Monday, September 30, 2019

নাটকীয় জায়গায় দাঁড়িয়ে লিগের খেতাব ভাগ্য

 শেষ বাধা পেরিয়েও আপাতত অনন্য ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা হচ্ছে না পিয়ারলেসের। কলকাতা লিগের ভাগ্য ২ অক্টোবর পর্যন্ত ঝুলে থাকায়।

রবিবার বারাসতে পিয়ারলেস ২-০ হারাল জর্জ টেলিগ্রাফকে। ইস্টবেঙ্গল মাঠে বানের জল ঢুকে যাওয়ায় বাতিল হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল-কাস্টমস ম্যাচ। সেই ম্যাচ হবে কল্যাণীতে ২ অক্টোবর। লিগ জিততে হলে ৭ গোল দিতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। যা খুব কঠিন। পিয়ারলেস তাই এ দিন মাঠে জয়োৎসব করে ফেলল।

পিয়ারলেসের পয়েন্ট ২৩, গোলের গড় ১৩। ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ২০, গোলের গড় ৭। পিকে-নিখিল নন্দীর ইস্টার্ন রেল ১৯৫৮ সালে লিগ জেতার পর, গত ৬১ বছরে কোনও ছোট ক্লাব লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়নি।

এ যেন শেষ হয়েও হইল না শেষ!

জর্জ টেলিগ্রাফকে শেষ ম্যাচে আনসুমানা ক্রোমার জোড়া গোলে ২-০ হারিয়েও লিগ জেতা সম্পূর্ণ হল না পিয়ারলেসের। রবিবার বিকেলে বারাসত স্টেডিয়ামে জর্জকে হারিয়ে ড্রাম বাজিয়ে যখন উৎসবে মেতেছেন ক্রোমা-অ্যান্টনি উলফ-দীপেন্দু দোয়ারিরা, আবেগহীন ভাবে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন তাঁদের কোচ জহর দাস। 


গোটা স্টেডিয়াম ততক্ষণে জেনে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল মাঠে জোয়ারের জল ঢুকে ভেস্তে গিয়েছে এ দিনের ইস্টবেঙ্গল বনাম কাস্টমস ম্যাচ। ফলে ১১ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে পিয়ারলেস শীর্ষে থেকে লিগ শেষ করলেও এখনও সরকারি ভাবে লিগ জয় হয়নি ক্রোমাদের। কারণ ইস্টবেঙ্গল তাদের শেষ ম্যাচে সাত গোলের ব্যবধানে জিতলে কলকাতা লিগ ঢুকবে লাল-হলুদ শিবিরে। কারণ, এ দিনের ম্যাচের পরে পিয়ারলেসের গোল পার্থক্য ১৩। ইস্টবেঙ্গলের ৭। ইস্টবেঙ্গল সাত গোলের ব্যবধানে জিততে না পারলে, দীর্ঘ ৬১ বছর পরে তিন প্রধানের বাইরে কলকাতা লিগ জিতে ইতিহাস তৈরি করবে পিয়ারলেস। ১৯৫৮ সালে ইস্টার্ন রেলের পরে কলকাতা ময়দানে যে কৃতিত্ব নেই কোনও দলের। 


লিগ শীর্ষে থাকা পিয়ারলেস কোচ তাই বলেন, ‘‘উৎসব তোলা থাকছে। কাগজে-কলমে তো এখনও লিগ চ্যাম্পিয়ন হইনি।’’ যোগ করেন, ‘‘ফুটবল মাঠে তো অনেক কিছুই হয়। ইস্টবেঙ্গল সাত গোলের ব্যবধানে জিততেও তো পারে!’’ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের দল কি তা হলে সাত গোল করতে পারে না? এ বার আত্মবিশ্বাসী জহর বলেন, ‘‘এ বারের লিগের কোনও দলকেই ইস্টবেঙ্গল সাত গোল দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। যদি তাই হত, তা হলে গোলপার্থক্যে আমাদের মতো তথাকথিত ছোট দলের এত পিছনে থাকত না। আর শেষ ম্যাচে ‘জাদু’ দেখিয়ে সাত গোলের ব্যবধানে জিতে লিগ পেলে সেটা শতবর্ষে ওই ক্লাবের কলঙ্ক হয়ে থাকবে।’’


ইস্টবেঙ্গল মাঠ যদি এ দিন জোয়ারের জলে ভেসে গিয়ে থাকে, তা হলে এ বারের কলকাতা লিগ ভেসে গিয়েছে পিয়ারলেসের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের তরঙ্গে। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল দুই ক্লাবকেই তাদের মাঠে গিয়ে হারিয়ে আসা। অরূপ দেবনাথ, অভিনব বাগ, জিতেন মুর্মু, মনতোষ চাকলাদারের মতো এক ঝাঁক বাঙালি ছেলের চোখ ধাঁধানো ফুটবল প্রদর্শন। আর আনসুমানা ক্রোমার ১৩ গোল করে গোলদাতাদের শীর্ষে থাকা। শুধু পিয়ারলেসই নয়, তথাকথিত ছোট দলের পারফরম্যান্সের জোয়ারেই যে এ বার ভেসে গিয়েছে বড় দলগুলো। 


খেলা শেষে বড় ড্রাম বাজাতে শুরু করে দিয়েছিলেন পিয়ারলেসের ক্যারিবিয়ান স্ট্রাইকার অ্যান্টনি। আর তার তালে নাচছিল গোটা দল। এক সময়ে কেউ একজন এসে ক্রোমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে গেলেন নীল কালিতে বাংলায় লেখা একটি সাদা কাগজ। যেখানে লেখা, ‘‘জর্জ টেলিগ্রাফকে ২-০ হারিয়ে কলকাতা ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়ন পিয়ারলেস।’’ শেষ মুহূর্তে কোচের গলায় গাঁদা ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে কাঁধে নিয়েও শুরু হল নাচ।


দলের ম্যানেজার অশোক দত্ত এ দিন সকাল থেকেই ছিলেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। সেখান থেকেই পুজো দেওয়ার ফাঁকে তিনি ক্রমাগত নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এ বারের পিয়ারলেসের দল গঠনের কারিগর ও এ দিনের ম্যানেজার সোনাই চন্দকে। তিনি আবার সকালবেলা কালীঘাটে পুজো দিয়ে এসেছিলেন বারাসতে। অশোকবাবু পুরীতেই বেলা এগারোটা নাগাদ খবর পান ইস্টবেঙ্গল মাঠ জলে ভাসছে। ফোনে আইএফএ কর্তাদের বলেন, ইস্টবেঙ্গল এ দিন না খেললে তাঁরাও খেলবেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর এই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি।


বারাসত স্টেডিয়ামে এ দিন হাজির ছিলেন দুই প্রধানের সমর্থকেরাই। ক্রোমারা বল ধরলে চিৎকার করছিলেন মাঠে হাজির মোহনবাগান সমর্থকেরা। আর জর্জ টেলিগ্রাফ বল ধরলে খেলা দেখতে আসা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা। এর মধ্যেই ৩৬ মিনিটে অনিল কিস্কুর বাড়ানো বল ধরে ডান পায়ের জোরালো শটে ১-০ করেন ক্রোমা। দ্বিতীয়ার্ধে ফের ডান দিক থেকে সেই অনিলের সেন্টার থেকে পাওয়া বলে চকিতে ঘুরে জোরালো ভলিতে দ্বিতীয় গোল পিয়ারলেস অধিনায়কের। যা দেখে প্রেস বক্সে বসেই আনন্দে  কেঁদে ফেলেন ক্রোমা-পত্নী সাদিয়া।


শেষ পর্যন্ত লিগ কার সে ঘোষণা না হলেও, খেলা শেষে পিয়ারলেস ড্রেসিংরুমে এল এমডি পি পি রায়ের বার্তা। ক্রোমাদের বোনাস ঘোষণা করার সঙ্গেই তিনি বলছেন, ‘‘আই লিগ খেলার জন্য চিন্তাভাবনা চলছে। স্বপ্ন সফল হবে, যে দিন আমরা প্রথম একাদশের এগারোটি বাঙালি ছেলেকে নিয়ে কোনও খেতাব জিতব।’’

আটান্নর ইতিহাস তাড়া করার পথে এই স্বপ্নও দেখছে পিয়ারলেস।    

পিয়ারলেস: অরূপ দেবনাথ, অভিনব বাগ, মনতোষ চাকলাদার, ভার্নি কালন কিয়াতাম্বা, ফুলচাঁদ হেমব্রম, দীপেন্দু দুয়ারি (লক্ষ্মীকান্ত মাণ্ডি), অনিল কিস্কু, এডমন্ড পেপরা, পঙ্কজ মৌলা, জিতেন মুর্মু (নরহরি শ্রেষ্ঠ/ দীপঙ্কর দাস), আনসুমানা ক্রোমা।


জর্জ টেলিগ্রাফ: ভাস্কর রাউথ, নবি হোসেন খান, মুসলিম মোল্লা, চিন্তা চন্দ্রশেখর রাও, মোহন সরকার, ডেনসন দেবদাস, মুহম্মদ মিকদাদ কেপি (রাজীব শ), খোকন মণ্ডল, জাস্টিস মরগ্যান, সানোহ লউসেনি পাটো, জোয়েল সানডে। 


Source: Ananda Bazar

Sunday, September 15, 2019

বারাসতের ১২ নম্বর রেলগেটের আন্ডারপাস

মাসদুয়েক আগে বারাসতের ১২ নম্বর রেলগেটের কাছে বহু প্রতিক্ষিত আন্ডারপাসটির সূচনা করে রেল। কিন্তু গোড়া থেকেই এই আন্ডারপাস নিয়ে হাজারো সমস্যার মুখে পড়েন যাত্রীরা। বৃষ্টি নামতেই আন্ডারপাসের দেওয়াল, সিলিং চুঁইয়ে জল পড়তে শুরু করে। ফলে জলে-কাদায় আন্ডারপাসটি কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে ওঠে। পশ্চিম দিকের অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি না করে আন্ডারপাস খুলে দেওয়া হয়েছিল। মেঠো পথে জল-কাদা মাড়িয়ে তাই সকলে আন্ডারপাসে ঢুকছিলেনয়। দ্রুত অবশ্য অ্যাপ্রোচ রোডের কাছ শেষ করা হয়। কিন্তু আন্ডারপাস নিয়ে আমজনতার ক্ষোভে তাতে প্রলেপ পড়েনি। যাত্রীদের ক্ষোভের কথা রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কানে যায়। তাই পুজোর আগে শনিবার আন্ডারপাস পরিদর্শনে আসেন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএম প্রভাস দানসেনা। কারিগরি ত্রুটির কথা মেনে নিয়ে ডিআরএম বলেন, 'রেলের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি হবে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।'


শনিবার সকাল সাড়ে ন'টা নাগাদ বারাসত স্টেশনে চলে আসেন প্রভাস দানসেনা। তিনি প্রথমেই ১২ নম্বর রেলগেটের কাছে নবনির্মিত ভূগর্ভস্থ পথ পরিদর্শন করেন। এরপর বারাসত স্টেশনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আরপিএফ অফিস, জিআরপি অফিস ঘুরে দেখেন। স্টেশনে বিভিন্ন পরিষেবার কাজ খতিয়ে দেখেন ডিআরএম।


বারাসত স্টেশনে একটি ফুট ওভারব্রিজ তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজের অগ্রগতিও তিনি এ দিন সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। যাত্রী পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে বারাসত স্টেশনে রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিআরএম।

Source: Ei Samay

Monday, September 2, 2019

বিনি পয়সার শপিং মল বারাসতে

বিনে পয়সার 'শপিং মল' একেবারেই মলের কনসেপ্ট। কিন্তু ঝাঁ চকচকের ব্যাপারটি নেই। আছে আন্তরিকতা। আর বিনে পয়সায় পাইয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত। মজা করে উদ্যোক্তারা বলছেন ফ্রি 'শপিং মল'! কি নেই তাতে। জামা, প্যান্ট, শাড়ি, চুড়িদার, ঘাগরা, জুতো সব। বাদ যায়নি মশারি, বালিশ, খেলনা থেকে ব্যাগও। মাপ মতো তুলে নিলেই হল। পয়সাকড়ির কোনও বালাই নেই। 


বারাসতের একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গত ন'মাস ধরে এলাকার দুঃস্থদের জন্য অভিনব এই উদ্যোগ নিয়েছে।


প্রতি মাসের শেষ রবিবার সকাল দশটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত 'শপিং মল' খোলা থাকে। স্থান সংস্থার অফিস ঘর। বারাসতের ১১ নম্বর রেলগেটের কাছে সংস্থার অফিস। ঘরটি মেরেকেটে সাতশো স্কোয়ার ফিটের। তাতেই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর স্বপ্ন যেন সত্যি হয়ে উঠছে। একটা অংশের মেঝেয় আলাদা আলাদা ভাবে রাখা আছে মহিলা, শিশু ও পুরুষদের পোশাক। এখানকার সবকিছুই সেকেন্ড হ্যান্ড।


প্রতি মাসের শেষ রবিবারে ভিড় উপচে পড়ে এখানে। আসেন মূলত অন্যের বাড়িতে কাজ করা, দিনমজুর অথবা রেল ধারের বস্তি থেকে আসা লোকজন। অভাব, অনটনের সংসারে এই শেষ রবিবার তাঁদের কাছে বাড়তি অক্সিজেন। শুধু নিজেদের জন্য নয়, পরিবারের বাকিদের জন্যও পছন্দের জামা-প্যান্ট-শাড়ি নির্দ্বিধায় নিয়ে যাচ্ছেন গোপাল, মানসী কাবেরীরা। বিনে পয়সায় পছন্দ মতো জামাকাপড় নেওয়ার পাশাপাশি উপরি পাওনা নিখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা।


স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা ওদের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টার কোনও কসুর রাখেন না। ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ায় চেনা পরিচিত, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন সকলে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরনো জামাকাপড়, খেলনা সংগ্রহ করেন। সংস্থার এক সদস্য রজত বিশ্বাস বলেন, 'অনেকেই বাড়তি পোশাক, খেলনা বা অন্যান্য জিনিস ফেলে দেন। কাউকে দেওয়ার মতো লোক পান না। আমাদের ফোন করলেই আমরা মোবাইল ভ্যান পাঠিয়ে সেসব নিয়ে আসি। এরপর প্রতি মাসের শেষ রবিবার সেগুলি বাছাই করে গরিব মানুষগুলোর জন্য রেখে দিই। ওদের হাসিমুখটাই আমাদের প্রেরণা জোগায়।'


হাবরার দাসপাড়ার বাসিন্দা অনিমা দাস এখানে বেশ কয়েকবার এসেছেন। তিনি বারাসতে পাঁচ বাড়িতে কাজ করেন। অনিমা বললেন, 'স্বামী নেই। ছেলেরা ছোট। অভাবের সংসারে নতুন জামাকাপড় সব সময় কিনে দিতে পারি না। এই দোকান আমাদের কাছে ভগবান।' ভাসিলা থেকে আসা মায়া দাস বললেন, 'পোশাকগুলি পুরনো হলেও ভালো। পড়ার মতো। জানার পর থেকেই কয়েক মাস ধরে এখানে আসি। আমাদের মতো গরিব মানুষের কথা কে ভাবে আজকাল? এঁরা ভেবেছেন। এটাই আমাদের পাওনা।'


শুধু বারাসত নয়, বসিরহাটের ভাসিলা, মালতিপুর কিংবা মছলন্দপুর, হাবরা থেকেও অনেকে আসেন। 'ক্রেতা'দের ভিড়ে ভিখিরিদেরও দেখা মেলে।

Source: Ei Samay

Tuesday, August 20, 2019

স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদনকারী তিনজনের চিকিৎসা শুরু বারাসাত জেলা হাসপাতালের

বারাসতে জেলাশাসকের কাছে চিঠি লিখে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদনকারী একই পরিবারের তিনজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করল বারাসত জেলা হাসপাতাল। রবিবার বিকেলে বারাসতের মহকুমা শাসক তাপস বিশ্বাস ও  জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ সুব্রত মণ্ডল বারাসত নবপল্লী বাণীনিকেতন রোড সংলগ্ন একটি আবাসনের বাসিন্দা গার্গী ব্যানার্জি ও তাঁর মা গীতাদেবী ও বাবা কমলবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের ফ্ল্যাটেই এদিন ওই পরিবারের তিন সদস্যের শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষাও করেন।

ডাঃ সুব্রত মণ্ডল জানান প্রাথমিকভাবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধও দিয়েছেন। বুধবার বারাসত হাসপাতালে তাঁদের যাবতীয় শারীরিক পরীক্ষা করা হবে বলেও জানান তিনি। জেলা হাসপাতালের সুপার বাড়িতে এসে তাঁদের চিকিৎসা করায় খুশি গার্গী ব্যানার্জি ও তাঁর বাবা–মা। গার্গী জানান, যেভাবে প্রশাসন, সমাজসেবী মুকুল চ্যাটার্জি–সহ বহু মানুষ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাতে তিনি আপ্লুত। উল্লেখ্য, শনিবার চাল, ডাল, আটা–সহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য নিয়ে তাঁদের বাড়িতে যান দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মুকুল চ্যাটার্জি। 

সারা বছর তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন। খাদ্য দপ্তরের জেলা কার্যালয় থেকে এক প্রতিনিধিদলও ওই পরিবারের সঙ্গে করে এদিন। ওই প্রতিনিধিরা তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, তাঁরা যাতে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য পান তার ব্যবস্থা করা হবে।‌ পাশাপাশি জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তীর নির্দেশে এক প্রতিনিধিদল ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সাহায্যও করে।  মহকুমা শাসক তাপস বিশ্বাস জানান, সবরকমভাবে ওই পরিবারের পাশে আছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই কানাডা, বেঙ্গালুরু–সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশ কয়েকজন ওই পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন।

Source: Aajkaal

Tuesday, July 16, 2019

মনুয়াকাণ্ড: অনুপম সিংহ হত্যা মামলায় রায়দান স্থগিত বারাসত আদালতে, হতাশ পরিবার

 সোমবার বারাসত ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে মনুয়া হত্যা মামলার রায়দান স্থগিত। ২৫ জুলাই মামলার পরবর্তী  শুনানি। এখনও পর্যন্ত মনুয়াকাণ্ডে ৩১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

২০১৭ সালে ২ মে  বারাসতে নিজের বাড়িতেই খুন হন ট্রাভেল সংস্থার কর্মী অনুপম সিংহ। ঘটনার ভয়াবহতা সাড়া ফেলে দেয় গোটা রাজ্যে। পুলিসের তদন্তে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, অনুপম সিংয়ের খুনের পিছনে জড়িয়ে রয়েছে তাঁর স্ত্রী মনুয়া। উত্শৃঙ্খলা জীবনযাপন, উচ্চাকাক্ষা, প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন- এই সবেই প্রেমিক দিয়ে নিজের স্বামীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। তরা ফোনে কললিস্ট ঘেঁটে আরও শিউরে ওঠা তথ্য পায় পুলিস। প্রেমিক যখন অনুপমকে খুন করেছিল, তখন ফোনের অপর প্রান্ত থেকে স্বামীর আর্তনাদ শুনেছিল মনুয়া। মাথার পিছনে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল অনুপমকে।

ঘটনার ১৩ দিন বাদে অনুপম হত্যায় মূল অভিযুক্ত মনুয়া ও তার প্রমিক অজিত ওরফে বুবাইকে গ্রেফতার করেছিল পুলিস। তাদের বিরুদ্ধে ৩০২, ১২০ বি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।  খুনের আগে ও পরে  মনুয়ার পরিকল্পনা ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের কৌশল ধন্দে ফেলেছিল পুলিশকে।

অনুপম হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী মনুয়ার কী শাস্তি হয়, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য। মনুয়ার ফাঁসির দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে সকাল থেকেই বারাসত আদালতের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন অনুপমের মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।  কিন্তু রায়দান স্থগিত হওয়ায় হতাশ পরিবার।

Source: Ei Samay

Saturday, June 1, 2019

শুটিং টুর্নামেন্ট শুটাথন শুরু বারাসতে

 অভিনব শুটিং টুর্নামেন্ট হচ্ছে বারাসতে আদিত্য স্কুলে। আয়োজক প্রাক্তন অলিম্পিয়ান জয়দীপ কর্মকার। জড়িয়ে আছেন অলিম্পিকে ভারতের একমাত্র সোনাজয়ী প্রাক্তন শুটার অভিনব বিন্দ্রাও।


শুরুতে নকআউট। তারপরে কিছুটা লিগ। এ ভাবে 'শুটাথন ২০১৯' শুরু হবে শুক্রবার থেকে। প্রাক্তন অলিম্পিয়ান অয়নিকা পাল সহ এক ঝাঁক জাতীয় স্তরের শুটার এখানে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের অলিম্পিয়ানও এখানে আসছেন।


কেন হঠাৎ করে এই ধরণের শুটিং? যা অতীতে ভারতের মানচিত্র খুবই কমই দেখা গিয়েছে। জয়দীপের দাবি, 'অতীতে কোনওদিনই দেশের মধ্যে এ ধরণের টুর্নামেন্ট হয়নি। এই প্রথম।'


পিছনে আরও কারণ রয়েছে। অলিম্পিকের মতো গেমসে শুটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রচুর শুটার। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিযোগিতা টানতে হয়। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এরমধ্যে আন্তর্জাতিক শুটিং ফেডারেশনকে তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে নির্দেশ দিয়েছে। সবমিলিয়ে সময় কমিয়ে আনতে হবে শুটিংয়ের। কমাতে হবে ইভেন্টও।


জার্মানিতে শুটিং লিগ, ও বিভিন্ন দেশের লিগ দেখে একটি অভিনব টুর্নামেন্ট করছেন জয়দীপ। তাঁর কথায়, 'এই টুর্নামেন্ট সফল হলে অভিনব বিন্দ্রা দায়িত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক শুটিং ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলবেন। পরীক্ষামূলকভাবে তা গোটা বিশ্বে তা চালু করার জন্য। নতুন একটা পথ দেখানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।'


তিন দিনের এই টুর্নামেন্টে যাবতীয় পুরস্কারের দায়িত্ব বিন্দ্রা ফাউন্ডশনের। অভিনব এখানে আসবেন কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। জয়দীপের কথায়, 'স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে কথা হয়েছে কিছু ম্যাচ তারা দেখাবে।'


অভিনব এই মিটে আটজন শুটার একসঙ্গে দাঁড়িয়ে শুট করছেন না। দু'জন করে শুট করবেন। ফলে সকলেই প্রতিযোগিতা অনুভব করতে পারবেন। এখনও পর্যন্ত ৬০জন শুটার এখানে অংশ নেওয়ার কথা। মেহুলি ঘোষও অংশ নেবেন নতুন এই ইভেন্টে।

Source: Ei Samay

Tuesday, May 21, 2019

West Bengal State University (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়)

 পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি নবগঠিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি উত্তর ২৪ পরগনার সদর বারাসতে অবস্থিত। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রোফেসর বাসব চৌধুরী২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। জেলার মোট ৫৭টি কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ারভুক্ত হয়েছে। এগুলি পূর্বে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল।


অনুমোদিত কলেজ

Saturday, February 23, 2019

Private university Adamas setting up hospital in Barasat

 A private university on Saturday laid the foundation stone of a medical college that would be attached to a referral general hospital in Barasat.


The 1,000-bed hospital to be set up by Adamas University is expected to start operations by the end of 2021 and the medical college after another 40 months, Samit Ray, university chancellor and chairman of Rice Group, said.


The university is run by Sachis Kiron Roy Memorial Trust, which is associated with Roy’s Institutions of Competitive Examinations, better known as the Rice Group.


The four-year-old university offers undergraduate courses in science, arts, commerce, engineering and technology, management and law.


“The last feather in the university’s cap is a medical college. A university education system can’t be complete without a medical college and hospital,” Ray said.


Source: Telegraph India

Monday, February 18, 2019

বারাসতে ফুটবল অ্যাকাডেমি

 সিডনির বার্সেলোনা ক্লাবের বাঙালি ফিজিও রথীন সাহা নিজেই ফুটবল কোচিং স্কুল খুলেছেন বারাসতে।


সিডনির এই ক্লাব স্পেনের বার্সেলোনা ক্লাবের ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেই ক্লাবে খুদেদের ফুটবল শিখিয়েই দিব্যি দিন কাটছিল তাঁর। কিন্তু দেশের টান থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা কি এত সহজ! তাই লম্বা ছুটি নিয়ে বছর চল্লিশের রথীন সাহা সিডনি থেকে সটান হাজির কলকাতায়। ছোটবেলার বন্ধুদের সাহায্যে একটি ফুটবল কোচিং স্কুলও বারাসতের হৃদয়পুর এলাকায় খুলে ফেলেছেন রথীন। এলাকার প্রায় জনা চল্লিশ শিশু এখন সেই ফুটবল কোচিং সেন্টারের ছাত্র। অ্যাকাডেমি চালানোর সব খরচ তাঁর পকেট থেকেই যায়।


বারাসতেই বড় হয়ে ওঠা রথীনের। কলেজের পাট চুকিয়ে তিনি রুটি-রুজির সন্ধান পাড়ি দিয়েছিলেন অষ্ট্রেলিয়ায়। সেখানে একটি ফুটবল ক্লাবে ফিজিও ট্রেনার হিসেবে চাকরিও জুটে যায়। এখনও রথীন বার্সেলোনা ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কথায়, 'বারাসতে আমার অনেক ফুটবলার বন্ধু এই কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত। আধুনিক পদ্ধতিতে বাচ্চাদের ফুটবল শেখানোর কৌশল আমি তাঁদের শেখাচ্ছি। অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ তো থাকবেই। তা ছাড়াও প্রতি বছর একমাসের ছুটি নিয়ে আমি বারাসতে আসব ঠিক করেছি।'

Source: Ei Samay

Tuesday, February 5, 2019

বারাসতে স্বাস্থ্য শিবির

 হৃদয়পুরে 'ডাক্তারদাদা' শ্যামলের উদ্যোগে 'স্বাস্থ্য শিবির

পেশায় তিনি আয়কর আধিকারিক। তবে, এলাকায় তিনি পরিচিত 'ডাক্তার দাদা' হিসেবে। কারণ, পরিচিত, অপরিচিত মানুষের চিকিৎসা নিয়ে কোনও সমস্যার কথা কানে এলে তিনি হাত গুটিয়ে বসে থাকেন না। মুশকিল আসান করতে বারাসতের হৃদয়পুরের বাসিন্দা শ্যামল কুমার দাস ঝাঁপিয়ে পড়েন। শুধু বারাসত বা উত্তর ২৪ পরগণা জেলা নয়, অন্যান্য জেলা থেকেও অনেক মানুষ প্রতিদিন তাঁর কাছে ছুটে আসেন। কেউ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু কোন চিকিৎসকের কাছে যাবে বুঝতে পারছে না, তার ভরসা শ্যামলবাবুই। আত্মীয়, অনাত্মীয়, পরিচিত, স্বল্প-পরিচিত বা একেবারেই অপরিচিতের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে কিংবা কারও নিকটজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে অফিসের কাজের ফাঁকে বা অফিস টাইমের আগে পরে ছুটে বেড়ানো শ্যামলের নেশার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানেই শেষ নয়। কারও কাছে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা নেই, সে ব্যাপারে মাথা ঘামানোও তাঁর স্বভাব।


এহেন ব্যস্ত মানুষের উদ্যোগে রবিবার হৃদয়পুর কবরখোলা মাঠে হয়ে গেল তাঁরই হাতে তৈরী সংস্থা 'প্রয়াস'-এর তরফে পঞ্চম বর্ষ 'স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির'। তবে, অন্যান্য 'স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরে'র থেকে 'প্রয়াস'-এর শিবির অনেকটাই আলাদা। কারণ, অত্যাধুনিক মেশিন এবং কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের খ্যাতনামা চিকিৎসকরাই ছিলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বে। গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজিস্ট থেকে শুরু করে হেপাটোলজিস্ট, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, অর্থপপেডিক, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট স্পেশালিস্ট, ব্যাক পেন স্পেশালিস্ট প্রায় সব বিভাগেরই নামকরা চিকিৎসকরা এ দিন হাজির ছিলেন ওই 'স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরে।'। শুধু প্রান্তিক মানুষই নয়, নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষও এদিনের এই 'শিবির' থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১১০০ মানুষ এদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। বিশিষ্ট হেপাটোলজিস্ট বিকাশ প্রকাশ বলেন,'অনেক মানুষ এসছেন যাঁদের রোগ হয়েছে অন্য অথচ, গ্যাসের ওষুধ খেয়ে


যাচ্ছেন। এটা সমাজের পক্ষে খুবই খারাপ ইঙ্গিত। সঠিক রোগ নির্ণয় করার পাশাপাশি এসব নিয়ে মানুষকে সচেতনও করা হয়েছে।' এদিকে, যাঁর উদ্যোগে এদিনের এই স্বাস্থ্য শিবির সেই শ্যামল কুমার দাস বলেন,' আমাদের দেশে চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো প্রয়োজনের তুলনায় কম। তার উপর, এখনও বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই রোগ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে যথেষ্ট অজ্ঞতা রয়েছে। যে কারণে সঠিক রোগের সঠিক চিকিৎসা হয়না। এই অজ্ঞতা দূর করতে এবং মানুষ যাতে সঠিক চিকিৎসা পায় সেজন্য সার্বিক ভাবে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। সেদিকে তাকিয়েই এই ধরনের শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।'

Source: Ei Samay