Thursday, June 25, 2020

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেখতে এসেছিলেন এই রথের মেলা ! করোনার জন্য বন্ধ বারাসতের রথের মেলা

 রথের মেলাকে ঘিরেই জায়গাটার নাম হয়েছে রথতলা। নকশাল অন্দোলনের পর থেকেই আর রথ টানা হয় না এই রথতলায়। উত্তর ২৪ পরগনার প্রাচীন তম রথের মেলার একটি বারাসতের রথতলা। এই প্রাচীন মেলার মাঠে গতকয়েক বছর ধরে  আসে রথ। তবে রথতলা থেকে প্রথা মেনে আর রথে যাত্রা হয় না। নবীন প্রজন্ম রথ ছাড়া রথের মেলা মানতে নারাজ ছিল। তারাই স্থানীয় জগবন্ধু আশ্রমের দারস্থ হন। জগন্নাথের পূজারীরা যে  রথ বের করেন জগবন্ধু আশ্রম থেকে, সেই রথকে নিয়ে আসা হবে বারাসাত রথতলাতে। তবে মাঠে মেলা বসে। সময়ের সঙ্গে মাঠের জায়গাও ছোট হয়েছে। তাই জগবন্ধু আশ্রম থেকে নিয়ে আসা রথ রাখা হবে কোথায়?


মুকুল চ্যাটার্জী, মেলা আয়োজক জানান, সবাই মিলে ঠিক হয় কাছে জোড়া শিব মন্দিরে সামনে রাখা হবে রথ।জোড়া মন্দিরে রাখা রথই গত কয়েক বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে। আর এবার করোনার প্রকোপের জেরেই সেই রথ ও এল না রথতলায়।এই মেলায় পাঁপড়, বাদাম আর খেলনার জিনিসের পাশাপাশি নানা ধরনের গাছ বিক্রি হল অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক সময় এই রথের মেলায় উল্টো রথের শেষ দিন হত বৌ মেলা।ঐতিহ্যের সেই মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।কিন্তুু বর্তমান সময় গাছ বিক্রি ও কেনাতেই ছিল শহর তথা জেলার মানুষের কাছে আসল আকর্ষণ। এবছর করোনার প্রকোপে রথতলার মেলার আয়োজকরা মেলা বন্ধ রেখেছে।আমফান ঝড়ের পর গাছ পড়েছে বহু।কিন্তুু গাছ কিনে বসানোর সেই বাসনা থেকে শহর বাসি বঞ্চিত রইল এবার।মেলার আয়োজক মুকুল চ্যাটার্জী এদিন জানান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এক সময় এই মেলায় এসে পূজা দিয়ে গিয়েছেন। এমন ঐতিহ্য মেলা এবার বসল না। আর ভরা বর্ষাতে গাছ বেঁচে দু পয়সা দেখল না বিক্রেতা।সবচেয়ে বড় কথা এই মেলার গাছেই গৃহস্থের উঠান সবুজ হয়।পরিবেশ তরতাজা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা মগরা থেকে আসা গাছ বিক্রেতা পরিতোষ মন্ডলের কথায়, মহাজন থেকে গাছ তো দিন ১৫ আগেই কিনেছেন এই মেলার জন্য। মেলা বন্ধে তাদের মাথায় হাত।মহাজন তো আর গাছ ফিরিয়ে নেবে না। সব লস শুধুই তার।


Source: News18

Wednesday, June 10, 2020

লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও মাসিক ফি কমছে না, প্রতিবাদে বারাসতে পথ অবরোধ অভিভাবকদের

 লকডাউনে প্রায় মাস তিনেক স্কুল বন্ধ থাকলেও, বেঁধে দেওয়া মাসিক ফি-ই নিচ্ছে স্কুল। যার প্রতিবাদে আজ বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে এক বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করলেন। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে চলে অবরোধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকরা কথা বলতে চাইলেও অভিযোগ, কেউ কথা তো বলেনইনি, উলটে অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। অবরোধের ফলে এদিন কিছুক্ষণের জন্য ডাকবাংলো মোড়ে যানজট তৈরি হয়।


তিন মাস ধরে স্কুল বন্ধ। ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। এই অবস্থায় স্কুলগুলির অনেক খরচই কমেছে। যেমন, ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহার না হওয়ায় কমেছে বিদ্যুতের খরচ। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে না যাওয়ায় পরিবহণ খরচ একেবারেই শূন্য। এই পরিস্থিতিতে সব হিসেবনিকেশ মাথায় রেখে বেসরকারি স্কুলগুলো কম মাসিক ফি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, বারাসতের ওই বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলটি সরকারের আবেদনে কর্ণপাত না করে বরাবরের মতো মাসিক ফি ৪৩০০ টাকাই নিচ্ছে। এই অঙ্ক কমাতে বললেও, তারা নারাজ। অভিভাবকদের তরফে এক প্রতিনিধি দল স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, দেখা করে এ বিষয়ে আলোচনা করার। বহুবার আবেদন সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।


ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে আজ সকালে তাই অভিভাবকরা স্কুলে যান। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান। অভিযোগ, কেউ তো তাঁদের সঙ্গে কথা বলেনইনি, উলটে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এরপরই ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এমনিতে যতক্ষণ ক্লাস হয়, তার অর্ধেক সময়েও অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। কোনওক্রমে ১ থেকে ২ ঘণ্টা ক্লাস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তাই অভিভাবকদের দাবি, শুধুমাত্র টিউশন ফি তাঁরা দিতে রাজি। অন্য যে কোনও ফি মকুব করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। যদিও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।


Source: Sanbadpratidin

Saturday, June 6, 2020

অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত উত্তম কুমারের স্মৃতিবিজড়িত বারাসতের মিষ্টির দোকান

 মাত্র কয়েক দশক আগের কথা। বারাসতের উপর দিয়ে গেলে একটি মিষ্টির দোকানে অবশ্যই দাঁড়াতেন উত্তম কুমার ও কিশোর কুমার। মিষ্টিমুখ করতেন, দোকানের মালিকের সঙ্গে খানিক খোশগল্প করতেন, তারপর আবার গন্তব্যে রওনা দিতেন। শনিবার বারাসতের সেই মিষ্টির দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেল। মুছে গেল ১৫৬ বছরের স্মৃতি।




ওই মিষ্টির দোকানের নাম রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার। বারাসতের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই নাম। সেই দোকান শনিবার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। এদিন ভোরে হঠাৎই ওই মিষ্টির দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। কিন্তু নিমেষের মধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে আগুন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা দোকানটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। দমকলের কর্মীরা শত চেষ্টাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে দমকল ও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।


কিন্তু কেন ওই দোকানে আগুন লাগল বা কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নয় এলাকাবাসী। বরং ১৫৬ বছরের স্মৃতি যে অগ্নিগর্ভে চলে গেল, তা নিয়েই মূহ্যমান তারা। লোকমুখে প্রচলিত, বারাসতের উপর দিয়ে গেলে উত্তম কুমার ও কিশোর কুমারের মতো নামী ব্যক্তিত্বরা এই রাধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে আসতেন। শত ব্যস্ততা থাকুক, একবার দোকানের মিষ্টি না চেখে যেতেন না। ফলে এই দোকান নিয়ে এলাকার মানুষের গর্বেরও সীমা ছিল না। আত্মীয়দের বাড়ি গেলে বা কোনও অনুষ্ঠানে এই দোকানের মিষ্টি খাইয়ে এলাকার মানুষ যে কতবার আত্মসুখ লাভ করেছে, তার হিসেব নেই। রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, বারাসতের দক্ষিণপাড়ার মুখে সেই মিষ্টির দোকানের নামে বাস স্টপও রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ড সেই ঐতিহাসিক দোকান ভস্মীভূত করে দিল, এই নিয়ে মন খারাপ বারাসতের মানুষের।


Source: Sanbadpratidin

Saturday, May 16, 2020

বারাসত হাসপাতালে কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড

 ৭০ শয্যার কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড, দশ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে তৈরি বারাসত সদর হাসপাতাল। দমদম বিমানবন্দরে কোনও যাত্রীকে দেখে চিকিৎসকদের যদি সন্দেহ হয়, এরপর তাঁকে সটান পাঠিয়ে দেওয়া হবে এই বারাসত হাসপাতালে। হাসপাতালের কোয়ারানটাইন ওয়ার্ডে রেখে চলবে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণ। কারও শরীরে যদি দেখা যায় বাসা বেধেছে করোনাভাইরাস, তবে আইসোলেশন সেন্টারে রেখে চলবে চিকিৎসা।


সরকারের নির্দেশ পেতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই কোয়রানটাইন ওয়ার্ড ও আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করেছেন বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, 'রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখানে কেউ ভর্তি হয়নি। তবে আমরা প্রস্তুত।'


বারাসত হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের ঠিক উল্টো দিকেই হয়েছে কোয়ারানটাইন ওয়ার্ড। শুক্রবার বিকেলেই জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ওয়ার্ডটি ঘুরে দেখেন। ওয়ার্ডে একসঙ্গে ৭০ জনকে পর্যবেক্ষণে করা যাবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদম বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা যদি মনে করেন কাউকে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার, সেক্ষেত্রে বারাসত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য আলাদা বাসও থাকবে। ১৪ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ চলবে। কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে, সেই রোগীকে নিয়ে আসা হবে আইসোলেশন সেন্টারে।


আইসোলেশন সেন্টারটি দশ শয্যার। পাঁচটি পুরুষ, বাকি পাঁচটি মহিলাদের জন্য। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা ঘর থাকছে। আইসোলেশন সেন্টারে দু'টি ভেন্টিলেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারও শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে কলকাতার আইডি হাসপাতালে পাঠানো হবে।


করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে কুড়ি জনের একটি চিকিৎসকদের দল গড়া হয়েছে। চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক, গ্লাভস, গাউন, ক্যাপ, অ্যাপ্রন, শু-কভার আনা হয়েছে।


শুধু বারাসত নয়, বনগাঁ হাসপাতালেও তোড়জোর শুরু হয়েছে। বনগাঁ হাসপাতালে সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো জানিয়েছেন, হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসকদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হাসপাতালে চারটি বেডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। দু'টি বেড পুরুষদের, বাকি দু'টি বেড মহিলাদের। ভেন্টিলেশনের আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে প্রয়োজন হলে হাসপাতালে থাকা ভেন্টিলেশনের সাপোর্ট নেওয়া হবে।


হাবরা হাসপাতালে অবশ্য এই ধরনের কোনও আইসোলেশন সেন্টার করা হয়নি। হাবরা হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, 'আউটডোর করেন এমন ১১ জন চিকিৎসককে এর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।'


জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তপন সাহা বলেন, 'জেলায় বারাসত হাসপাতাল, ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল, বনগাঁ এবং বিধাননগর হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।'


Source: Ei Samay

Tuesday, May 5, 2020

মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দিলেন বারাসতের জেলা পুলিশের কর্মীরা

 করোনা মোকাবিলায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। পিছিয়ে নেই পুলিশ কর্মীরাও। বিভিন্ন কমিশনারেট, থানার পুলিশ কর্মীরা নিজেদের বেতনের একাংশ মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন। সোমবার বারাসত জেলা পুলিশের আধিকারিক ও কর্মীরা একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে দান করলেন। যার আর্থিকমূল্য প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা।


করোনায় ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। সময় যতই এগোচ্ছে ততই দাপট বাড়াচ্ছে মারণ ভাইরাস। বিশ্বে ৩৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। ভারতের সংখ্যাও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। আক্রান্ত ৪২,৮৩৬। মৃত্যু হয়েছে ১৩৮৯ জনের। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণকে জব্দ করতে ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। তবে আজ থেকে লকডাউনের তৃতীয় দফায়  শর্তসাপেক্ষে  বেশ কিছু  ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। খুলছে মদের দোকান, সেলুন, স্পা-ও। বাংলার করোনা পরিস্থিতিও সন্তোষজনক নয়। ৬১ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে এ রাজ্যে।  এখনও পর্যন্ত  আক্রান্ত হয়েছেন ১২৫৯। সুস্থ হয়েছেন ২১৮ জন।লকডাউন চলাকালীন রাজ্যবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য প্রশাসন। চিকিসা থেকে বিনামূল্য রেশন, কোথাও আবার রান্না করে খেতে দেওয়া হচ্ছে। গঠিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল।


মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দিলেন বারাসত জেলা পুলিশের আধিকারিক ও কর্মীরা। মোট সাড়ে ৮ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, লকডাউনের শুরুর দিন থেকে এলাকার প্রৌঢ় ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য হেলপ লাইন নম্বর চালু করেছেন। এছাড়া কমিউনিটি কিচেন থেকে ফুটপাথবাসীদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন জেলা পুলিশের কর্মীরা। তাঁদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এলাকাবাসী।

Source: Sanbadpratidin

Friday, May 1, 2020

বারাসতের কিশলয় হোমে আইসোলেশন ঘরের ব্যবস্থা

 নতুন আবাসিক এলে রাখা হচ্ছে হোম কোয়ারান্টিনে, বারাসতের কিশলয় হোমে আইসোলেশন ঘরের ব্যবস্থা

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আইসোলেশন ঘর চালু হল বারাসতের কিশলয় হোমে। সেখানে রাখা হয়েছে কোয়ারান্টিনের ব্যবস্থাও। ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা অনাথ শিশু-কিশোরদের মাধ্যমে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, তাই এই ব্যবস্থা করেছেন হোম কর্তৃপক্ষ।


এই ব্যবস্থার মূল উদ্যোক্তা কিশলয় হোমের সুপার মলয় চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, হোমে নতুন কোনও আবাসিক এলে তার শারীরিক পরীক্ষা করে ১৪ দিনের জন্য এই আইসোলেশন ঘরে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি হোমের আবাসিকদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করেছেন হোম কর্তৃপক্ষ। ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনও আবাসিককে গেটের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। বাইরে থেকে কেউ দেখাও করতে আসতে পারবে না। কিশলয় হোমে ১২৪ জন অনাথ আবাসিকদের রয়েছে। তাদের সুরক্ষার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন হোমের সুপার।


রবি, ফারুক, ইলিয়াস, শুভেন্দুদের মতো আবাসিকদের কাছে এই হোমই ঘরবাড়ি। ওই হোমে কেউ আছে ১০ বছর। কেউ আবার পাঁচ কিংবা সাত বছর। হোম থেকেই স্কুলে যেত তারা। করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জেরে এখন তা পুরোপুরি বন্ধ। হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন এক ঘণ্টা পর পর প্রত্যেক আবাসিকের হাত তরল সাবান দিয়ে ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে একটি করে সাবান ও একটি তোয়ালে। আবাসিকদের হাত ধোয়ানোর কাজটা করছেন হোমের কর্মীরাই। তাদের সচেতন করতে সকাল এবং বিকেলে প্রার্থনার সময় কী ভাবে হাত তরল সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে পরিষ্কার করতে হবে, তা হাতেকলমে দেখানো হচ্ছে। সচেতন করতে হোমের মধ্যে দেওয়া হয়েছে পোস্টারও।


হোমের সুপার মলয় চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেন, 'হোমটাই ১২৪ জন আবাসিকদের বাড়িঘর। এরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। এই পরিস্থিতিতে এদের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের প্রধান দায়িত্ব।' সম্প্রতি নিমতা থেকে দুই আবাসিক এসেছে হোমে। আসার পরেই তাদের মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে। তারা সুস্থ রয়েছে। তার পরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের আইসোলেশন ঘরে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আবাসিকদের মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসার হিমাংশু দাস আবাসিকদের মাস্ক তৈরি করা শেখাচ্ছেন।

Source: Ei Samay

Thursday, April 30, 2020

করোনার আতঙ্কে বন্ধ করা হল বারাসতের ওষুধের পাইকারি বাজার

করোনার আতঙ্কে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সবচেয়ে বড় ওষুধের পাইকারি মার্কেট  বন্ধ করা হল। বারাসতে পঞ্চানন মার্কেট  নামে এই বাজারে হোলসেল ওষুধ বিক্রির জন্য বিখ্যাত। এই মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর গত কয়েক দিন ধরে জ্বর ও কাশী হয়।ওষুধ খেয়েও জ্বর না কমায়, তাঁকে কোয়ারান্টাইন সেন্টারে পাঠায় প্রশাসন।বারাসত স্টেশনের এক নং প্লাটফর্ম থেকে বেড় হলেই এই ওষুধের পাইকারি বাজার পড়ে।স্টেশন থেকে হরিতলা মোড়ের দিকে আসার রাস্তায় বাম দিকে পঞ্চানন মার্কেট।


বাজারে ঢোকার রাস্তা এতটাই সরু যে দুজন পাশাপাশি যাওয়া দূস্কর।আর সিঁড়ি ধরে বাজারের উপরে উঠলে গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করা ছাড়া উপায় নেই।ঘিঞ্জী বাজারে স্যোশাল ডিসটেন্সিং এক প্রকার অসম্ভব ছিল।লক ডাউনের শুরু থেকে ব্যবসাদার ও প্রশাসনের মাথা ব্যাথা ছিল এই বাজার। কারন  করোন থাবা থেকে এই পাইকারি ওষুধের বাজারকে  মুক্ত রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ করোনা ভাইরাস তখনও বারাসত শহরে মাথা চাড়া দেয়নি৷প্রশাসনের নির্দেশ মত সকল খরিদারকে চাহিদা মত ওষুধের ফর্দ বানিয়ে বাজারের বাইরে থেকে দোকানদারকে ওর্ডার দিয়ে দিতে হবে।তারপর রাস্তার ধারে অপেক্ষা করতে হবে।রাস্তাতেই দোকানের কর্মীরা ওষুধ ডেলিভারি করে যাচ্ছিল।কিন্ডু এই ঘিঞ্জি বাজারে প্রতিদিন হাজার খানেক লোক জড় হচ্ছিল ওষুধ নিতে।


এই এলাকার বাসিন্দা সৌমদ্বীপ ঘোষের অভিযোগ একদিকে বারাসাতের বড় বাজার আর একদিকে পঞ্চানন মার্কেট। সারা জেলার ওষুধ এখান থেকে যায়।ফলে তাদের বরাবরের  আশংকা ছিল প্রচন্ড ছোয়াছে করোনা যে কোন সময় এই এলাকায় কড়া নারবে।প্রশাসন এই বাজার বিল্ডিং এর গঠন জানত তারপরেও কি করে এমন একটা ঘিঞ্জি বাজারকে চালাবার অনুমতি দিল তা তার বোধগম্য হচ্ছে না।বারাসত শহরের ওষুধের খুচরো ব্যবসাদারের মৃনাল বিশ্বাস এদিন বলেন লকডাউনের কারনে বেশ কিছু ওষুধের যোগানের সমস্যা রয়েছে। তার উপর পাইকারি বাজার বন্ধ হওয়াতে আরও সমস্যা বাড়বে।তবে জেলার বড় শহরগুলিতে ওষুধ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটারদের সরবরাহ থাকাটা একটা স্বস্তি। তবে গ্রামীণ এলাকায় ওষুধের যোগানের উপর প্রভাব পড়বেই পঞ্চানন মার্কেট বন্ধের।  আজ সকাল থেকে বাজার বন্ধের কথা জানায় ব্যবসায়ীরা।ব্যবসাদার সুত্রে জানা গেছে সাময়িকভাবে এই বাজার বন্ধ রাখা হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর করোনা টেস্ট রিপোর্ট দেখে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাজার ব্যবসায়িক কমিটির সভাপতি সুনীল দেবনাথ।তার দাবী আগামীকাল শুক্রবার বাজারে স্প্রে করে জীবানুমুক্ত করা হবে।

Source: News 18


Monday, April 13, 2020

বারাসতের দেওয়াল জুড়ে আঁকিবুঁকিতে করোনা সচেতনতা বার্তা

করোনা ভাইরাস থাবা না বসালে রাজ্যে এতদিনে পুরভোটের ডঙ্কা বেজে যাওয়ার কথা ছিল। মাস দেড়েক আগে থেকেই পাড়ায় পাড়ায় চুন দিয়ে দেওয়াল রং করার কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনার আঁচে পুড়েছে ভোটের কপাল। তাই দেওয়ালগুলি সাদাই পড়ে ছিল। এবার ভোট প্রচারের সেই সাদা ক্যানভাসে রং,তুলির টানে মানুষকে ঘরে থাকার বার্তা দিতে নামল ছাত্র-যুবরা।


লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় ভিড়ের ছবি রোজ দেখা যাচ্ছে রাজ্যে। আর তার সঙ্গে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কোথাও পাড়ার মোড়ে আড্ডা, কোথাও চায়ের দোকানে ভিড়। সকাল হতেই ব্যাগ হাতে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বাজারে। পুলিশ প্রশাসন নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফিরছে না মানুষের। এবার তাই রং তুলি হাতে ময়দানে নামল ছাত্র যুবরা। রবিবার থেকে বারাসতের বিভিন্ন এলাকায় দেওয়াল লিখন শুরু করল ইয়াং জেনারেশন অফ বারাসত নামে ছাত্র যুবদের একটি সামাজিক সংগঠন। দেওয়ালে কার্টুন এঁকে বাসিন্দাদের সচেতন করছেন তাঁরা।


লকডাউন চালু হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মিম ভাইরাল হয়েছে। তাদেরই কয়েকটি নিয়ে মজাদার কার্টুন আঁকছে এই ছাত্র যুবরা। এই মিমগুলির মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিল চা কাকু। বারাসতের রথতলা মোড়ের কাছে একটি দেওয়ালে সেই চা-কাকুকেই প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে ওই ছাত্ররা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, চা কাকু বলছেন, “আমরা চা খাব না?” উত্তরে একজন বলছেন, “চা খাবেন, কিন্তু বাড়ি থেকে বেরবেন না।” এছাড়া ‘স্টে হোম, স্টে সেফ’ -এর বার্তাও দেওয়া হচ্ছে এই দেওয়াল লিখনে।


ইয়ং জেনারেশন অফ বারাসতের তরফে সোহম পাল বলেন, “আমাদের এই অরাজনৈতিক সংগঠনে প্রায় দু’শোর উপর সদস্য রয়েছে। দেওয়াল লিখনের পাশাপাশি তারা প্রত্যেকে এলাকায় এলাকায় ঘুরে সার্ভে করছে। এবং প্রকৃত অর্থে যারা এই লকডাউনে খাদ্যসংকটে ভুগছেন, তাদের হাতে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে। চাল, ডাল, ওষুধ, বেবিফুড, যার যেমন প্রয়োজন সে অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে।”

Source: Sanbad Pratidin

Sunday, April 12, 2020

বাংলার গর্ব মেঘার জীবনে কাটল মেঘ, সাহায্যের হাত বাড়ালেন 'নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক' পুলিশ অফিসার

 আর কয়েক সপ্তাহ পরেই ভারতীয় টিমের জার্সি গায়ে তাঁর উড়ে যাওয়ার কথা ছিল থাইল্যান্ডে। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের কারণে কেরালার তিরুবনন্তপুরমের জাতীয় শিবির বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বারাসতে নিজের বাড়িতে ফিরে চরম সঙ্কটে বাংলার অন্যতম সেরা প্রতিশ্রুতিবান ভলিবলার মেঘা দাস। দু’বেলা পেটপুরে খাওয়ার অবস্থাও তাঁর এখন নেই। আর সেই খবর 'এই সময়' পত্রিকায় প্রকাশিত হতেই এবার এগিয়ে এলেন কলকাতা পুলিশের এক অফিসার।



জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের ওই অফিসার খবরটি পড়েই শুক্রবার হাজির হন মেঘার বাড়িতে। সঙ্গে করে নিয়ে যান এক মাসের জন্য চাল, ডাল-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। শুধু তাই নয়, এরপর আরও সাহায্য করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই অফিসার চান না এই সাহায্যের প্রেক্ষিতে তাঁর নাম প্রকাশ্যে আসুক। সেই কারণেই এই প্রতিবেদন তাঁর নাম প্রকাশ করা হল না। তবে, এতে যে মেঘার সমস্যার অনেকটাই আপাতত সমাধান হল, তা বলাই বাহুল্য।


৬ ফুটের বেশি উচ্চতার বছর আঠারোর মেঘার ঝুলিতে জাতীয় পর্যায়ের গোটা সাতেক সোনার মেডেল রয়েছে। মিনি, সাবজুনিয়র, জুনিয়র সহ খেলো ইন্ডিয়া গেমসে বাংলা টিমকে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন করে জাতীয় শিবিরে ডাক পেয়েছিলেন এই ‘অ্যাটাকার’। ভলিবলের কোর্টে প্রতিপক্ষকে টলিয়ে দিলেও নিজের সংসারের কোর্টের রক্ষণ কিন্তু সামলাতে পারছেন না ক্লাস ইলেভেনের ছাত্রী মেঘা।


মেঘার বাবা গোপাল দাস আগে পাখির ব্যবসা করতেন। সেই ব্যবসা নিষিদ্ধ হওয়ায় এখন তিনি বারাসতের লালি সিনেমার কাছে ফুটপাতে এক ছোট্ট ইমিটেশনের দোকান চালান। এমনিতে পুজোর সময় ছাড়া দোকান প্রায় চলেই না। তার ওপর লকডাউনে তিনি তো দোকানই খুলতে না পারায় কোনও আয় নেই দিন কুড়ি ধরে। জমানো কোনও টাকাও নেই। বুধবার দুপুরে বারাসতের মালঞ্চ পাড়ায় এক চিলতে বেড়া দেওয়া ঘরে মেয়ে, বউ ও শাশুড়িকে নিয়ে বসে গোপালবাবু বলেছিলেন, ‘মেয়েটা সবে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। ভারতীয় টিমে খেললে হয় তো কিছু টাকা স্টাইপেন্ড পেত। পরে একটা চাকরি বাকরিরও পথ খুলে যেত। কিন্তু এই করোনা আমাদের সেই স্বপ্ন আপাতত থমকে দিল।’ গোপালবাবুর আরও কষ্টের কারণ একজন খেলোয়াড়কে যা খাবার দিতে হয়, তার তিনি কিছুই দিতে পারছেন না মেয়েকে। তাঁর আক্ষেপ, ‘মেয়েটা বাড়ি রয়েছে কিন্তু ওকে কোনওভাবে একটু ভাত আলুভাতে ছাড়া তো কিছুই দিতে পারছি না। রোজগার নেই।’ সঙ্গে জোড়েন, ‘ধারদেনা করে ওকে জাতীয় শিবিরে পাঠিয়েছিলাম। এখন তো লোকের কাছে আর ধার চাইতেও পারছি না।’


বাবা ভেঙে পড়লেও হার মানতে নারাজ ছিলেন মেঘা। বলছিলেন, ‘জাতীয় শিবিরে থাকলে খাবার কোনও সমস্যা হয় না। কেরালায় জুয়েল স্যর আমাদের ১৬ জন মেয়েকে তৈরি করছিলেন থাইল্যান্ডে একটা আন্তর্জাতিক জুনিয়র টুর্নামেন্টে খেলতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তা না হওয়ায় বাড়ি ফিরেছি। অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে আমি সব মানিয়ে নিয়েই নিজেকে তৈরি রাখছি জাতীয় শিবিরে যাওয়ার জন্য।’ এই জাতীয় শিবিরে বাংলা থেকে একমাত্র মেঘাই সুযোগ পেয়েছিলেন।


মেঘা বারাসতের মেয়ে হলেও তাঁর উত্থান মগরা ভলিবল অ্যাকাডেমিতে। এই অ্যাকাডেমির প্রাণপুরুষ প্রভাত ঘোষ মগরাতেই একটা বাড়ি ভাড়া করে মেঘার পরিবারকে বছরের বেশি সময় রেখে দেন। পরিবারকে আর্থিক সাহায্যও করেন। মেঘার বাবা বলছিলেন, ‘আজ মেঘা এই জায়গার পৌঁছানোর পিছনে সবটাই প্রভাতবাবুর অবদান। কিন্তু এমন লকডাউনের সময় তিনিই বা আমাদের কত সাহায্য করবেন? তাই আমরা এখন খুবই অসহায়।’


অবশেষে বাংলার প্রতিভাবান এই ভলিবলারের পাশে দাঁড়ালেন কলকাতা পুলিশের ওই অফিসার। সেজন্য খুশি মেঘা ও তাঁর পরিবার।


Source: Ei Samay

Sunday, April 5, 2020

করোনা মোকাবিলায় মুরগি বিলি বারাসতে

 করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন। মানুষ ঘরবন্দি। কাজকর্ম সব শিকেয় উঠেছে। সবচেয়ে বিপদ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজনের। ভবঘুরেদের অবস্থা তো কহতব্য নয়। এ অবস্থায় অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কেউ কেন্দ্র বা রাজ্যের তহবিলে অর্থ দান করছেন, কেউ দিচ্ছেন চাল-ডাল। বারাসতের ন’পাড়ার দাস পরিবারও সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। তবে চাল-ডাল দিয়ে নয়, দুঃস্থদের হাতে তুলে দিচ্ছে একটি করে জ্যান্ত মুরগি।


কিন্তু হঠাৎ জ্যান্ত মুরগি বিলি কেন? দাস বাড়ির ছেলে তুহিন বললেন, ‘করোনা মোকাবিলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকাটা জরুরি। নিয়মিত প্রোটিন খাওয়া দরকার। লোকে চাল-ডাল দিচ্ছে। গরিবদের পেট ভরছে। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কি গড়ে উঠছে? না। তবে ওদের করোনা হলে কী হবে? তাই এই ব্যবস্থা।’


যেমন ভাবা তেমন কাজ। বারাসতের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুঃস্থ পরিবারগুলির বাড়ি বাড়ি গিয়ে দাস পরিবারের দুই ছেলে তুহিন ও সজল মুরগি বিলি করে দিয়ে এসেছেন। এমন সাহায্য পেয়ে অনেকেই অবাক। তখন তুহিন-সজল সবাইকে বুঝিয়ে বলছেন, যে চাল-ডাল শুধু নয়, মুরগিকেও ত্রাণ হিসেবে যেন গ্রহণ করেন সকলে। এমন ত্রাণ পেয়ে যারপরনাই খুশি সকলে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা হরিগোপাল সাঁতরা বললেন, ‘ওরা যে এ ভাবে ভেবেছে, সে জন্য ধন্যবাদ। সত্যিই আমাদের পুষ্টিকর খাওয়ার জোটে না। রোগ হলে সহজে সেরে উঠব না। আর করোনা হলে তো কথাই নেই। দাস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে আমার কুর্নিশ।’


বারাসতের ন’পাড়ার দাস পরিবার বেশ সম্পন্ন। প্রতি বছর ধুমধাম করে বাসন্তী পুজো করে দাসেরা। এ বছর লকডাউনের জেরে পুজোয় কাটছাট করতে হয়েছে অনেকটাই। নমো নমো করে সারতে হয়েছে পুজো। পুজোর যে বাজেট ধরা হয়েছিল, তার অনেকটাই রয়ে গিয়েছিল। সেই টাকাটা বিপদের দিনে আর্তের সেবায় কাজে লাগানো হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু কী ভাবে? পরিবারের কেউ বলেন, থোক টাকাটা ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হোক। কেউ বলেন, স্থানীয় গরিব মানুষদের চাল-ডাল দেওয়া হোক। কারও মত ছিল, খিচুড়ি রান্না করে কয়েক দিন খাওয়ানো হলেই ভালো হয়। এমন নানা মতের মধ্য উঠে আসে মুরগির কথা। সকলেই একবাক্যে রাজি হয়ে যান।


বাড়ির নবীন সদস্য তুহিন আর সজলের উপর পড়ে মুরগি বণ্টনের দায়িত্ব। দু’জনেই সানন্দে রাজি হয়ে যান। স্থানীয় একটি পোলট্রি থেকে একশোটি মুরগি কেনা হয়। তবে শুধু মুরগিই নয়, দেওয়া হয় চাল-ডাল-নুন-তেলও। সজল-তুহিনরা জানালেন, বাড়ির বড়দের তেমনই নির্দেশ ছিল। মুরগি বিলির ফাঁকে সজল বললেন, ‘আসলে প্রতিবছর বাসন্তী পুজোয় অনেক লোক নিমন্ত্রিত থাকে। এ বছর পুজো ছাড়া সে সব আর হয়নি। তাই এত কিছু করে উঠতে পারলাম।’


মুরগি বিলির সময় সরকারি নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন সজল-তুহিন। পড়েছিলেন মাস্ক। নিয়মিত স্যানিটাইজার দিয়ে হাতও পরিষ্কার করছিলেন।


Source: Ei Samay