Showing posts with label Barasat District Hospital. Show all posts
Showing posts with label Barasat District Hospital. Show all posts

Friday, September 15, 2023

Barasat Medical College: ক্যানসার বিশেষজ্ঞ থেকে অর্থোপেডিক, যোগ আরও ৫০ চিকিৎসকের! ২৬টি বিভাগ চালু বারাসত মেডিক্যালে

 জেলা হাসপাতাল থেকে মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে বারাসত হাসপাতাল। যার ফলে ব্যাপক স্বস্তিতে দত্তপুকুর, অশোকনগর বনগাঁর প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা। আগে গুরুতর কিছু হলেই গাঁটের কড়ি খরচা সঙ্গী অজস্র হয়রানি। হয় বেসরকারি হাসপাতাল নইলে পরিষেবা পেতে হলে শহরতলি থেকে এতদিন ছুটে আসতে হত কলকাতার আর জি কর, নীলরতন সরকার অথবা পিজি-তে।


কী পরিবর্তন?

কয়েক বছরে আমূল পরিবর্তন। আগে হাসপাতালে ঢুকলেই নাকে কাপড় দিতে হত দুর্গন্ধে। আজ সেখানে ঝাঁ চকচকে গগন চুম্বী নতুন বিল্ডিংয়ে অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা। জেলা হাসপাতাল থেকে মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হওয়ার পর উত্তর ২৪ পরগনার মানুষের ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ। ফলে বেড়েছে রোগীর চাপ, দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই আসছেন চিকিৎসা পরিষেবা নিতে। শুধু এই জেলাই নয় অন্যান্য জেলার রোগীরাও চিকিৎসার সুবিধা নিতে আসছে। হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডলের দাবি, ধীরে ধীরে কলকাতার হাসপাতালের সঙ্গে টেক্কা দিতে তৈরি বারাসত হাসপাতাল।



বারাসত হাসপাতালে মিলবে কোন কোন পরিষেবা?

মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হওয়ার পর আরও উন্নত হয়েছে বারাসত হাসপাতালের পরিষেবা। সুপার সুব্রত মণ্ডল জানান, আর পাঁচটা বিখ্যাত মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে এই হাসপাতালের পরিষেবায় কোনও পার্থক্য নেই। কয়েকটি সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত বিভাগের সুবিধা রয়েছে এই হাসপাতালে। প্রতিদিনই চলে আউটডোর। সপ্তাহে ৬ দিন আউটডোরে মেলে সমস্ত ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা। ২৪X৭ খোলা এমারজেন্সি । শনি রবিবারেও সপ্তাহের বাকি দিনের মতোই উপস্থিত থাকেন চিকিৎসকেরা বলে দাবি হাসপাতাল সুপারের।


এই হাসপাতালে রয়েছে মেডিসিন বিভাগের অন্তর্গত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, রেসপিরেটরি, এন্ড্রোকনোলজি, ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, অ্যাজমা ও চেস্ট স্পেশালিস্ট, থাইরয়েড, হরমোন ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ, লিভার বিশেষজ্ঞ ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।


এছাড়া অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে সার্জারি বিভাগের মধ্যে রয়েছে জেনারেল সার্জারি বিশেষজ্ঞ, হাড় জোড়া ও বাত ব্যথা বিশেষজ্ঞ, নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, নিউরো সার্জেন ও যৌনাঙ্গ বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, বার্ণ।


এছাড়া এই হাসপাতালে রয়েছেন প্রথম সারির প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। মনোরোগের চিকিৎসার জন্যেও রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আছে মুখ ও দন্ত বিভাগ, রেডিওলজিস্ট, রিউমাটোলজিস্ট ও হেমাটোলজিস্ট বা রক্ত রোগ বিভাগ ইত্যাদি। HIV রোগীদের জন্য ART সেন্টার, হোমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া বিভাগও রয়েছে বারাসত মেডিক্যাল কলেজে।



নতুন কী-

বর্তমানে এই হাসপাতালে বেড়েছে বেডের সংখ্যাও। বর্তমানে ৬০০ বেড,যা আগামীতে আরও বাড়তে চলেছে। মেডিকেল কলেজের নতুন বিল্ডিং গুলিতেও বিভিন্ন চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হয়েছে, আগামী দিনেও আরও অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে এই বারাসত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেই বলে মত হাসপাতাল সুপারের। শুধু তাই নয় করোনাকালীন পরিস্থিতিতে যেভাবে হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে তারপর পরবর্তীতে নানা ছোটখাটো সমস্যার কথা মাথায় রেখেই তা সমাধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। পর্যাপ্ত ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক ২৪ ঘণ্টা মানুষের পরিষেবা দিতে ব্যস্ত।


ইতিমধ্যেই ভেন্টিলেশনের বিশেষ সুবিধার জন্য নানা সরঞ্জাম প্রদান করা হয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে। হাসপাতাল চত্বরেই বসানো হয়েছে অক্সিজেনের প্ল্যান্ট আর তার মাধ্যমেই সারা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের বেডে বেডে পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন। ফলে অক্সিজেনের ঘাটতির কোনও সম্ভাবনাই নেই বলেও জানানো হয় হাসপাতালের তরফ থেকে। রোগী চাপ সামাল দেওয়ার জন্য নতুন করে ৫২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বারাসত মেডিক্যাল কলেজে যোগ দিয়েছেন।


হাসপাতাল সুপার বলেন, একসময় একটু সিরিয়াস রোগী এলেই তাকে দ্রুত স্থানান্তরিত করে দেওয়া হত কলকাতায়। আজ রেফারের হার প্রায় শূন্য। যারা নিজেরা অন্যত্র তাদের রোগীকে নিয়ে যেতে চায় তাদেরকে বাদ দিলে বারাসত হাসপাতাল এখন আর কোন রোগীকে রেফার করে না।

জেলায় ভয় ধরিয়েছে ডেঙ্গি পরিস্থিতি। তাই ডেঙ্গু মোকাবিলায় যথেষ্টই প্রস্তুত রয়েছে বারাসত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। রক্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় চিকিৎসাই মিলছে এই হাসপাতালে।


বিশেষ পরিষেবা

চিকিৎসা পরিষেবা সহ রোগীদের সুবিধার দিকটি মাথায় রেখে একদিকে যেমন মিউজিক থেরাপি ও টিভি স্ক্রিনেরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে । সন্তান জন্মের পর সদ্য মায়েদের অবসাদের প্রবণতা কাটাতে ও সদ্যজাতকে ভালো করে যত্ন করার বিভিন্ন টিপস দেওয়া হয়। কেবিনে স্ক্রিনে চলে এমনই শিক্ষামূলক ও মন ভালো করা ভিডিয়ো। দীর্ঘ সময়ে আউটডোরে এসে রোগীর বা রোগীর আত্মীয়দের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, সেক্ষেত্রে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেও একঘেয়েমি না আসে।


ইতিমধ্যেই এই হাসপাতালে বেশ কিছু বিরল চিকিৎসা নজির তৈরি হয়েছে বলেও জানান বিশিষ্ট এই চিকিৎসক। হাসপাতালে পরিষেবা ভালো হওয়ার কারণে শুধু উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নয় পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও মানুষজন এখন এই বারাসত জেলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসছেন চিকিৎসা পরিষেবা নিতে। আরও বেশ কিছু চিন্তা-ভাবনা পরিকল্পনা রয়েছে যা আগামী দিনে খুব দ্রুত বাস্তবায়ন ঘটবে বলেও আশাবাদী হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা সুপার সুব্রত মণ্ডল।


Source: Ei Samay