Showing posts with label sourav choudhury mother panchayat candidate. Show all posts
Showing posts with label sourav choudhury mother panchayat candidate. Show all posts

Monday, April 9, 2018

ছেলের স্বপ্ন সফলে প্রতিবাদী সৌরভ চৌধুরির মা পঞ্চায়েতে প্রার্থী

 সমাজবিরোধীদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে খুন হয়েছিলেন সৌরভ চৌধুরি। নৃশংস খুনের পর তাঁর দেহ ন’ টুকরো করে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বামুনগাছির সেই নিহত প্রতিবাদী যুবকের মা এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। শুক্রবার বিজেপির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সৌরভের মা মিতা চৌধুরি। গ্রামের পরিবেশকে সুষ্ঠু করে তুলতে তাঁর ছেলে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাকেই বাস্তবায়িত করতে রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন, দাবি মিতাদেবীর।



উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এক নম্বর ব্লকের ছোট জাগুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চার নম্বর পার্ট কুলবেড়িয়া গ্রামের বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন মিতাদেবী। তবে মিতাদেবী প্রার্থী হওয়ায় এই অঞ্চলের রাজনীতি রোমাঞ্চকর মোড় নিয়েছে। স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে সৌরভ খুনে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের আড়াল করার অভিযোগ তুলেছিল তাঁর পরিবার, সেই প্রভাবশালীরই বউদি এই ভোটে সৌরভের মায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তাই লড়াইটা যে শুধু ভোট বাক্সের নয় তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।


বামুনগাছি এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী শ্যামল কর্মকার ও তার দলবলের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন সৌরভ। ২০১৪ সালের ৪ জুলাই তাঁকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে শ্যামল ও তার সঙ্গীরা। রেললাইনের উপর সৌরভের খণ্ডবিখণ্ড দেহ উদ্ধার হয়। বারাসত আদালত অভিযুক্তদের সাতজনকে ফাঁসির সাজা, একজনকে যাবজ্জীবন, তিনজনকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডের সাজা দেয়। হাই কোর্টে ফাঁসির সাজা খারিজ করে শ্যামল-সহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। সৌরভ খুনের পর এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তুষার মজুমদারের বিরুদ্ধে শ্যামল ও তার সঙ্গীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ তোলেন সৌরভের পরিবারের লোকেরা। সদস্যের বাড়িও ভাঙচুর করে এলাকার বাসিন্দারা। যদিও তদন্তে তাঁর মদত দেওয়ার কোনও প্রমাণ পায়নি পুলিশ। যদিও এই ঘটনার কয়েক মাস পর সৌরভের বাবাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তুষারবাবুর বিরুদ্ধে। সেই তুষারবাবুর বউদি এবার মিতাদেবীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাই সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই দুই পরিবার।


এলাকায় বেআইনি মদের কারবারের প্রতিবাদ করতে গিয়েই অকালে প্রাণ হারান বিরাটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরভ। ২০১৪ সালের ৫  জুলাই বামুনগাছির দত্তপুকুর এলাকায় বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সৌরভকে খুন করে শ্যামল ও তাঁর দলবল। টুকরো টুকরো করে রেললাইনের ধারে ফেলে রাখা হয়েছিল তাঁর দেহ। ছাত্রের মৃত্যুতে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। দোষীদের গ্রেপ্তারের ৪১ দিনের মাথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। প্রায় দু’বছর পর ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল মামলার রায় ঘোষণা হয়। ১৩ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১২ জনকেই দোষী সাব্যস্ত  করেছিলেন বারাসত জেলা আদালতের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক দামন প্রসাদ বিশ্বাস। বেকসুর খালাস পেয়েছিল রাজসাক্ষী অনুপ তালুকদার। সাজাপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে ৯ জনকে খুন, অপহরণ ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে অভিযুক্তরা। সেই মামলারই রায়ে ৮ অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা মকুব হয়। তবে মূল অভিযুক্ত শ্যামল কর্মকারকে ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Source: Sanbad Pratidin