Showing posts with label free shopping mall for poor at barasat. Show all posts
Showing posts with label free shopping mall for poor at barasat. Show all posts

Monday, September 2, 2019

বিনি পয়সার শপিং মল বারাসতে

বিনে পয়সার 'শপিং মল' একেবারেই মলের কনসেপ্ট। কিন্তু ঝাঁ চকচকের ব্যাপারটি নেই। আছে আন্তরিকতা। আর বিনে পয়সায় পাইয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত। মজা করে উদ্যোক্তারা বলছেন ফ্রি 'শপিং মল'! কি নেই তাতে। জামা, প্যান্ট, শাড়ি, চুড়িদার, ঘাগরা, জুতো সব। বাদ যায়নি মশারি, বালিশ, খেলনা থেকে ব্যাগও। মাপ মতো তুলে নিলেই হল। পয়সাকড়ির কোনও বালাই নেই। 


বারাসতের একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গত ন'মাস ধরে এলাকার দুঃস্থদের জন্য অভিনব এই উদ্যোগ নিয়েছে।


প্রতি মাসের শেষ রবিবার সকাল দশটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত 'শপিং মল' খোলা থাকে। স্থান সংস্থার অফিস ঘর। বারাসতের ১১ নম্বর রেলগেটের কাছে সংস্থার অফিস। ঘরটি মেরেকেটে সাতশো স্কোয়ার ফিটের। তাতেই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর স্বপ্ন যেন সত্যি হয়ে উঠছে। একটা অংশের মেঝেয় আলাদা আলাদা ভাবে রাখা আছে মহিলা, শিশু ও পুরুষদের পোশাক। এখানকার সবকিছুই সেকেন্ড হ্যান্ড।


প্রতি মাসের শেষ রবিবারে ভিড় উপচে পড়ে এখানে। আসেন মূলত অন্যের বাড়িতে কাজ করা, দিনমজুর অথবা রেল ধারের বস্তি থেকে আসা লোকজন। অভাব, অনটনের সংসারে এই শেষ রবিবার তাঁদের কাছে বাড়তি অক্সিজেন। শুধু নিজেদের জন্য নয়, পরিবারের বাকিদের জন্যও পছন্দের জামা-প্যান্ট-শাড়ি নির্দ্বিধায় নিয়ে যাচ্ছেন গোপাল, মানসী কাবেরীরা। বিনে পয়সায় পছন্দ মতো জামাকাপড় নেওয়ার পাশাপাশি উপরি পাওনা নিখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা।


স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা ওদের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টার কোনও কসুর রাখেন না। ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ায় চেনা পরিচিত, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন সকলে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরনো জামাকাপড়, খেলনা সংগ্রহ করেন। সংস্থার এক সদস্য রজত বিশ্বাস বলেন, 'অনেকেই বাড়তি পোশাক, খেলনা বা অন্যান্য জিনিস ফেলে দেন। কাউকে দেওয়ার মতো লোক পান না। আমাদের ফোন করলেই আমরা মোবাইল ভ্যান পাঠিয়ে সেসব নিয়ে আসি। এরপর প্রতি মাসের শেষ রবিবার সেগুলি বাছাই করে গরিব মানুষগুলোর জন্য রেখে দিই। ওদের হাসিমুখটাই আমাদের প্রেরণা জোগায়।'


হাবরার দাসপাড়ার বাসিন্দা অনিমা দাস এখানে বেশ কয়েকবার এসেছেন। তিনি বারাসতে পাঁচ বাড়িতে কাজ করেন। অনিমা বললেন, 'স্বামী নেই। ছেলেরা ছোট। অভাবের সংসারে নতুন জামাকাপড় সব সময় কিনে দিতে পারি না। এই দোকান আমাদের কাছে ভগবান।' ভাসিলা থেকে আসা মায়া দাস বললেন, 'পোশাকগুলি পুরনো হলেও ভালো। পড়ার মতো। জানার পর থেকেই কয়েক মাস ধরে এখানে আসি। আমাদের মতো গরিব মানুষের কথা কে ভাবে আজকাল? এঁরা ভেবেছেন। এটাই আমাদের পাওনা।'


শুধু বারাসত নয়, বসিরহাটের ভাসিলা, মালতিপুর কিংবা মছলন্দপুর, হাবরা থেকেও অনেকে আসেন। 'ক্রেতা'দের ভিড়ে ভিখিরিদেরও দেখা মেলে।

Source: Ei Samay