৭০ শয্যার কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড, দশ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে তৈরি বারাসত সদর হাসপাতাল। দমদম বিমানবন্দরে কোনও যাত্রীকে দেখে চিকিৎসকদের যদি সন্দেহ হয়, এরপর তাঁকে সটান পাঠিয়ে দেওয়া হবে এই বারাসত হাসপাতালে। হাসপাতালের কোয়ারানটাইন ওয়ার্ডে রেখে চলবে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণ। কারও শরীরে যদি দেখা যায় বাসা বেধেছে করোনাভাইরাস, তবে আইসোলেশন সেন্টারে রেখে চলবে চিকিৎসা।
সরকারের নির্দেশ পেতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই কোয়রানটাইন ওয়ার্ড ও আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করেছেন বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, 'রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখানে কেউ ভর্তি হয়নি। তবে আমরা প্রস্তুত।'
বারাসত হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের ঠিক উল্টো দিকেই হয়েছে কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড। শুক্রবার বিকেলেই জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ওয়ার্ডটি ঘুরে দেখেন। ওয়ার্ডে একসঙ্গে ৭০ জনকে পর্যবেক্ষণে করা যাবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদম বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা যদি মনে করেন কাউকে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার, সেক্ষেত্রে বারাসত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য আলাদা বাসও থাকবে। ১৪ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ চলবে। কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে, সেই রোগীকে নিয়ে আসা হবে আইসোলেশন সেন্টারে।
আইসোলেশন সেন্টারটি দশ শয্যার। পাঁচটি পুরুষ, বাকি পাঁচটি মহিলাদের জন্য। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা ঘর থাকছে। আইসোলেশন সেন্টারে দু'টি ভেন্টিলেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারও শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে কলকাতার আইডি হাসপাতালে পাঠানো হবে।
করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে কুড়ি জনের একটি চিকিৎসকদের দল গড়া হয়েছে। চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক, গ্লাভস, গাউন, ক্যাপ, অ্যাপ্রন, শু-কভার আনা হয়েছে।
শুধু বারাসত নয়, বনগাঁ হাসপাতালেও তোড়জোর শুরু হয়েছে। বনগাঁ হাসপাতালে সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো জানিয়েছেন, হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসকদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হাসপাতালে চারটি বেডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। দু'টি বেড পুরুষদের, বাকি দু'টি বেড মহিলাদের। ভেন্টিলেশনের আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে প্রয়োজন হলে হাসপাতালে থাকা ভেন্টিলেশনের সাপোর্ট নেওয়া হবে।
হাবরা হাসপাতালে অবশ্য এই ধরনের কোনও আইসোলেশন সেন্টার করা হয়নি। হাবরা হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, 'আউটডোর করেন এমন ১১ জন চিকিৎসককে এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।'
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তপন সাহা বলেন, 'জেলায় বারাসত হাসপাতাল, ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল, বনগাঁ এবং বিধাননগর হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।'
Source: Ei Samay