সব অপেক্ষার অবসান। ধূমধাম করে অযোধ্যায় হয়ে গেল রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে সামনে থেকে উপস্থিত থাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর হাতে দিয়েই হয়ে শিলান্যাস। অনুষ্ঠানের সময় নিজের বক্তৃতায় স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে রাম মন্দির আন্দোলনের তুলনা করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বুধবার তিনি বিশ্বজুড়ে রামের প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টিও তুলে ধরেন। ভারত তথা বিশ্ব, এমনকী মুসলিম প্রধান দেশেও রামায়ণের অস্তিত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি। আর সেখানেই যেন সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিল বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ।
বুধবার অযোধ্যায় যখন ধূমধামের সঙ্গে চলছে ভূমিপুজো, তখন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের নতুনপল্লিতে হিন্দু মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই একযোগে রামের পুজো করলেন। তাঁদের কথায়, রাম কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতিভূ নন। রাজা হিসেবে রামচন্দ্রের প্রধান ধর্ম হল দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। নতুনপল্লির স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব আহমেদ খানের নেতৃত্বে আয়োজিত হয়েছিল ওই পুজো। অবশ্য রাজীব আহমেদ খান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিজেপি সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি। ফলে এর সঙ্গে বিজেপির নাম জুড়ে গেলেও হিন্দু-মুসলিম একযোগে রাম পুজো করছে, বিষয়টির প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষও।
শুধু রাজীব আহমেদ খানই নন, বিজেপি কর্মী মোহম্মদ বাবলু মোল্লা ও রহিম মণ্ডলদের পাশাপাশি বহু হিন্দু ধর্মাবলম্বীও এই পুজোয় যোগদান করেছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার এ এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিন নিজের ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'রাম ঐক্যের প্রতীক। যেভাবে ভগবান রামের জন্যে জয় পেতে সকলে একসঙ্গে এত বছর ধরে চেষ্টা করেছেন, যেভাবে সকলে স্বাধীনতার লড়াইয়ে গান্ধীজির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই আজ দেশবাসীর প্রচেষ্টায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হল।'
অপরদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরাসরি রাম মন্দির প্রসঙ্গে কিছু না বললেও ট্যুইটে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে লেখেন, 'হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান -একে অপরের ভাই-ভাই! আমার ভারত মহান, মহান আমার হিন্দুস্তান! আমাদের দেশ তার চিরায়ত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে, এবং আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবে এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষিত রাখব।' রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর আবহে সেই সম্প্রীতির ছবিটাই যেন ফুটে উঠল। হয়ত তা একটি জায়গাতেই, কিন্তু সেটারও প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য।
Source: Ei Samay