Sunday, January 12, 2020

বারাসতের স্টেশনের দেওয়াল বাঁচাতে ছবিতে সাজ

স্টেশনের দেওয়ালগুলি মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার করে রং করা হত। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই ফের নোংরা হত গুটখা আর পানের পিকে। বিজ্ঞাপনের পোস্টারে বিসদৃশ হয়ে থাকত দেওয়ালও। এ বার সে সবই পরিষ্কার করে ছবি আঁকা হচ্ছে স্টেশনের দেওয়ালে। ভরে উঠছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে নেতাজি, মাদার টেরিজা, ট্রাম, পুরনো কলকাতার চালচিত্রে। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বারাসত জংশনে রেলের দেওয়ালে ছবি আঁকার পর্ব প্রায় শেষের পথে।


দেওয়াল সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি বাংলা তথা দেশের পুরনো ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্যও এই প্রয়াস, দাবি পূর্ব রেলের। এমনই একটি দেওয়ালে ছবি আঁকছিলেন রাজারহাটের জামালপাড়ার বাসিন্দা দেবাশিস চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘ছবিগুলি দেখে নতুন প্রজন্মও এ শহর, এ দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে আগ্রহী হবে। তাই সে সব নিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’’ অন্য এক শিল্পী সুশান্ত সরকার বলেন, ‘‘মূর্তি ভাঙা বা সৃষ্টিশীল জিনিসকে ধ্বংস করার প্রতিযোগিতা চলছে চারদিকে। সেই পরিস্থিতিতে দেওয়ালে ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার এমন কাজ পরিবেশ এবং সাধারণ মানুষ সকলের পক্ষেই সুন্দর বার্তা দেবে।’’


রেলের এই ভাবনার প্রশংসা করেছেন নিত্যযাত্রী থেকে বারাসতের বাসিন্দাদের বড় অংশ। বারাসত কলেজের পড়ুয়া রাজা দাসের দাবি, ‘‘ফাঁকা দেওয়াল দেখলেই গুটখা কিংবা পানের পিক ফেলে নোংরা করেন মানুষ। ছবি আঁকা দেওয়াল দেখে নিশ্চয়ই সেই প্রবণতা কমবে।’’ 


পূর্ব রেল সূত্রের খবর, সচেতন ভাবেই ছবিগুলির মধ্যে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন মনীষী, প্রকৃতি, বাউল এবং সাঁওতাল লোকনৃত্য, পুরনো কলকাতা, শহরের দর্শনীয় স্থান। নজর দেওয়া হয়েছে, স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের উপরেও। ছবি এঁকে এ ভাবে স্টেশনের দেওয়াল সাজিয়ে তুলতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল।


পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি রেলযাত্রীরা যেন চোখের আরাম পান, সেই ভাবনা থেকে এই উদ্যোগ। পরীক্ষামূলক ভাবে এটা বারাসতে করা হল। ধীরে ধীরে অন্য স্টেশনগুলিতেও এমন কিছু করার ভাবনা রয়েছে।’’

Source: Ananda Bazar

No comments:

Post a Comment