Showing posts with label barasat councilor died at road accident. Show all posts
Showing posts with label barasat councilor died at road accident. Show all posts

Monday, February 17, 2020

নিমন্ত্রণ সেরে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বারাসতের কাউন্সিলরের

 খুদে ভাইপোর অন্নপ্রাশন। ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তাই বাঁকুড়ায় নেমন্তন্ন করতে গিয়েছিলেন বারাসতের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য (৪৫)। ফেরার পথে চণ্ডীতলা থানার আরামবাগ-চাঁপাডাঙা-চণ্ডীতলা রোডের শিয়াখালায় একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারে গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান প্রদ্যোৎ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে প্রাণ হারান ভাই প্রণব ভট্টাচার্যও (৪০)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি গাড়ির চালক।


রবিবার রাত তখন আটটা। শিয়াখালা দেশমুখায় দাঁড়িয়েছিল একটি ট্রাক। আচমকাই সজোরে ট্রাকের পিছনে এসে ধাক্কা মারে বোলেরো গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অসম্ভব গতিতে যাচ্ছিল গাড়িটি। ধাক্কা মেরে ট্রাকের পিছনেই খানিকটা চিঁড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে ঢুকে যায় বোলেরোর সামনের অংশ। দ্রুত ছুটে আসেন স্থানীয়রা।


দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ির ভিতর থেকে তখন রক্তের ধারা গড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়। সামনের সিটে বসে থাকা প্রদ্যোৎ ঘটনাস্থলেই মারা যান। যদিও স্থানীয়রা প্রথমে তা বুঝতে পারেননি। প্রদ্যোতের পাশাপাশি গুরুতর জখম গাড়ির চালক দেবশঙ্কর ও পিছনের সিটে বসে থাকা প্রদ্যোতের ভাই প্রণবকে বের করে আনা হয়। তখন প্রণব বার বার বলতে থাকেন, ‘আমার দাদা বেঁচে আছে তো? দাদা বারাসতের কাউন্সিলর।’ এ কথা শুনে স্থানীয়রা চণ্ডীতলার তৃণমূল নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়কে ফোন করেন। সুবীর এসেই দলীয় নেতা-কর্মীদের খবর দেন। তিন জনকে নিয়ে আইয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ছোটেন স্থানীয়রা। প্রদ্যোতকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকায় প্রণবকে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই প্রণবের মৃত্যু হয়। চালক দেবশঙ্করের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। রাতেই তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।


জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় ফোন করেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারকে। সুবীর বলেন, ‘কাকলি ঘোষদস্তিদারকে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দিই। উনি আমাকে প্রদ্যোতের ছবি পাঠাতে বলেন। আমি হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠাতেই উনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।’ রাতে হাসপাতালে চলে আসেন হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব। গাড়িটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।


মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বারাসতের নয়নকাননে প্রদ্যোতের বাড়িতে। ক’দিন বাদেই পরিবারে আনন্দানুষ্ঠান। তার আগে যেন বজ্রাঘাত নেমে এল। স্বামীর মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্রদ্যোতের স্ত্রী মৌমিতা। বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর একমাত্র মেয়ে।


প্রদ্যোতের মৃত্যুর খবর পেয়েই নয়নকাননের বাড়িতে চলে আসেন বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়, ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্য কাউন্সিলর। সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রদ্যোৎ ছিল আমার ছোট ভাইয়ের মতো। নিজগুণে এবং দক্ষতার সঙ্গে পুরসভার শিক্ষাদপ্তর সামলাত।’ কথা বলতে বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।


Source: Ei Samay