২৪তম যাত্রা উৎসবের উদ্বোধনে এসে শিল্পীদের জন্য খুশির খবর শুনিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার দুঃস্থ যাত্রা শিল্পীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেই ভাতা এক লাফে দশ হাজার টাকা বাড়ানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় সাধুবাদ জানিয়েছেন যাত্রাশিল্পীরা।
প্রতি বছর বারাসতের কাছারি ময়দানেই হয়ে থাকে যাত্রা উৎসব। এ বছর যে উৎসব ২৪ বছরে পা দিল। বৃহস্পতিবার ছিল উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা। প্রদীপ জ্বালিয়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে উৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
যাত্রা গ্রাম বাংলার কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শুধু প্রতি বছর যাত্রা উৎসব করাই নয়, এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং অন্যান্য কলাকুশলীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে চলেছে বর্তমান সরকার। দুঃস্থ যাত্রাশিল্পীদের জন্য বার্ষিক ভাতার ব্যবস্থাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্তমানে রাজ্য সরকারের ৬৪৪ জন দুঃস্থ যাত্রাশিল্পীকে বার্ষিক ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেয়। বারাসতের কাছারি ময়দানের যাত্রা উৎসবের মঞ্চ থেকে এ দিন মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই ভাতা বৃদ্ধির ঘোষনা করলেন। জানালেন, ভাতার টাকা ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার করা হল। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মধ্যে যাত্রাশিল্পীদেরও যুক্ত করা হল বলে এ দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই হাততালিতে ফেটে পড়েন যাত্রাশিল্পীরা। কলকাতা যাত্রা কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক হারাধন রায় বলেন, 'দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুঃস্থ যাত্রাশিল্পীদের ভাতা ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে আমরা ভীষণ খুশি। একই সঙ্গে উনি যাত্রাশিল্পীদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত করার কথাও এ দিন ঘোষণা করেছেন। এমন মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ওঁকে ধন্যবাদ। কাছারি ময়দানে উপস্থিত যাত্রাশিল্পী দেবযানী চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'যাত্রার সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা যা রোজগার করেন, তাতে সঞ্চয় বিশেষ হয় না। ফলে এই সমস্ত শিল্পীদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা একজন যাত্রাশিল্পী হিসেবে আমার কাছে অত্যন্ত সুসংবাদ।'
এ দিন যাত্রা উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী যাত্রাসম্রাট শান্তিগোপাল এবং তপনকুমার পুরস্কার যাত্রাশিল্পীদের হাতে তুলে দেনন। বামি ভট্টাচার্য, সঞ্জয় ভট্টাচার্য, মহুয়া ভট্টাচার্য, শুভ মুখোপাধ্যায়, সমীর সেনদের মতো যাত্রা ব্যক্তিত্বদের পুরস্কৃত করা হয়।
এ দিন যাত্রা উৎসবের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ৫১টি প্রকল্পের সূচনা করেছেন। যে প্রকল্পগুলির জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে ৩১১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে দেগঙ্গা-হাড়োয়া পানীয় জল প্রকল্প যেমন আছে, তেমনই আছে জেলার ব্লকে রাস্তা এবং নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন। এ ছাড়াও এ দিন মঞ্চ থেকে আড়াইশো কোটি টাকার নতুন প্রকল্প চালু করেন তিনি। এ দিনের মঞ্চ থেকেই সবুজশ্রী প্রকল্পে শিশু এবং মায়েদের হাতে চারা গাছ তুলে দিয়েছেন মমতা।
Source: Ei Samay