ তারিখ, দক্ষিণ মেরুর LRA 36 ক্যাম্প, যা আর্জেন্টিনায় এলাকায় অবস্থিত, সেখান থেকে রেডিও সিগন্যাল মারফত শব্দতরঙ্গে এসে পৌঁছল বারাসতে। বাবুল গুপ্ত সেখান থেকে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান শুনে, তা রেকর্ড করে রাখেন। তিনি যে শুনতে পেয়েছেন, তার প্রমাণ স্বরূপ রেকর্ডিং ইমেলে পাঠিয়ে দেন LRA 36 ক্যাম্পে। উত্তরও দেন দক্ষিণ মেরুতে অবস্থানকারী বৈজ্ঞানিক দল। তাঁদের সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান যে ১২হাজার কিলোমিটার দূর থেকে কেউ শুনতে পেয়েছেন, তা জেনে তাঁরা আপ্লুত। আর এই দুর্লভ কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ LRA 36 বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান কেন্দ্র থেকে বাবুল গুপ্তকে দেওয়া হল সার্টিফিকেট।

Source: Sanbad Pratidin

Thursday, August 20, 2020

লালারসের পরীক্ষা হবে বারাসত হাসপাতালে

স্বাস্থ্য দফতর অনুমোদন দেওয়ায় লালারসের নমুনা পরীক্ষা এ বার বারাসত জেলা হাসপাতালেও করা যাবে। তার জন্য সেখানে প্রাথমিক পরিকাঠামোও তৈরি হয়ে গিয়েছে। অগস্ট থেকেই পরীক্ষার কাজ শুরু করা যাবে বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, এর ফলে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্টও দ্রুত মিলবে, পাশাপাশি দৈনিক অনেক বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। কলকাতার পরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। কিন্তু দৈনিক পরীক্ষা এখানে অনেক কম হচ্ছে বলেই অভিযোগ। 


উত্তর ২৪ পরগনায় বর্তমানে লালারস পরীক্ষা হচ্ছে শুধুমাত্র সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “দিন কয়েক আগে অনুমোদন এসেছে। তার পরেই পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে যন্ত্রপাতিও এসে যাবে।” এখানে পরীক্ষা শুরু হলে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা এবং বনগাঁ মহকুমার লোকজনও লালারসের নমুনা পরীক্ষা করাতে পারবেন। তখন লালারস সংগ্রহের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। রিপোর্ট দ্রুত জানা গেলে স্বাস্থ্য দফতর তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ করতে পারবে বলেই মনে করা হচ্ছে।


(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)


Source: Anandabazar

Wednesday, August 5, 2020

পাত্রী ‘করোনা’, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্বিতীয় বিয়ে সারলেন এই বৃদ্ধ!

 ঘরে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে সাক্ষী রেখে দ্বিতীয়বার বিবাহ সারলেন বারাসতের (Barasat) এক রাজনৈতিক কর্মী। বাধা দেওয়া তো দূর, লকডাউনের (Lockdown) নিয়ম মেনে ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু মানুষ শামিলও হন সেই বিয়েতে। কারণ, পাত্রী যে ‘করোনা’। ব্যাপারটা কী?



করোনা (Corona Virus) আতঙ্কে কাঁটা প্রত্যেকে। স্রেফ ভয় থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ অমানবিক আচরণ করছেন করোনা রোগী ও করোনায় মৃতদের পরিবারের সঙ্গে। কোথাও বাড়ি ছাড়া করা হচ্ছে আক্রান্তদের। কোথাও একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে রোগীকে দূরে সরিয়ে রেখে তো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়, এটাই সকলকে বোঝাতে চেয়েছিলেন বারাসাতের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কালী রুদ্র। চেয়েছিলেন অভিনব কিছু করতে। আর সেই কারণেই ‘করোনা’কে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি।


নির্দিষ্ট সময়ে বর বেশে বেশ কয়েকজনকে সাক্ষী রেখে করোনা ভাইরাসের রূপক এক মূর্তিকে মালা পরিয়ে দেন ওই বৃদ্ধ। বেলপাতা ও মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় বিবাহের আচার। তাঁর কথায়, “রোগকে আটকাতে হবে। রোগীকে দূরে সরিয়ে, সমাজ ছাড়া করে কোনওদিনও রোগের মোকাবিলা সম্ভব নয়। এটাই সকলকে বোঝাতে চাই।” কালীবাবুর এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সারা ফেলে দিয়েছে বারাসতের বনমালীপুরে। অনেকেই বুঝতে শুরু করেছেন। নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন।

Source: Sanbadpratidin

সম্প্রীতির বাংলা, বারাসাতে রামের পুজো করলেন মুসলিমরা!

 সব অপেক্ষার অবসান। ধূমধাম করে অযোধ্যায় হয়ে গেল রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে সামনে থেকে উপস্থিত থাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর হাতে দিয়েই হয়ে শিলান্যাস। অনুষ্ঠানের সময় নিজের বক্তৃতায় স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে রাম মন্দির আন্দোলনের তুলনা করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বুধবার তিনি বিশ্বজুড়ে রামের প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টিও তুলে ধরেন। ভারত তথা বিশ্ব, এমনকী মুসলিম প্রধান দেশেও রামায়ণের অস্তিত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি। আর সেখানেই যেন সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিল বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ।


বুধবার অযোধ্যায় যখন ধূমধামের সঙ্গে চলছে ভূমিপুজো, তখন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের নতুনপল্লিতে হিন্দু মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই একযোগে রামের পুজো করলেন। তাঁদের কথায়, রাম কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতিভূ নন। রাজা হিসেবে রামচন্দ্রের প্রধান ধর্ম হল দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। নতুনপল্লির স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব আহমেদ খানের নেতৃত্বে আয়োজিত হয়েছিল ওই পুজো। অবশ্য রাজীব আহমেদ খান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিজেপি সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি। ফলে এর সঙ্গে বিজেপির নাম জুড়ে গেলেও হিন্দু-মুসলিম একযোগে রাম পুজো করছে, বিষয়টির প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষও।


শুধু রাজীব আহমেদ খানই নন, বিজেপি কর্মী মোহম্মদ বাবলু মোল্লা ও রহিম মণ্ডলদের পাশাপাশি বহু হিন্দু ধর্মাবলম্বীও এই পুজোয় যোগদান করেছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার এ এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই।


এদিন নিজের ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'রাম ঐক্যের প্রতীক। যেভাবে ভগবান রামের জন্যে জয় পেতে সকলে একসঙ্গে এত বছর ধরে চেষ্টা করেছেন, যেভাবে সকলে স্বাধীনতার লড়াইয়ে গান্ধীজির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই আজ দেশবাসীর প্রচেষ্টায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হল।'


অপরদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরাসরি রাম মন্দির প্রসঙ্গে কিছু না বললেও ট্যুইটে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে লেখেন, 'হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান -একে অপরের ভাই-ভাই! আমার ভারত মহান, মহান আমার হিন্দুস্তান! আমাদের দেশ তার চিরায়ত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে, এবং আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবে এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষিত রাখব।' রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর আবহে সেই সম্প্রীতির ছবিটাই যেন ফুটে উঠল। হয়ত তা একটি জায়গাতেই, কিন্তু সেটারও প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য।


Source: Ei Samay

Thursday, July 30, 2020

করোনায় আয় বন্ধ, বাদ্যযন্ত্র ছেড়ে দুধ বিক্রিতে শিল্পী

 গানবাজনাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। প্রথাগত শিক্ষা সে ভাবে না পেলেও অধ্যাবসায়ের জোরে বারাসতের হৃদয়পুরের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ মুখোপাধ্যায় রীতিমতো নামকরা শিল্পী। পার্কাশন বাজান। তবলা, কঙ্গো-সহ একাধিক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানেন। দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে কলকাতা, মুম্বইয়ের নামজাদা গায়ক-গায়িকাদের সঙ্গে বাজিয়েছেন। সঙ্গীতের সূত্রে বিদেশেও গিয়েছেন তিনি। কয়েক মাস আগেও জলসায় চুটিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন। কিন্তু করোনার কারণে শহরতলির সফল এই সঙ্গীতশিল্পীর জীবন ওলোটপালট হয়ে গিয়েছে। লকডাউন তাঁকে বাধ্য করল পেশা বদলাতে। পেটের টানে গৌরাঙ্গ এখন দুধ বিক্রি করেন।


বারাসতের পশ্চিম হৃদয়পুর হরিহরপুর এলাকায় থাকেন গৌরাঙ্গ মুখোপাধ্যায়। সুযোগ পেয়েছেন মহম্মদ আজিজ, বিনোদ রাঠোর থেকে বাপ্পি লাহিড়ির অনুষ্ঠানে বাজানোর। কলকাতায় শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, অরুন্ধতী হোমচৌধুরী থেকে হালফিলের শিল্পীদের সঙ্গেও বাজানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। কিন্তু পরিস্থিতিতে জলসা-সহ সব রেকর্ডিং বন্ধ। ফলে কাজ হারিয়েছেন গৌরাঙ্গ। মাস তিনেক বসেই ছিলেন। কিন্তু এই ভাবে সংসার চলবে না। ছেলের পড়াশোনোর খরচও রয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই পেশা বদলের সিদ্ধান্ত। শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতায় এখন তিনি দুধ বিক্রির ব্যাবসায়।


এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বর্ষীয়ান শিল্পী শিবাজি চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'শিল্পীদের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। গৌরাঙ্গবাবু একা নন, ওঁর মতো আরও অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন অন্য রাস্তা খুঁজে নিতে। তবে উনি তো তাও অন্য কাজের সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু বহু শিল্পী এমন শারীরিক অবস্থায় বা বয়সে পৌঁছে গিয়েছেন, যাঁদের পক্ষে অন্য কাজেও যাওয়া সম্ভব নয়।' শিবাজির আশঙ্কা, 'মানুষের পেটে খাবার থাকলে তবেই তাঁরা বিনোদনের কথা ভাবেন। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার একেবারে শেষ পর্যায়ে শিল্পজগৎ পুরোনো গতি ফিরে পাবে। তার আগে নয়। তত দিন পর্যন্ত বহু শিল্পীকে মারাত্মক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।' তাঁর আবেদন, গৌরাঙ্গর মতো বা তাঁর চেয়েও দুঃস্থ শিল্পীদের বিপিএল কার্ডের আওতায় এনে বিনামূল্যে খাবারটুকু পৌঁছে দেওয়া গেলে ভালো।



তবে শিবাজি যে মারাত্মক দুঃস্থ শিল্পীদের কথা ভেবে আশঙ্কায় রয়েছেন, গৌরাঙ্গ এখনও তেমন সাফাই কর্মী অবস্থায় পড়েননি। বদলে তিনি জলাঞ্জলি দিয়েছেন তাঁর স্বপ্নের জায়গাটা। ভোর সাড়ে চারটেয় সাইকেল নিয়ে ছুটতে হয় বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম। প্যাকেটের দুধ নিয়ে এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করেন। এক শুভাকাঙ্ক্ষী নিজের দোকান ছেড়ে দিয়েছেন তাঁকে। বেলার দিকে গৌরাঙ্গ সেখানে দই, লস্যি, পনির বিক্রি করেন। গৌরাঙ্গ বলেন, 'কলকাতা, মুম্বইয়ে ফাংশন বন্ধ। টুকটাক কিছু কাজ হয়, কিন্তু পারিশ্রমিক কম। সাড়ে তিন মাস বসেই ছিলাম। ফলে সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে। বন্ধুর পরামর্শে পেশা বদল করে ফেললাম।' আপাতত তালবাদ্য নয়, ডেয়ারি প্রোডাক্টাই তাঁর এবং পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। আর তাই রাতে এখনও ঘুমোতে পারছেন তিনি। যে ঘুমের ভিতর স্বপ্নে এখনও দেখতে পাচ্ছেন, সেই সব মঞ্চ, সেই সব জলসা- আলোর রোশনাইয়ে যেখানে এখনও শোনা যাচ্ছে গান, এখনও পড়ছে হাততালি। শুধু অতীতের নয়, গৌরাঙ্গ চোখ বন্ধ করে তাকিয়ে আছেন ভভিষ্যতের সেই সোনালি স্বপ্নের দিনগুলোর দিকে।

Source: Ei Samay

Sunday, July 26, 2020

লকডাউনের জের, বারাসতে উচ্চমাধ্যমিক মার্কশিট প্রদান নিয়ে ধোঁয়াশা

সাতদিনের লকডাউনে বারাসাতের উচ্চমাধ্যমিক মার্কশিট প্রদান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মধ্যে। ৩১ তারিখ উচ্চমাধ্যমিকের জন্য নির্দিষ্ট স্কুলের ক্যাম্প অফিস থেকে স্কুলগুলিকে উচ্চ- মাধ্যমিকের মার্কশিট দেওয়ার কথা।


অথচ সেদিনও লক ডাউন থাকছে বারাসাত পৌরসভা এলাকা জুড়ে। যেকারণে সময়মত মার্কশিট দেওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে। বারাসাতের অধিকাংশ স্কুলই মার্কশিট সঠিক সময়ে দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বারাসাত পৌরসভার প্রশাসক মন্ডলীর প্রধান সুনীল মুখার্জী জানিয়েছেন, স্কুলগুলি যেন ক্যাম্প অফিস থেকে উচ্চমাধমিকের মার্কশিট সুষ্ঠ ভাবে তুলতে পারে সেজন্য সহযোগিতা করা হবে। এবং এক্ষেত্রে ক্যাম্প অফিস থেকে মার্কসিট দেওয়ার জন্য লক ডাউনের নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞায় থাকছে না।


Source: OneIndia 


Wednesday, July 22, 2020

বারাসত স্টেডিয়ামে এবার সেফ হোম

 সরকারি হাসলপাতালে বেড পেতে কালঘাম ছুটছে। খরচের গুঁতোয় বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার উপায় নেই অনেকেরই। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় বারাসতে তাই দ্বিতীয় কোভিড হাসপাতাল করতে চেয়েছিল স্বাস্থ্য দপ্তর। কিন্তু স্থানয়ীদের চাপে তা আর হয়ে ওঠেনি। শেষপর্যন্ত কোথাও কোনও জায়গা না পেয়ে বারাসত স্টেডিয়ামে ৫০ শয্যার সেফ হোম তৈরি করছে পুরসভা। সেফ হোমে উপসর্গ নেই এমন করোনা আক্রান্তদের রাখা হবে। বুধবার থেকে চালু হবে এই সেফ হোম।


বারাসত ও সংলগ্ন এলাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অথচ হাতে একটি কোভিড হাসপাতাল। কদম্বগাছির হাসপাতালটি বাদ দিলে ছিল বারাসতে অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ারান্টিন সেন্টার। সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় দ্বিতীয় হাসপাতাল খোলার চেষ্টা করেও স্থানীয়দের বাধায় পিছিয়ে আসতে হয় প্রশাসনকে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এলাকায় কোভিড হাসপাতাল হলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। এ অবস্থায় শহরের মধ্যে অথচ তুলনামূলক ফাঁকা, বারাসত স্টেডিয়ামে সেফ হোম তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।


সেফ হোমে রোগীদের খাওয়ারদাওয়ার বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সকালে চা ও বিস্কুট। প্রাতরাশে থাকবে রুটি, সব্জি, ডিমসেদ্ধ। কোনও দিন থাকবে মাখন-পাউরুটি। সঙ্গে কলা এবং ডিম। দুপুরে চার দিন মাছ, দু'দিন মাংস। নিরামিষ একদিন। মেনু ভাত, ডাল, আলুভাজা, সব্জি। এ ছাড়া মাছ অথবা মাংস বা পনির। শেষপাতে চাটনি। রাতের মেনুতে ভাত,ডাল, সব্জি, পনিরের পাশাপাশি মিষ্টিও দেওয়া হবে।


স্টেডিয়ামের দুটি ড্রেসিং রুম এবং একটি বড় হলঘরকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। দু'টি ড্রেসিংরুমে ৪২ জন পুরুষ আক্রান্তকে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। হলঘরে থাকবেন দশ জন মহিলা। থাকছে পুরুষদের জন্য তিনটি এবং মহিলাদের জন্য দুটি স্থায়ী শৌচালয়। স্টেডিয়ামের মধ্যে পাম্প থাকলেও জলের লাইন বা ট্যাঙ্ক ছিল না। সেই সমস্যা মেটাতে দু'হাজার লিটারের নতুন জলের ট্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে। জলের পাইপ লাইনের কাজও শেষ।


তিনটি ঘর মিলিয়ে কুড়িটি স্ট্যান্ড ফ্যান ও ৪৫টি টিউবলাইট লাগানো হয়েছে। রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্টেডিয়ামের লনকে বাহারি গাছ ও ফুলের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে। এই লনে পায়চারি করতে পারবেন আক্রান্তরা। লনের এক প্রান্তে চেয়ার পেতে দেওয়া হয়েছে। রয়েছে এলইডি টিভি। তিনটি ঘরেই বক্স লাগানো হয়েছে। একঘেয়েমি কাটানোর জন্য প্রতিটি ঘরে সাউন্ড সিস্টেম লাগিয়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। রয়েছে তাস, লুডো ক্যারামের ব্যবস্থাও।


পুরসভার বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা সেফ হোম নিয়ে পুরোপুরি তৈরি। তৈরি ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। বুধবার স্টেডিয়ামের সেফ হোম চালু হয়ে যাবে।'


Source: Ei Samay

Monday, July 20, 2020

বারাসত হাসপাতালে নতুন কন্ট্রোল রুম

 এই রাজ্যে সম্প্রতি চিকিৎসা না পেয়ে করোনা আক্রান্ত একাধিক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সেই কথা মাথায় রেখে এ বার করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুবিধার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নতুন করে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু করা হল। মূলত করোনা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে এই কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। 


উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনা পরিস্থিতির উপরে নজরদারি রাখতেই ১৫ জন চিকিৎসক ও কর্মী নিয়ে শুরু হল করোনা কন্ট্রোল রুম। প্রশাসন সূত্রে খবর, বারাসত হাসপাতালের পুরনো ব্লাড ব্যাঙ্কটিকে কন্ট্রোল রুম হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ, সোমবার থেকে এই কন্ট্রোল রুম চালু হচ্ছে।


জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই কন্ট্রোল রুমে তিনটি শিফটে এক জন করে মেডিক্যাল অফিসার এবং এক জন করে চিকিৎসক থাকবেন। কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং এই জেলার করোনা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার উপরে নজর রাখা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে আরও খবর, মূলত উপসর্গহীন রোগীদের ঘরে থাকতেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা পজ়িটিভ হয়েছে এই আতঙ্কে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে অনেকের। সেই কারণেই জেলার করোনা পজ়িটিভ রোগী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখা হবে এই কন্ট্রোল রুম থেকে। প্রয়োজনে তাঁদের কাউন্সেলিং করা হবে। করোনা ভীতি কাটিয়ে কী ভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে কন্ট্রোল রুমে থাকা চিকিৎসক সবই বুঝিয়ে দেবেন।


প্রশাসন সূত্রের আরও খবর, জেলার কোন কোভিড হাসপাতালে কত শয্যা রয়েছে, তার কতগুলি ফাঁকা হল, সবই এই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কোনও রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কন্ট্রোল রুম থেকেই মেডিক্যাল অফিসার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করবেন। এ ছাড়াও গোটা জেলার করোনা রোগীদের আনা-নেওয়ার জন্য মোট ২১টি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার ব্যবস্থাও থাকছে।


রবিবার এ বিষয়ে বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার করোনা আক্রান্ত মানুষের জন্যই এই কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বরও রাখা হয়েছে। কখনও কোনও সমস্যা বা অসুবিধা হলে কন্ট্রোল রুমে ফোন করে জানালে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’


এ দিন বারাসত এবং মধ্যমগ্রামে কড়া পুলিশি পাহারা ছিল। লকডাউন মেনে দুপুর ১টার পর থেকে বন্ধ ছিল সমস্ত দোকানপাট। এ দিন রাস্তায় মাস্ক না পরে বার হওয়া মানুষের সংখ্যাও ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। পুলিশ জানিয়েছে, কড়া নজরদারি চলবে। কোনও সমস্যা হলে হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Source: Anandabazar


Thursday, July 9, 2020

বারাসাত মেগাসিটি নার্সিংহোম হচ্ছে কোভিড হাসপাতাল, বিজ্ঞপ্তি জারি স্বাস্থ্যভবনের

বারাসাত মেগাসিটি নার্সিংহোম হচ্ছে কোভিড হাসপাতাল। আগামী সপ্তাহ থেকে এই নার্সিংহোম হবে কোভিড হাসপাতাল। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হচ্ছে মেগাসিটি নার্সিংহোম। বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্যভবন।

Source: ABP Live

Saturday, June 27, 2020

কন্যাশ্রীর টাকায় সাফাইকর্মীদের মাস্ক-গ্লাভস দিল দশমের পড়ুয়া

 কন্যাশ্রী থেকে পাওয়া এবং জমানো টাকায় সাফাইকর্মীদের হাতে মাস্ক, গ্লাভস এবং টুপি তুলে দিল দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া।

করোনা পরিস্থিতিতে জীবন বাজি রেখে প্রতিদিন কাজ করে চলেছেন সাফাইকর্মীরা। তাঁদের পাশে দাঁড়াল প্রেরণা সমাদ্দার। কন্যাশ্রীর টাকা এবং নিজের সঞ্চয় থেকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে মাস্ক, গ্লাভস কিনে তা বারাসত পুরসভার সাফাইকর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছে সে। প্রেরণার এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়।



১৫ বছরের প্রেরণা থাকে বারাসতের টাকি রোডের ধারে শ্রীনগরে। বারাসত গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া সে। গত তিন বছরের কন্যাশ্রীর টাকা তার অ্যাকাউন্টে জমেছে। শুধু তাই নয়, নিজের হাতখরচা থেকে টাকাও জমিয়েছে সে। বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে সেই টাকা দিয়ে সে কিনেছে মাস্ক, গ্লাভস এবং টুপি। যা এই করোনা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। করোনা সংক্রমণে লকডাউনে ঘরবন্দি থেকেছে পুরো দেশ। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যায়নি। ব্যতিক্রম করোনা যোদ্ধারা। করোনার হাত থেকে সমাজ এবং সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে দিনরাত কাজ করছেন সাফাইকর্মীরা। প্রতিদিনের জমে থাকা নোংরা, আবর্জনা পরিষ্কার করে তাঁরা পরিবেশ বাসযোগ্য রেখেছেন। এই কর্মীদের জন্য মাস্ক, গ্লাভস খুবই প্রয়োজনীয়।


বৃহস্পতিবার ৬০ জোড়া গ্লাভস, ৫০টি মাস্ক এবং ৫০টি টুপি নিয়ে স্কুলের পোশাকেই প্রেরণা হাজির হয় বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়ের অফিস ঘরে। সেখানেই সে তার আনা সামগ্রী তুলে দিয়েছে সাফাইকর্মীদের হাতে। প্রেরণার এর জন্য খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা। প্রেরণার কথায়, ‘করোনা পরিস্থিতিতেও বারাসত পুরসভার সাফাইকর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। তাঁদের মাস্ক ও গ্রাভস ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এর জন্যই আমার এই উদ্যোগ।’ প্রেরণা জানিয়েছে, কন্যাশ্রী থেকে ৩ হাজার টাকা পয়েছে। বাকিটা জমানো। মেয়ের এই উদ্যোগে খুশি প্রেরণার মা রীতা সমাদ্দার। তিনি বলেন, ‘মেয়ের এই চিন্তা-ভাবনা এবং কাজে আমাদের পুরো সমর্থন রয়েছে। আমি চাই প্রেরণা নিজের কাজের মধ্যে অন্যের প্রেরণা হয়ে উঠুক।’


Source: Ei Samay

Thursday, June 25, 2020

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেখতে এসেছিলেন এই রথের মেলা ! করোনার জন্য বন্ধ বারাসতের রথের মেলা

 রথের মেলাকে ঘিরেই জায়গাটার নাম হয়েছে রথতলা। নকশাল অন্দোলনের পর থেকেই আর রথ টানা হয় না এই রথতলায়। উত্তর ২৪ পরগনার প্রাচীন তম রথের মেলার একটি বারাসতের রথতলা। এই প্রাচীন মেলার মাঠে গতকয়েক বছর ধরে  আসে রথ। তবে রথতলা থেকে প্রথা মেনে আর রথে যাত্রা হয় না। নবীন প্রজন্ম রথ ছাড়া রথের মেলা মানতে নারাজ ছিল। তারাই স্থানীয় জগবন্ধু আশ্রমের দারস্থ হন। জগন্নাথের পূজারীরা যে  রথ বের করেন জগবন্ধু আশ্রম থেকে, সেই রথকে নিয়ে আসা হবে বারাসাত রথতলাতে। তবে মাঠে মেলা বসে। সময়ের সঙ্গে মাঠের জায়গাও ছোট হয়েছে। তাই জগবন্ধু আশ্রম থেকে নিয়ে আসা রথ রাখা হবে কোথায়?


মুকুল চ্যাটার্জী, মেলা আয়োজক জানান, সবাই মিলে ঠিক হয় কাছে জোড়া শিব মন্দিরে সামনে রাখা হবে রথ।জোড়া মন্দিরে রাখা রথই গত কয়েক বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে। আর এবার করোনার প্রকোপের জেরেই সেই রথ ও এল না রথতলায়।এই মেলায় পাঁপড়, বাদাম আর খেলনার জিনিসের পাশাপাশি নানা ধরনের গাছ বিক্রি হল অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক সময় এই রথের মেলায় উল্টো রথের শেষ দিন হত বৌ মেলা।ঐতিহ্যের সেই মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।কিন্তুু বর্তমান সময় গাছ বিক্রি ও কেনাতেই ছিল শহর তথা জেলার মানুষের কাছে আসল আকর্ষণ। এবছর করোনার প্রকোপে রথতলার মেলার আয়োজকরা মেলা বন্ধ রেখেছে।আমফান ঝড়ের পর গাছ পড়েছে বহু।কিন্তুু গাছ কিনে বসানোর সেই বাসনা থেকে শহর বাসি বঞ্চিত রইল এবার।মেলার আয়োজক মুকুল চ্যাটার্জী এদিন জানান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এক সময় এই মেলায় এসে পূজা দিয়ে গিয়েছেন। এমন ঐতিহ্য মেলা এবার বসল না। আর ভরা বর্ষাতে গাছ বেঁচে দু পয়সা দেখল না বিক্রেতা।সবচেয়ে বড় কথা এই মেলার গাছেই গৃহস্থের উঠান সবুজ হয়।পরিবেশ তরতাজা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা মগরা থেকে আসা গাছ বিক্রেতা পরিতোষ মন্ডলের কথায়, মহাজন থেকে গাছ তো দিন ১৫ আগেই কিনেছেন এই মেলার জন্য। মেলা বন্ধে তাদের মাথায় হাত।মহাজন তো আর গাছ ফিরিয়ে নেবে না। সব লস শুধুই তার।


Source: News18

Wednesday, June 10, 2020

লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও মাসিক ফি কমছে না, প্রতিবাদে বারাসতে পথ অবরোধ অভিভাবকদের

 লকডাউনে প্রায় মাস তিনেক স্কুল বন্ধ থাকলেও, বেঁধে দেওয়া মাসিক ফি-ই নিচ্ছে স্কুল। যার প্রতিবাদে আজ বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে এক বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করলেন। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে চলে অবরোধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকরা কথা বলতে চাইলেও অভিযোগ, কেউ কথা তো বলেনইনি, উলটে অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। অবরোধের ফলে এদিন কিছুক্ষণের জন্য ডাকবাংলো মোড়ে যানজট তৈরি হয়।


তিন মাস ধরে স্কুল বন্ধ। ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। এই অবস্থায় স্কুলগুলির অনেক খরচই কমেছে। যেমন, ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহার না হওয়ায় কমেছে বিদ্যুতের খরচ। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে না যাওয়ায় পরিবহণ খরচ একেবারেই শূন্য। এই পরিস্থিতিতে সব হিসেবনিকেশ মাথায় রেখে বেসরকারি স্কুলগুলো কম মাসিক ফি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, বারাসতের ওই বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলটি সরকারের আবেদনে কর্ণপাত না করে বরাবরের মতো মাসিক ফি ৪৩০০ টাকাই নিচ্ছে। এই অঙ্ক কমাতে বললেও, তারা নারাজ। অভিভাবকদের তরফে এক প্রতিনিধি দল স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, দেখা করে এ বিষয়ে আলোচনা করার। বহুবার আবেদন সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।


ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে আজ সকালে তাই অভিভাবকরা স্কুলে যান। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান। অভিযোগ, কেউ তো তাঁদের সঙ্গে কথা বলেনইনি, উলটে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এরপরই ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এমনিতে যতক্ষণ ক্লাস হয়, তার অর্ধেক সময়েও অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। কোনওক্রমে ১ থেকে ২ ঘণ্টা ক্লাস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তাই অভিভাবকদের দাবি, শুধুমাত্র টিউশন ফি তাঁরা দিতে রাজি। অন্য যে কোনও ফি মকুব করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। যদিও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।


Source: Sanbadpratidin

Saturday, June 6, 2020

অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত উত্তম কুমারের স্মৃতিবিজড়িত বারাসতের মিষ্টির দোকান

 মাত্র কয়েক দশক আগের কথা। বারাসতের উপর দিয়ে গেলে একটি মিষ্টির দোকানে অবশ্যই দাঁড়াতেন উত্তম কুমার ও কিশোর কুমার। মিষ্টিমুখ করতেন, দোকানের মালিকের সঙ্গে খানিক খোশগল্প করতেন, তারপর আবার গন্তব্যে রওনা দিতেন। শনিবার বারাসতের সেই মিষ্টির দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেল। মুছে গেল ১৫৬ বছরের স্মৃতি।




ওই মিষ্টির দোকানের নাম রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার। বারাসতের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই নাম। সেই দোকান শনিবার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। এদিন ভোরে হঠাৎই ওই মিষ্টির দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। কিন্তু নিমেষের মধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে আগুন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা দোকানটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। দমকলের কর্মীরা শত চেষ্টাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে দমকল ও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।


কিন্তু কেন ওই দোকানে আগুন লাগল বা কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নয় এলাকাবাসী। বরং ১৫৬ বছরের স্মৃতি যে অগ্নিগর্ভে চলে গেল, তা নিয়েই মূহ্যমান তারা। লোকমুখে প্রচলিত, বারাসতের উপর দিয়ে গেলে উত্তম কুমার ও কিশোর কুমারের মতো নামী ব্যক্তিত্বরা এই রাধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে আসতেন। শত ব্যস্ততা থাকুক, একবার দোকানের মিষ্টি না চেখে যেতেন না। ফলে এই দোকান নিয়ে এলাকার মানুষের গর্বেরও সীমা ছিল না। আত্মীয়দের বাড়ি গেলে বা কোনও অনুষ্ঠানে এই দোকানের মিষ্টি খাইয়ে এলাকার মানুষ যে কতবার আত্মসুখ লাভ করেছে, তার হিসেব নেই। রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, বারাসতের দক্ষিণপাড়ার মুখে সেই মিষ্টির দোকানের নামে বাস স্টপও রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ড সেই ঐতিহাসিক দোকান ভস্মীভূত করে দিল, এই নিয়ে মন খারাপ বারাসতের মানুষের।


Source: Sanbadpratidin

Saturday, May 16, 2020

বারাসত হাসপাতালে কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড

 ৭০ শয্যার কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড, দশ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে তৈরি বারাসত সদর হাসপাতাল। দমদম বিমানবন্দরে কোনও যাত্রীকে দেখে চিকিৎসকদের যদি সন্দেহ হয়, এরপর তাঁকে সটান পাঠিয়ে দেওয়া হবে এই বারাসত হাসপাতালে। হাসপাতালের কোয়ারানটাইন ওয়ার্ডে রেখে চলবে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণ। কারও শরীরে যদি দেখা যায় বাসা বেধেছে করোনাভাইরাস, তবে আইসোলেশন সেন্টারে রেখে চলবে চিকিৎসা।


সরকারের নির্দেশ পেতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই কোয়রানটাইন ওয়ার্ড ও আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করেছেন বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, 'রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখানে কেউ ভর্তি হয়নি। তবে আমরা প্রস্তুত।'


বারাসত হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের ঠিক উল্টো দিকেই হয়েছে কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড। শুক্রবার বিকেলেই জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ওয়ার্ডটি ঘুরে দেখেন। ওয়ার্ডে একসঙ্গে ৭০ জনকে পর্যবেক্ষণে করা যাবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদম বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা যদি মনে করেন কাউকে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার, সেক্ষেত্রে বারাসত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য আলাদা বাসও থাকবে। ১৪ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ চলবে। কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে, সেই রোগীকে নিয়ে আসা হবে আইসোলেশন সেন্টারে।


আইসোলেশন সেন্টারটি দশ শয্যার। পাঁচটি পুরুষ, বাকি পাঁচটি মহিলাদের জন্য। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা ঘর থাকছে। আইসোলেশন সেন্টারে দু'টি ভেন্টিলেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারও শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে কলকাতার আইডি হাসপাতালে পাঠানো হবে।


করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে কুড়ি জনের একটি চিকিৎসকদের দল গড়া হয়েছে। চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক, গ্লাভস, গাউন, ক্যাপ, অ্যাপ্রন, শু-কভার আনা হয়েছে।


শুধু বারাসত নয়, বনগাঁ হাসপাতালেও তোড়জোর শুরু হয়েছে। বনগাঁ হাসপাতালে সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো জানিয়েছেন, হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসকদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হাসপাতালে চারটি বেডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। দু'টি বেড পুরুষদের, বাকি দু'টি বেড মহিলাদের। ভেন্টিলেশনের আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে প্রয়োজন হলে হাসপাতালে থাকা ভেন্টিলেশনের সাপোর্ট নেওয়া হবে।


হাবরা হাসপাতালে অবশ্য এই ধরনের কোনও আইসোলেশন সেন্টার করা হয়নি। হাবরা হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, 'আউটডোর করেন এমন ১১ জন চিকিৎসককে এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।'


জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তপন সাহা বলেন, 'জেলায় বারাসত হাসপাতাল, ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল, বনগাঁ এবং বিধাননগর হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।'


Source: Ei Samay

Tuesday, May 5, 2020

মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দিলেন বারাসতের জেলা পুলিশের কর্মীরা

 করোনা মোকাবিলায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। পিছিয়ে নেই পুলিশ কর্মীরাও। বিভিন্ন কমিশনারেট, থানার পুলিশ কর্মীরা নিজেদের বেতনের একাংশ মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন। সোমবার বারাসত জেলা পুলিশের আধিকারিক ও কর্মীরা একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে দান করলেন। যার আর্থিকমূল্য প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা।


করোনায় ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। সময় যতই এগোচ্ছে ততই দাপট বাড়াচ্ছে মারণ ভাইরাস। বিশ্বে ৩৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। ভারতের সংখ্যাও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। আক্রান্ত ৪২,৮৩৬। মৃত্যু হয়েছে ১৩৮৯ জনের। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণকে জব্দ করতে ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। তবে আজ থেকে লকডাউনের তৃতীয় দফায়  শর্তসাপেক্ষে  বেশ কিছু  ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। খুলছে মদের দোকান, সেলুন, স্পা-ও। বাংলার করোনা পরিস্থিতিও সন্তোষজনক নয়। ৬১ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে এ রাজ্যে।  এখনও পর্যন্ত  আক্রান্ত হয়েছেন ১২৫৯। সুস্থ হয়েছেন ২১৮ জন।লকডাউন চলাকালীন রাজ্যবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য প্রশাসন। চিকিসা থেকে বিনামূল্য রেশন, কোথাও আবার রান্না করে খেতে দেওয়া হচ্ছে। গঠিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল।


মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দিলেন বারাসত জেলা পুলিশের আধিকারিক ও কর্মীরা। মোট সাড়ে ৮ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, লকডাউনের শুরুর দিন থেকে এলাকার প্রৌঢ় ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য হেলপ লাইন নম্বর চালু করেছেন। এছাড়া কমিউনিটি কিচেন থেকে ফুটপাথবাসীদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন জেলা পুলিশের কর্মীরা। তাঁদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এলাকাবাসী।

Source: Sanbadpratidin

Friday, May 1, 2020

বারাসতের কিশলয় হোমে আইসোলেশন ঘরের ব্যবস্থা

 নতুন আবাসিক এলে রাখা হচ্ছে হোম কোয়ারান্টিনে, বারাসতের কিশলয় হোমে আইসোলেশন ঘরের ব্যবস্থা

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আইসোলেশন ঘর চালু হল বারাসতের কিশলয় হোমে। সেখানে রাখা হয়েছে কোয়ারান্টিনের ব্যবস্থাও। ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা অনাথ শিশু-কিশোরদের মাধ্যমে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, তাই এই ব্যবস্থা করেছেন হোম কর্তৃপক্ষ।


এই ব্যবস্থার মূল উদ্যোক্তা কিশলয় হোমের সুপার মলয় চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, হোমে নতুন কোনও আবাসিক এলে তার শারীরিক পরীক্ষা করে ১৪ দিনের জন্য এই আইসোলেশন ঘরে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি হোমের আবাসিকদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করেছেন হোম কর্তৃপক্ষ। ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনও আবাসিককে গেটের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। বাইরে থেকে কেউ দেখাও করতে আসতে পারবে না। কিশলয় হোমে ১২৪ জন অনাথ আবাসিকদের রয়েছে। তাদের সুরক্ষার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন হোমের সুপার।


রবি, ফারুক, ইলিয়াস, শুভেন্দুদের মতো আবাসিকদের কাছে এই হোমই ঘরবাড়ি। ওই হোমে কেউ আছে ১০ বছর। কেউ আবার পাঁচ কিংবা সাত বছর। হোম থেকেই স্কুলে যেত তারা। করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জেরে এখন তা পুরোপুরি বন্ধ। হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন এক ঘণ্টা পর পর প্রত্যেক আবাসিকের হাত তরল সাবান দিয়ে ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে একটি করে সাবান ও একটি তোয়ালে। আবাসিকদের হাত ধোয়ানোর কাজটা করছেন হোমের কর্মীরাই। তাদের সচেতন করতে সকাল এবং বিকেলে প্রার্থনার সময় কী ভাবে হাত তরল সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে পরিষ্কার করতে হবে, তা হাতেকলমে দেখানো হচ্ছে। সচেতন করতে হোমের মধ্যে দেওয়া হয়েছে পোস্টারও।


হোমের সুপার মলয় চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেন, 'হোমটাই ১২৪ জন আবাসিকদের বাড়িঘর। এরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। এই পরিস্থিতিতে এদের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের প্রধান দায়িত্ব।' সম্প্রতি নিমতা থেকে দুই আবাসিক এসেছে হোমে। আসার পরেই তাদের মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে। তারা সুস্থ রয়েছে। তার পরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের আইসোলেশন ঘরে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আবাসিকদের মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসার হিমাংশু দাস আবাসিকদের মাস্ক তৈরি করা শেখাচ্ছেন।

Source: Ei Samay

Thursday, April 30, 2020

করোনার আতঙ্কে বন্ধ করা হল বারাসতের ওষুধের পাইকারি বাজার

করোনার আতঙ্কে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সবচেয়ে বড় ওষুধের পাইকারি মার্কেট  বন্ধ করা হল। বারাসতে পঞ্চানন মার্কেট  নামে এই বাজারে হোলসেল ওষুধ বিক্রির জন্য বিখ্যাত। এই মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর গত কয়েক দিন ধরে জ্বর ও কাশী হয়।ওষুধ খেয়েও জ্বর না কমায়, তাঁকে কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পাঠায় প্রশাসন।বারাসত স্টেশনের এক নং প্লাটফর্ম থেকে বেড় হলেই এই ওষুধের পাইকারি বাজার পড়ে।স্টেশন থেকে হরিতলা মোড়ের দিকে আসার রাস্তায় বাম দিকে পঞ্চানন মার্কেট।


বাজারে ঢোকার রাস্তা এতটাই সরু যে দুজন পাশাপাশি যাওয়া দূস্কর।আর সিঁড়ি ধরে বাজারের উপরে উঠলে গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করা ছাড়া উপায় নেই।ঘিঞ্জী বাজারে স্যোশাল ডিসটেন্সিং এক প্রকার অসম্ভব ছিল।লক ডাউনের শুরু থেকে ব্যবসাদার ও প্রশাসনের মাথা ব্যাথা ছিল এই বাজার। কারন  করোন থাবা থেকে এই পাইকারি ওষুধের বাজারকে  মুক্ত রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ করোনা ভাইরাস তখনও বারাসত শহরে মাথা চাড়া দেয়নি৷প্রশাসনের নির্দেশ মত সকল খরিদারকে চাহিদা মত ওষুধের ফর্দ বানিয়ে বাজারের বাইরে থেকে দোকানদারকে ওর্ডার দিয়ে দিতে হবে।তারপর রাস্তার ধারে অপেক্ষা করতে হবে।রাস্তাতেই দোকানের কর্মীরা ওষুধ ডেলিভারি করে যাচ্ছিল।কিন্ডু এই ঘিঞ্জি বাজারে প্রতিদিন হাজার খানেক লোক জড় হচ্ছিল ওষুধ নিতে।


এই এলাকার বাসিন্দা সৌমদ্বীপ ঘোষের অভিযোগ একদিকে বারাসাতের বড় বাজার আর একদিকে পঞ্চানন মার্কেট। সারা জেলার ওষুধ এখান থেকে যায়।ফলে তাদের বরাবরের  আশংকা ছিল প্রচন্ড ছোয়াছে করোনা যে কোন সময় এই এলাকায় কড়া নারবে।প্রশাসন এই বাজার বিল্ডিং এর গঠন জানত তারপরেও কি করে এমন একটা ঘিঞ্জি বাজারকে চালাবার অনুমতি দিল তা তার বোধগম্য হচ্ছে না।বারাসত শহরের ওষুধের খুচরো ব্যবসাদারের মৃনাল বিশ্বাস এদিন বলেন লকডাউনের কারনে বেশ কিছু ওষুধের যোগানের সমস্যা রয়েছে। তার উপর পাইকারি বাজার বন্ধ হওয়াতে আরও সমস্যা বাড়বে।তবে জেলার বড় শহরগুলিতে ওষুধ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটারদের সরবরাহ থাকাটা একটা স্বস্তি। তবে গ্রামীণ এলাকায় ওষুধের যোগানের উপর প্রভাব পড়বেই পঞ্চানন মার্কেট বন্ধের।  আজ সকাল থেকে বাজার বন্ধের কথা জানায় ব্যবসায়ীরা।ব্যবসাদার সুত্রে জানা গেছে সাময়িকভাবে এই বাজার বন্ধ রাখা হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর করোনা টেস্ট রিপোর্ট দেখে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাজার ব্যবসায়িক কমিটির সভাপতি সুনীল দেবনাথ।তার দাবী আগামীকাল শুক্রবার বাজারে স্প্রে করে জীবানুমুক্ত করা হবে।

Source: News 18


Monday, April 13, 2020

বারাসতের দেওয়াল জুড়ে আঁকিবুঁকিতে করোনা সচেতনতা বার্তা

করোনা ভাইরাস থাবা না বসালে রাজ্যে এতদিনে পুরভোটের ডঙ্কা বেজে যাওয়ার কথা ছিল। মাস দেড়েক আগে থেকেই পাড়ায় পাড়ায় চুন দিয়ে দেওয়াল রং করার কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনার আঁচে পুড়েছে ভোটের কপাল। তাই দেওয়ালগুলি সাদাই পড়ে ছিল। এবার ভোট প্রচারের সেই সাদা ক্যানভাসে রং,তুলির টানে মানুষকে ঘরে থাকার বার্তা দিতে নামল ছাত্র-যুবরা।


লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় ভিড়ের ছবি রোজ দেখা যাচ্ছে রাজ্যে। আর তার সঙ্গে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কোথাও পাড়ার মোড়ে আড্ডা, কোথাও চায়ের দোকানে ভিড়। সকাল হতেই ব্যাগ হাতে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বাজারে। পুলিশ প্রশাসন নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফিরছে না মানুষের। এবার তাই রং তুলি হাতে ময়দানে নামল ছাত্র যুবরা। রবিবার থেকে বারাসতের বিভিন্ন এলাকায় দেওয়াল লিখন শুরু করল ইয়াং জেনারেশন অফ বারাসত নামে ছাত্র যুবদের একটি সামাজিক সংগঠন। দেওয়ালে কার্টুন এঁকে বাসিন্দাদের সচেতন করছেন তাঁরা।


লকডাউন চালু হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মিম ভাইরাল হয়েছে। তাদেরই কয়েকটি নিয়ে মজাদার কার্টুন আঁকছে এই ছাত্র যুবরা। এই মিমগুলির মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিল চা কাকু। বারাসতের রথতলা মোড়ের কাছে একটি দেওয়ালে সেই চা-কাকুকেই প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে ওই ছাত্ররা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, চা কাকু বলছেন, “আমরা চা খাব না?” উত্তরে একজন বলছেন, “চা খাবেন, কিন্তু বাড়ি থেকে বেরবেন না।” এছাড়া ‘স্টে হোম, স্টে সেফ’ -এর বার্তাও দেওয়া হচ্ছে এই দেওয়াল লিখনে।


ইয়ং জেনারেশন অফ বারাসতের তরফে সোহম পাল বলেন, “আমাদের এই অরাজনৈতিক সংগঠনে প্রায় দু’শোর উপর সদস্য রয়েছে। দেওয়াল লিখনের পাশাপাশি তারা প্রত্যেকে এলাকায় এলাকায় ঘুরে সার্ভে করছে। এবং প্রকৃত অর্থে যারা এই লকডাউনে খাদ্যসংকটে ভুগছেন, তাদের হাতে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে। চাল, ডাল, ওষুধ, বেবিফুড, যার যেমন প্রয়োজন সে অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে।”

Source: Sanbad Pratidin

Sunday, April 12, 2020

বাংলার গর্ব মেঘার জীবনে কাটল মেঘ, সাহায্যের হাত বাড়ালেন 'নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক' পুলিশ অফিসার

 আর কয়েক সপ্তাহ পরেই ভারতীয় টিমের জার্সি গায়ে তাঁর উড়ে যাওয়ার কথা ছিল থাইল্যান্ডে। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের কারণে কেরালার তিরুবনন্তপুরমের জাতীয় শিবির বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বারাসতে নিজের বাড়িতে ফিরে চরম সঙ্কটে বাংলার অন্যতম সেরা প্রতিশ্রুতিবান ভলিবলার মেঘা দাস। দু’বেলা পেটপুরে খাওয়ার অবস্থাও তাঁর এখন নেই। আর সেই খবর 'এই সময়' পত্রিকায় প্রকাশিত হতেই এবার এগিয়ে এলেন কলকাতা পুলিশের এক অফিসার।



জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের ওই অফিসার খবরটি পড়েই শুক্রবার হাজির হন মেঘার বাড়িতে। সঙ্গে করে নিয়ে যান এক মাসের জন্য চাল, ডাল-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। শুধু তাই নয়, এরপর আরও সাহায্য করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই অফিসার চান না এই সাহায্যের প্রেক্ষিতে তাঁর নাম প্রকাশ্যে আসুক। সেই কারণেই এই প্রতিবেদন তাঁর নাম প্রকাশ করা হল না। তবে, এতে যে মেঘার সমস্যার অনেকটাই আপাতত সমাধান হল, তা বলাই বাহুল্য।


৬ ফুটের বেশি উচ্চতার বছর আঠারোর মেঘার ঝুলিতে জাতীয় পর্যায়ের গোটা সাতেক সোনার মেডেল রয়েছে। মিনি, সাবজুনিয়র, জুনিয়র সহ খেলো ইন্ডিয়া গেমসে বাংলা টিমকে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন করে জাতীয় শিবিরে ডাক পেয়েছিলেন এই ‘অ্যাটাকার’। ভলিবলের কোর্টে প্রতিপক্ষকে টলিয়ে দিলেও নিজের সংসারের কোর্টের রক্ষণ কিন্তু সামলাতে পারছেন না ক্লাস ইলেভেনের ছাত্রী মেঘা।


মেঘার বাবা গোপাল দাস আগে পাখির ব্যবসা করতেন। সেই ব্যবসা নিষিদ্ধ হওয়ায় এখন তিনি বারাসতের লালি সিনেমার কাছে ফুটপাতে এক ছোট্ট ইমিটেশনের দোকান চালান। এমনিতে পুজোর সময় ছাড়া দোকান প্রায় চলেই না। তার ওপর লকডাউনে তিনি তো দোকানই খুলতে না পারায় কোনও আয় নেই দিন কুড়ি ধরে। জমানো কোনও টাকাও নেই। বুধবার দুপুরে বারাসতের মালঞ্চ পাড়ায় এক চিলতে বেড়া দেওয়া ঘরে মেয়ে, বউ ও শাশুড়িকে নিয়ে বসে গোপালবাবু বলেছিলেন, ‘মেয়েটা সবে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। ভারতীয় টিমে খেললে হয় তো কিছু টাকা স্টাইপেন্ড পেত। পরে একটা চাকরি বাকরিরও পথ খুলে যেত। কিন্তু এই করোনা আমাদের সেই স্বপ্ন আপাতত থমকে দিল।’ গোপালবাবুর আরও কষ্টের কারণ একজন খেলোয়াড়কে যা খাবার দিতে হয়, তার তিনি কিছুই দিতে পারছেন না মেয়েকে। তাঁর আক্ষেপ, ‘মেয়েটা বাড়ি রয়েছে কিন্তু ওকে কোনওভাবে একটু ভাত আলুভাতে ছাড়া তো কিছুই দিতে পারছি না। রোজগার নেই।’ সঙ্গে জোড়েন, ‘ধারদেনা করে ওকে জাতীয় শিবিরে পাঠিয়েছিলাম। এখন তো লোকের কাছে আর ধার চাইতেও পারছি না।’


বাবা ভেঙে পড়লেও হার মানতে নারাজ ছিলেন মেঘা। বলছিলেন, ‘জাতীয় শিবিরে থাকলে খাবার কোনও সমস্যা হয় না। কেরালায় জুয়েল স্যর আমাদের ১৬ জন মেয়েকে তৈরি করছিলেন থাইল্যান্ডে একটা আন্তর্জাতিক জুনিয়র টুর্নামেন্টে খেলতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তা না হওয়ায় বাড়ি ফিরেছি। অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে আমি সব মানিয়ে নিয়েই নিজেকে তৈরি রাখছি জাতীয় শিবিরে যাওয়ার জন্য।’ এই জাতীয় শিবিরে বাংলা থেকে একমাত্র মেঘাই সুযোগ পেয়েছিলেন।


মেঘা বারাসতের মেয়ে হলেও তাঁর উত্থান মগরা ভলিবল অ্যাকাডেমিতে। এই অ্যাকাডেমির প্রাণপুরুষ প্রভাত ঘোষ মগরাতেই একটা বাড়ি ভাড়া করে মেঘার পরিবারকে বছরের বেশি সময় রেখে দেন। পরিবারকে আর্থিক সাহায্যও করেন। মেঘার বাবা বলছিলেন, ‘আজ মেঘা এই জায়গার পৌঁছানোর পিছনে সবটাই প্রভাতবাবুর অবদান। কিন্তু এমন লকডাউনের সময় তিনিই বা আমাদের কত সাহায্য করবেন? তাই আমরা এখন খুবই অসহায়।’


অবশেষে বাংলার প্রতিভাবান এই ভলিবলারের পাশে দাঁড়ালেন কলকাতা পুলিশের ওই অফিসার। সেজন্য খুশি মেঘা ও তাঁর পরিবার।


Source: Ei Samay

Sunday, April 5, 2020

করোনা মোকাবিলায় মুরগি বিলি বারাসতে

 করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন। মানুষ ঘরবন্দি। কাজকর্ম সব শিকেয় উঠেছে। সবচেয়ে বিপদ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজনের। ভবঘুরেদের অবস্থা তো কহতব্য নয়। এ অবস্থায় অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কেউ কেন্দ্র বা রাজ্যের তহবিলে অর্থ দান করছেন, কেউ দিচ্ছেন চাল-ডাল। বারাসতের ন’পাড়ার দাস পরিবারও সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। তবে চাল-ডাল দিয়ে নয়, দুঃস্থদের হাতে তুলে দিচ্ছে একটি করে জ্যান্ত মুরগি।


কিন্তু হঠাৎ জ্যান্ত মুরগি বিলি কেন? দাস বাড়ির ছেলে তুহিন বললেন, ‘করোনা মোকাবিলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকাটা জরুরি। নিয়মিত প্রোটিন খাওয়া দরকার। লোকে চাল-ডাল দিচ্ছে। গরিবদের পেট ভরছে। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কি গড়ে উঠছে? না। তবে ওদের করোনা হলে কী হবে? তাই এই ব্যবস্থা।’


যেমন ভাবা তেমন কাজ। বারাসতের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুঃস্থ পরিবারগুলির বাড়ি বাড়ি গিয়ে দাস পরিবারের দুই ছেলে তুহিন ও সজল মুরগি বিলি করে দিয়ে এসেছেন। এমন সাহায্য পেয়ে অনেকেই অবাক। তখন তুহিন-সজল সবাইকে বুঝিয়ে বলছেন, যে চাল-ডাল শুধু নয়, মুরগিকেও ত্রাণ হিসেবে যেন গ্রহণ করেন সকলে। এমন ত্রাণ পেয়ে যারপরনাই খুশি সকলে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা হরিগোপাল সাঁতরা বললেন, ‘ওরা যে এ ভাবে ভেবেছে, সে জন্য ধন্যবাদ। সত্যিই আমাদের পুষ্টিকর খাওয়ার জোটে না। রোগ হলে সহজে সেরে উঠব না। আর করোনা হলে তো কথাই নেই। দাস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে আমার কুর্নিশ।’


বারাসতের ন’পাড়ার দাস পরিবার বেশ সম্পন্ন। প্রতি বছর ধুমধাম করে বাসন্তী পুজো করে দাসেরা। এ বছর লকডাউনের জেরে পুজোয় কাটছাট করতে হয়েছে অনেকটাই। নমো নমো করে সারতে হয়েছে পুজো। পুজোর যে বাজেট ধরা হয়েছিল, তার অনেকটাই রয়ে গিয়েছিল। সেই টাকাটা বিপদের দিনে আর্তের সেবায় কাজে লাগানো হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু কী ভাবে? পরিবারের কেউ বলেন, থোক টাকাটা ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হোক। কেউ বলেন, স্থানীয় গরিব মানুষদের চাল-ডাল দেওয়া হোক। কারও মত ছিল, খিচুড়ি রান্না করে কয়েক দিন খাওয়ানো হলেই ভালো হয়। এমন নানা মতের মধ্য উঠে আসে মুরগির কথা। সকলেই একবাক্যে রাজি হয়ে যান।


বাড়ির নবীন সদস্য তুহিন আর সজলের উপর পড়ে মুরগি বণ্টনের দায়িত্ব। দু’জনেই সানন্দে রাজি হয়ে যান। স্থানীয় একটি পোলট্রি থেকে একশোটি মুরগি কেনা হয়। তবে শুধু মুরগিই নয়, দেওয়া হয় চাল-ডাল-নুন-তেলও। সজল-তুহিনরা জানালেন, বাড়ির বড়দের তেমনই নির্দেশ ছিল। মুরগি বিলির ফাঁকে সজল বললেন, ‘আসলে প্রতিবছর বাসন্তী পুজোয় অনেক লোক নিমন্ত্রিত থাকে। এ বছর পুজো ছাড়া সে সব আর হয়নি। তাই এত কিছু করে উঠতে পারলাম।’


মুরগি বিলির সময় সরকারি নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন সজল-তুহিন। পড়েছিলেন মাস্ক। নিয়মিত স্যানিটাইজার দিয়ে হাতও পরিষ্কার করছিলেন।


Source: Ei Samay

Friday, April 3, 2020

উপার্জনহীন অযোধ্যা পাহাড়বাসী, বাসিন্দাদের চাল পাঠালেন বারাসতের পুলিশ সুপার

 একেবারে পাহাড়ের মাথায় ২২২০ ফুট উচুঁতে বাঘমুন্ডির জিলিং সেরেঞ। রেশন আনতে এই কাঠফাটা রোদে পাহাড়ি পথে নামতে হয় প্রায় তিন কিমি। অন্যদিকে কোটশিলার মুরগুমা থেকে পাঁচটা পাহাড় ডিঙিয়ে তবে লেওয়া গ্রাম। পাকা কেন্দ আর কুলের আঁটি চিবিয়ে দুপুর কাটছে সেখানকার বাসিন্দাদের। দু’বেলা ধোঁওয়া ওঠা থালা ভরতি ভাত তাদের কাছে ছিল বিলাসিতা! করোনা ‘রাক্ষস’-র আতঙ্কে ভয়ে সিঁটিয়ে আছে আড়শা বনাঞ্চলের ভুদাও। তাই পাহাড়ি পথ ভেঙে রেশনও আনতে যাচ্ছে না এই জনপদ। অথচ প্রায় দশ কিমি হেঁটে রোজ কাঠ বেচতে সিরকাবাদ, কান্টাডি যেত এই গ্রামের বাসিন্দারাই। ফলে কোনও ক্রমে একবেলা ভাত ফুটিয়ে বাকি সময় জঙ্গলের শাক আর বাঁওলা খেয়ে দিন গুজরান।


অযোধ্যা পাহাড় রেঞ্জ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাঁচ থানার প্রায় শতাধিক গ্রাম লকডাউনের জেরে যেন ব্লক সদর থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন। হাতে টাকাকড়ি কিছুই নেই। এক সপ্তাহ ধরে উপার্জন বন্ধ। বনমহল অযোধ্যায় দিনমজুরি করা মানুষজনের যদি রোজগার বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এই পাহাড়ি জনপদের কি অবস্থা হয় তা ভুলে যাননি বারাসতের পুলিশ সুপার। ভোলেননি ওই এলাকার আধপেটা খাওয়া মানুষগুলোর মুখগুলো। তাই এই করোনার আবহে অযোধ্যা পাহাড়ে দশ হাজার কিলো চাল পাঠিয়ে দিয়েছেনতিনি।


বারাসাতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর হাত ধরে মাওবাদীদের হাতে খুন হওয়া পার্থ-সৌমজিতের হত্যার কিনারা হয়। গ্রেপ্তার হয় বিক্রম। বলা যায়, অযোধ্যা স্কোয়াড শেষ হয়েছিল তাঁর হাত ধরেই। তখন তিনি ডিএসপি (আইন–শৃঙ্খলা), পুরুলিয়া। সময় পেরিয়েছে। এখন তিনি বারাসতে, তবে সেখানে বসেই ভেবেছেন পুরুলিয়াবাসীর কথা। তাঁর পাঠানো দশ হাজার কিলো চালে এখন যেন দু’বেলা থালা ভরতি ভাত পাচ্ছে অযোধ্যা পাহাড় রেঞ্জের জিরিং সেরেঞ, লেওয়া, মামুডি, বামনি, ঘাটিয়ালির মত দুর্গম গ্রাম। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে দশ কেজি করে চাল পৌঁছে যাচ্ছে পাহাড়ের ঘরে ঘরে। সঙ্গে করোনা ভাইরাসের সতর্কতায় প্রচারপত্র। ঘরে ঘরে চাল বিলিতে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গী হচ্ছে পুলিশও।


ওই সংস্থার সভাপতি চন্দন চক্রবর্তী বলেন, “এই লকডাউনে পাহাড়ি জনপদের মানুষগুলির অবস্থা দেখে ফেসবুকে আবেদন করেছিলাম। তারপরই গত রবিবার বারাসতের এসপির দশ হাজার কিলো চালের গাড়িটি আমার সামনে এসে দাঁড়ায়।” আর এই প্যাকেট ভরতি চাল পেয়ে যে কী খুশি সোমবারি সিং মুড়া, কাজলী হাঁসদা, ছুটু সিং মুড়ারা! কিন্তু এত চাল কীভাবে জোগাড় হল? বারাসত এসপির কথায়, “তখন মাও দমনে এই পাহাড়ি গ্রামগুলির মানুষে়র ঋণ কোনভাবেই শোধ করতে পারব না। তাই এই অবস্থায় সামান্য প্রয়াস আর কী! তবে এই চাল জোগাড় করতে যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারাই আসল নায়ক।”


Source: Sanbad Pratidin

Wednesday, April 1, 2020

ভিক্ষা নয়, বারাসতের অভুক্ত মুখে খিচুড়ি দিলেন সুমিত্রারা

 সুনসান স্টেশন চত্বর। দোকানপাট সব বন্ধ। ট্রেন চলাচল তো কবেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বারাসত স্টেশনের ভিখারিরা বুঝতেই পারছে না হঠাৎ কী হল। সব ভোঁ-ভা!

করোনাভাইরাস, লকডাউন, আইসোলেশন- এই শব্দগুলি তাঁদের কাছে অর্থহীন। দু'দিনে দু'মুঠো ভাতও জোটেনি। কে-ই বা ভাত তুলে দেবেন ওঁদের মুখে? করোনা থেকে বাঁচতে সকলে গৃহবন্দি।

গত দু'দিনের মতো শুক্রবারটাও উপোসেই কাটত ওই ভিখারিদের। খিদা মেটাতে রাস্তার কল থেকে পেট ভরে জল খাওয়া ছাড়া আর উপায় ছিল না। আচমকা সুনসান বারাসত স্টেশনে মুখে মাস্ক বেঁধে হাজির কয়েকজন মহিলা। সঙ্গে খিচুড়ির হাঁড়ি, হাত ধোওয়ার সাবান। প্রায় সকলে স্থানীয় একটি আবাসনের বাসিন্দা। লকডাউনের মধ্যে শহরের ভিখারিদের জন্য তাঁরা রান্না করেছেন। নিজেদের বাড়ির খাবার বাঁচিয়েই এই খিচুড়ি তৈরি হয়েছে বলে জানালেন আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা সুমিত্রা রায়। তাঁর কথায়, 'বারাসত স্টেশন বেশ কিছু মানুষের স্থায়ী ঠিকানা। স্থানীয় ব্যবসায়ী আর নিত্যযাত্রীদের ভরসায় ওঁরা বেঁচে থাকেন। কিন্তু লকডাউনের জন্য এখন সব কিছু বন্ধ। ফলে বিভিন্ন বয়সের এই ভিখারিদের উপোস করেই দিন কাটাতে হচ্ছে। আমাদের আবাসনের মহিলারা অনেকে বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে এসেছি ওঁদের জন্য।'

বারাসত স্টেশনের জনা দশেক ভিখারি খাওয়ার পরে বেঁচে গিয়েছিল অনেকটা খিচুড়ি। তা দেখে তাঁরাই প্রস্তাব দিলেন অদূরে হৃদয়পুর স্টেশন ও চাঁপাডালি মোড়ে কিছু ভবঘুরে থাকেন। গত দু'দিন তাঁদেরও পেটে কিছু পড়েনি। তাই ওঁদেরও যদি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা যায়। আপত্তি করেননি সুমিত্রা, জয়া, রূপারা। যানবাহন বন্ধ। বারাসত স্টেশনের ভিখারিদের সঙ্গে হেঁটেই ওই গৃহবধূরা পৌঁছে গেলেন চাঁপাডালিতে। সেখানে খাবার বিলির বন্দোবস্ত করলেন স্টেশনের ভিখারিরাই। তবে সুমিত্রাদের কড়া নির্দেশ ছিল, একে অপরের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। সেই নির্দেশের অমান্য করেননি ভিখারিরা।

কিন্তু কত দিন এ ভাবে বাড়ির খাওয়া বাঁচিয়ে ভিখারিদের খাওয়ানো সম্ভব?

জবাবে কলোনি মোড়ের কৈলাস আবাসনের বাসিন্দা সুমিত্রা রায় এবং জয়া পোদ্দার বললেন, 'যতদিন পারি, এটা চালিয়ে যাব। আমরা হিসেব করে দেখেছি, নিজেরা কিছুটা কম খেলে আরও দিন পাঁচেক চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে। তবে বারাসত পুরসভা থেকে যদি উদ্যোগ নেওয়া হয়, তা হলে সবথেকে ভালো।' সুমিত্রাদের এই উদ্যোগ দেখে বারাসতের আরও কিছু আবাসনের মহিলারা নড়েচড়ে বসেছেন। স্থানীয় চিকিৎসক গৌতম সাহা এবং তাঁর স্ত্রী সোহিনী ঠিক করেছেন শনিবার থেকে তাঁরাও হাত লাগাবেন সুমিত্রা, জয়াদের সঙ্গে। লকডাউনের মধ্যে বারাসতের কিছু ভিখারির অন্তত অন্নসংস্থানের চিন্তা দূর হল।


Source: Ei Samay

Tuesday, March 31, 2020

চেম্বারে বসেই রক্তদান বারাসতের ডাক্তারবাবুর

 প্রতি বছর গরমকালে রক্তের আকাল দেখা যায়। এ বছর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লকডাউন। ফলে রাজ্যের হাসপাতাল থেকে ব্লাড ব্যাঙ্ক সর্বত্রই রক্তের সঙ্কট। এই সঙ্কট মোকাবিলায় নিজের সীমিত সামর্থ্যে রক্তের জোগান বাড়াতে এগিয়ে এলেন বারাসতের এক চিকিৎসক। প্রতি রবিবার নিজের চেম্বারকে রক্তদান শিবির বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ভিড় এড়াতে এক দিনে মাত্র দশ জনই রক্ত দেবেন বলে ঠিক হয়েছে।



ধীমান চট্টোপাধ্যায়। বারাসতের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। চেম্বার বারাসতের কলোনি মোড়ের কাছে। লকডাউনের বাজারে এখন চেম্বারে রোগীর সংখ্যা কমেছে। অনেকে ফোনেই ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছেন। তবু প্রতিদিন নিয়ম করে চেম্বার খোলেন ধীমান। জানেন কী ভাবে রক্তের সঙ্কট ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত লোকজন যা নিয়ে সম্যক ওয়াকিবহাল। এই পরিস্থিতিতে রক্তের সঙ্কট কাটাতে ধীমান নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন। রবিবার করে নিজের চেম্বারকে রক্তদান শিবির বানাচ্ছেন তিনি। প্রতি রবিবার সর্বোচ্চ দশ জনের রক্ত নেওয়া হবে। এক একজন করে চেম্বারে ঢুকবেন। সংগৃহিত রক্ত তুলে দেওয়া হবে বারাসত হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। ধীমান বললেন, ‘রক্তের যা আকাল, তাতে এই উদ্যোগ হয়তো কিছুই নয়। তবু বিন্দুতেই সিন্ধু হয়।’ ধীমান ডাক্তারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বারাসত কলোনি মোড় এলাকার বাসিন্দারা।


তবে শুধু রক্তদান শিবির করেই ক্ষান্ত হননি ধীমান। প্রতি সন্ধ্যায় বারাসত স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ও আশপাশের পথশিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছেন রুটি, তরকারি। এ ভাবে রোজ প্রায় ৫০ জনের রাতের খাবারের ব্যবস্থা করছেন তিনি। ধীমান চট্টোপাধ্যায়কে দেখে এগিয়ে এসেছেন রেডিয়োলজিস্ট বিবর্তন সাহা। বাগুইআটিতে থাকলেও তাঁর কর্মস্থল বারাসত। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মৌসুমি ৫০ কেজি চাল এবং সব্জি বিলি করে দেন বারাসতের দুঃস্থদের মধ্যে।

Source: Ei Samay


Thursday, March 26, 2020

বারাসতের প্রবীণদের জন্য ফুড ডেলিভারি জোম্যাটো-র

 লকডাউন পরিস্থিতিতে একাকী প্রবীণ নাগরিকদের সুবিধার্থে মঙ্গলবারই বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছিল বারাসত জেলা পুলিশ। এ বার সেই হেল্পলাইন নম্বর দেখে প্রবীণ নাগরিকদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিল একটি ফুড ডেলিভারি সংস্থা। বুধবার দুপুরে ওই সংস্থার কয়েকজন কর্মী বারাসত থানায় এসে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। কী ভাবে সংস্থার কর্মীরা প্রবীণ নাগরিকদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেবেন, এই কাজে কতজন কর্মী নিযুক্ত থাকবেন তার বিস্তারিত তথ্যও তাঁরা তুলে ধরেন পুলিশের কাছে। এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে বারাসত থানার পুলিশ।

লকডাউন চলাকালীন বারাসতের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী একাকী প্রবীণ নাগরিকদের সাহায্য করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে (৬২৯২২১২৩৭৮)। এই নম্বরে প্রবীণ নাগরিকরা ফোন করে নিরাপত্তা থেকে শুরু করে খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসাজনিত কিংবা অন্য যে কোনও সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রবীণের বাড়িতে পুলিশ পৌঁছে গিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। সংস্থার কর্মী অভিজিৎ সরকার বলেন, 'পুলিশের দেওয়া হেল্পলাইনে যে কোনও খাবার অর্ডার করলেই জোম্যাটোর কর্মীরা পৌঁছে যাবেন প্রবীণ নাগরিকদের বাড়িতে। তুলে দেওয়া হবে অর্ডার অনুযায়ী খাবার। এ জন্য ২০-২২ জনের একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে।'

Source: Ei Samay




Thursday, March 19, 2020

বিদেশ থেকে ফেরার কথা নিজেই জানিয়েছেন বারাসতের এক সচেতন নাগরিক

 বিদেশ থেকে ফিরে তথ্য লুকিয়ে যাওয়া নয়, বরং পুলিশকে ফোন করে নিজের পরিস্থিতি জানালেন এক সচেতন নাগরিক। পুলিশ এবং বারাসত হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে ওই ব্যক্তি ১৪ মার্চ জার্মানি থেকে ফিরেছেন। তিনি বারাসতের শিশিরকুঞ্জের বাসিন্দা। ফিরে আসার পর থেকে তার কোনো সমস্যা হয়নি। তবে সরকারের সচেতনতা প্রচার শুনে তিনি বুঝতে পারেন বিদেশ থেকে ফেরার বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো উচিত।


বুধবার সকালে বারাসত জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে ফোন আসে ওই ব্যক্তির। তিনি পুলিশকে জানান দিন, বিদেশ থেকে ফিরে বুঝতে পারছেন না কী করবেন। তৎক্ষণাৎ ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এসপি অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়। ফোনেই ওই ব্যক্তির বক্তব্য শোনেন ও সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে খবর দেন। দ্রুত ওই ব্যক্তির কাছে চলে যায় বারাসত হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল। তাকে পরীক্ষা করে আপাতত কোনও উপসর্গ পাওয়া যায়নি। তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে ঘরের মধ্যে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে। এসপি অভিজিৎ বলেন, 'এই ব্যক্তি যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন তা প্রশংসার যোগ্য। তাঁর থেকে অন্যদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।'

Source: Ei Samay

Wednesday, March 4, 2020

বাহারি ছাঁট, বিচিত্র রং ছাত্রদের চুলে! উচ্চমাধ্যমিকের অ‌্যাডমিট দিল না স্কুল কর্তৃপক্ষ

 বাহারি চুল ছেঁটে এলে মিলবে না অ্যাডমিট কার্ড। এমনই ফরমান জারি করলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বারাসত মহাত্মা গান্ধী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়ে। পরে তা স্কুলের শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।


কারও ঝাঁকড়া চুলে লাল-হলুদ রং করা কারও আবার একদিক ছেঁটে পরিষ্কার। এরা প্রত্যেকেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ছাত্রদের এমন এমন বাহারি চুলের স্কুলের মান-মর্যাদা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষকদের। স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, স্কুলের সম্মানের কথা মাথায় রেখে ছাত্রদের চুল কেটে আসার কথা বলা হয়েছিল। তবে, অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না এমন কথা বলা হয়নি।


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসতের মহাত্মা গান্ধী উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মঙ্গলবার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার কথা ছিল। সেইমতো এদিন দুপুরে ছাত্ররা অ্যাডমিট কার্ড নিতে আসে। ছাত্রদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের বাহারি চুল দেখে প্রধান শিক্ষক অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না বলে জানান। তাদেরকে চুল কেটে এসে অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই নিয়ে ছাত্রদের ক্ষোভ তৈরি হয়।


শেষ পর্যন্ত স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন স্কুলের ৮০ শতাংশ ছাত্রকে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক শুভেন্দুবিকাশ মাইতি জানিয়েছেন, আমাদের স্কুলের সুনাম রয়েছে। মাথায় বাহারি চুল নিয়ে অন্য স্কুলে পরীক্ষা দিতে গেলে ছাত্রদের পাশাপাশি স্কুলের সুনামও নষ্ট হতে পারে। তাই চুল কেটে এলে অ্যাডমিট কার্ড দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তা নাহলে বুধবার সকালে এসেও অ্যাডমিট কার্ড নিতে পারে। অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না একথা বলা হয়নি।

Source: Ei Samay



Monday, February 17, 2020

নিমন্ত্রণ সেরে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বারাসতের কাউন্সিলরের

 খুদে ভাইপোর অন্নপ্রাশন। ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তাই বাঁকুড়ায় নেমন্তন্ন করতে গিয়েছিলেন বারাসতের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য (৪৫)। ফেরার পথে চণ্ডীতলা থানার আরামবাগ-চাঁপাডাঙা-চণ্ডীতলা রোডের শিয়াখালায় একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারে গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান প্রদ্যোৎ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে প্রাণ হারান ভাই প্রণব ভট্টাচার্যও (৪০)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি গাড়ির চালক।


রবিবার রাত তখন আটটা। শিয়াখালা দেশমুখায় দাঁড়িয়েছিল একটি ট্রাক। আচমকাই সজোরে ট্রাকের পিছনে এসে ধাক্কা মারে বোলেরো গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অসম্ভব গতিতে যাচ্ছিল গাড়িটি। ধাক্কা মেরে ট্রাকের পিছনেই খানিকটা চিঁড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে ঢুকে যায় বোলেরোর সামনের অংশ। দ্রুত ছুটে আসেন স্থানীয়রা।


দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ির ভিতর থেকে তখন রক্তের ধারা গড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়। সামনের সিটে বসে থাকা প্রদ্যোৎ ঘটনাস্থলেই মারা যান। যদিও স্থানীয়রা প্রথমে তা বুঝতে পারেননি। প্রদ্যোতের পাশাপাশি গুরুতর জখম গাড়ির চালক দেবশঙ্কর ও পিছনের সিটে বসে থাকা প্রদ্যোতের ভাই প্রণবকে বের করে আনা হয়। তখন প্রণব বার বার বলতে থাকেন, ‘আমার দাদা বেঁচে আছে তো? দাদা বারাসতের কাউন্সিলর।’ এ কথা শুনে স্থানীয়রা চণ্ডীতলার তৃণমূল নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়কে ফোন করেন। সুবীর এসেই দলীয় নেতা-কর্মীদের খবর দেন। তিন জনকে নিয়ে আইয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ছোটেন স্থানীয়রা। প্রদ্যোতকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকায় প্রণবকে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই প্রণবের মৃত্যু হয়। চালক দেবশঙ্করের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। রাতেই তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।


জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় ফোন করেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারকে। সুবীর বলেন, ‘কাকলি ঘোষদস্তিদারকে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দিই। উনি আমাকে প্রদ্যোতের ছবি পাঠাতে বলেন। আমি হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠাতেই উনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।’ রাতে হাসপাতালে চলে আসেন হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব। গাড়িটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।


মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বারাসতের নয়নকাননে প্রদ্যোতের বাড়িতে। ক’দিন বাদেই পরিবারে আনন্দানুষ্ঠান। তার আগে যেন বজ্রাঘাত নেমে এল। স্বামীর মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্রদ্যোতের স্ত্রী মৌমিতা। বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর একমাত্র মেয়ে।


প্রদ্যোতের মৃত্যুর খবর পেয়েই নয়নকাননের বাড়িতে চলে আসেন বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়, ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্য কাউন্সিলর। সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রদ্যোৎ ছিল আমার ছোট ভাইয়ের মতো। নিজগুণে এবং দক্ষতার সঙ্গে পুরসভার শিক্ষাদপ্তর সামলাত।’ কথা বলতে বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।


Source: Ei Samay


Tuesday, February 4, 2020

চাকরির টোপ দিয়ে বারাসতের বাসিন্দাকে দিয়ে দুবাই এ পরিচারিকার কাজ

 ফেসবুকে আলাপ। সেই আলাপ থেকে বন্ধুত্ব। বারাসতের দম্পতির সঙ্গে কাকদ্বীপের যুবকের এই ঘনিষ্ঠতাই বিপদ ডেকে আনল। বিদেশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বারাসতের গৃহবধূকে দুবাইতে নিয়ে গিয়ে পরিচারিকার কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে পাসপোর্টও। স্ত্রীকে ফিরে পেতে বিদেশ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন স্বামী।


কয়েক মাস আগে বারাসতের বাসিন্দা সায়ক চক্রবর্তী ও তাঁর স্ত্রী তানিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল কাকদ্বীপের যুবক মিঠুন বাগের। সেই আলাপের সূত্রেই মিঠুন দুবাইয়ে নার্সের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিঠুন।


বারাসত-ব্যারাকপুর রোডের ধারে আবাসনে থাকেন চক্রবর্তী দম্পতি। সায়ক শেয়ার বাজারে কাজ করেন। শেয়ারের ব্যবসায় লোকসানের মুখে পড়েছিলেন তিনি। ফলে সংসার চালানোই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ দিকে ছেলে ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে পড়ে। ছেলের স্কুলের খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন সায়ক ও তানিয়া। এই আর্থিক টানাটানির মাঝেই সায়ক-তানিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় মিঠুন বাগের। সায়ক বলেন, ‘মিঠুন আমার স্ত্রীকে কাতারে নার্সের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন। এ জন্য আমার থেকে তিন লক্ষ টাকাও নিয়েছিলেন। এরপর মিঠুনই এক এজেন্সির মাধ্যমে তানিয়াকে কাতারে নিয়ে যান। আমরা ভেবেছিলাম মিঠুন বাগ ওই এজেন্সির একজন দালাল।’ সায়ক জানিয়েছেন, প্রথমে কাতারে নার্সের চাকরি দিলেও, পরে তানিয়াকে কাতার থেকে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তানিয়াকে দুবাইতে নার্সের চাকরি না দিয়ে লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাতে রাজি না হওয়ায় তানিয়ার উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচারও শুরু হয়েছে।


এ সবই দিন কয়েক আগে বাড়িতে ভিডিয়ো কল করে তানিয়া জানিয়েছেন সায়ককে। তানিয়া স্বামীকে জানান, মিঠু একজন জালিয়াত। তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কোনও উপায়ে এখন দেশে ফিরতে মরিয়া তানিয়া। মায়ের এই খবর শুনে উৎকন্ঠায় তানিয়া একমাত্র ছেলে ১৩ বছরের ঋষিতও। সায়ক জানালেন, ছেলে খুবই কান্নাকাটি করছে।


স্ত্রীকে ফিরে পেতে ইতিমধ্যেই বিদেশমন্ত্রক চিঠি লিখেছেন সায়ক। চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও। যোগাযোগ করেছেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে। বারাসত এবং কাকদ্বীপেও অভিযোগ দায়ের করেছেন সায়ক চক্রবর্তী। সায়ক জানালেন, প্রশাসনের তরফে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


বারাসতের বাড়িতে ছেলেক পাশে নিয়ে সায়ক বললেন, ‘আমার স্ত্রীর পাসপোর্ট, অন্যান্য পরিচয়পত্র-সহ যাবতীয় নথি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা ভীষণই চিন্তায় আছি।’


যোগাযোগ করা হয়েছিল মিঠুন বাগের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওদের ফেসবুকে পরিচয় হয়েছিল। বন্ধুত্বও ছিল। কিন্তু সামনাসামনি কোনওদিন দেখা হয়নি। তানিয়া কোথায় কাজে গিয়েছেন, সেই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

Source: Ei Samay


Sunday, January 26, 2020

প্রজাতন্ত্র দিবস নয়, বারাসতের সূবর্ণপত্তনবাসীর কাছে দিনটা 'মহালয়া'

উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের কাছেই বার্মা কলোনি। মূলত মায়ানমার থেকে আসা লোকজনের বাস। তবে লোকজন চেনে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কলোনি বলেই। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ বাহিনী বা মাস্টারদা সূর্য সেনের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন- সেই সময়কার বিপ্লবীদের পরিজনরা এখনও থাকেন এখানেই।



দেশ স্বাধীন হয়েছে। অনেক লড়াইয়ে পর মিলেছে অধিকার। স্বাধীন দেশে বার্মা কলোনিতে বসতি গড়েন সংগ্রামীরা।  আজও তাই প্রজাতন্ত্র দিবস তাঁদের কাছে হয়ে উঠেছে 'মহালয়া'। পূর্বপুরুষদের স্মরণ করার দিন। এলাকার মানুষজনের মুখে মুখে ফেরে অগ্নিযুগের ইতিহাস। ছাতি চওড়া হয়ে যায় গর্বে। বার্মা কলোনির অবশ্য পোশাকি নাম সূবর্ণপত্তন। মণিমুক্তোর মত ছড়িয়ে রয়েছে নানা কাহিনি। আট থেকে আশি- সকলেই নাগাড়ে বলে যেতে পারেন সে সব। শুনতে শুনতে কেটে যাবে আস্ত দিন।

প্রজাতন্ত্র দিবস সে কারণেই একটু অন্যরকম বার্মা কলোনির। আজাদ হিন্দ ফৌজের কায়দাতে আজও চলে কুচকাওয়াজ। সামিল হয় এলাকার কচিকাঁচারা। বছর ৭০-এর স্বপন কুমার নন্দীর বাবা ছিলেন নেতাজির দেহরক্ষী। স্বপন বাবু বলেন, “বাবা মায়ের মুখে নেতাজির যে গল্প শুনেছি, স্মরণ করলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়।” 

রেনুকানাথ দত্তের স্বামী, ভাসুর দুজনেই আবার মাস্টারদা সূর্য সেনের সঙ্গে ছিলেন। প্রবীণদের কাছ থেকে অতীতের গল্প শুনে বিস্মিত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সূর্য চৌধুরী। তার কথায়,“আমি মায়ের মুখে শুনেছি আমাদের পাড়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাড়া”। ফেরার সময় পাড়ার মোড়ে নেতাজি বাল ব্রিগেড ক্লাবে উচ্চগ্রামে বাজছে “কদম কদম বাড়ায়ে যা”।


Source: Zee24Ghanta 

Sunday, January 12, 2020

বারাসতের স্টেশনের দেওয়াল বাঁচাতে ছবিতে সাজ

স্টেশনের দেওয়ালগুলি মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার করে রং করা হত। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই ফের নোংরা হত গুটখা আর পানের পিকে। বিজ্ঞাপনের পোস্টারে বিসদৃশ হয়ে থাকত দেওয়ালও। এ বার সে সবই পরিষ্কার করে ছবি আঁকা হচ্ছে স্টেশনের দেওয়ালে। ভরে উঠছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে নেতাজি, মাদার টেরিজা, ট্রাম, পুরনো কলকাতার চালচিত্রে। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বারাসত জংশনে রেলের দেওয়ালে ছবি আঁকার পর্ব প্রায় শেষের পথে।


দেওয়াল সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি বাংলা তথা দেশের পুরনো ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্যও এই প্রয়াস, দাবি পূর্ব রেলের। এমনই একটি দেওয়ালে ছবি আঁকছিলেন রাজারহাটের জামালপাড়ার বাসিন্দা দেবাশিস চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘ছবিগুলি দেখে নতুন প্রজন্মও এ শহর, এ দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে আগ্রহী হবে। তাই সে সব নিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’’ অন্য এক শিল্পী সুশান্ত সরকার বলেন, ‘‘মূর্তি ভাঙা বা সৃষ্টিশীল জিনিসকে ধ্বংস করার প্রতিযোগিতা চলছে চারদিকে। সেই পরিস্থিতিতে দেওয়ালে ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার এমন কাজ পরিবেশ এবং সাধারণ মানুষ সকলের পক্ষেই সুন্দর বার্তা দেবে।’’


রেলের এই ভাবনার প্রশংসা করেছেন নিত্যযাত্রী থেকে বারাসতের বাসিন্দাদের বড় অংশ। বারাসত কলেজের পড়ুয়া রাজা দাসের দাবি, ‘‘ফাঁকা দেওয়াল দেখলেই গুটখা কিংবা পানের পিক ফেলে নোংরা করেন মানুষ। ছবি আঁকা দেওয়াল দেখে নিশ্চয়ই সেই প্রবণতা কমবে।’’ 


পূর্ব রেল সূত্রের খবর, সচেতন ভাবেই ছবিগুলির মধ্যে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন মনীষী, প্রকৃতি, বাউল এবং সাঁওতাল লোকনৃত্য, পুরনো কলকাতা, শহরের দর্শনীয় স্থান। নজর দেওয়া হয়েছে, স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের উপরেও। ছবি এঁকে এ ভাবে স্টেশনের দেওয়াল সাজিয়ে তুলতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল।


পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি রেলযাত্রীরা যেন চোখের আরাম পান, সেই ভাবনা থেকে এই উদ্যোগ। পরীক্ষামূলক ভাবে এটা বারাসতে করা হল। ধীরে ধীরে অন্য স্টেশনগুলিতেও এমন কিছু করার ভাবনা রয়েছে।’’

Source: Ananda Bazar