Tuesday, December 15, 2015

বারাসতে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় ব্রেনওয়্যারের

 রাজ্যে কম্পিউটার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান ব্রেনওয়্যার এ বার বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে৷ সোমবারই এই বিল বিধানসভায় পাশ হয়েছে৷ রাজ্যে পালাবদলের পর সরকারি সহায়তাপুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালুর নীতি নেয় উচ্চশিক্ষা দপ্তর৷ ইতিমধ্যে সাতটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন চালু হয়েছে৷


নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে? প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় জানান, রাজ্যপালের অনুমতি পেলেই উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে ইংরেজি নববর্ষের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ আপাতত কর্মসংস্থান উপযোগী নানা কোর্স খোলা হবে৷ তথ্যপ্রযুক্তি, ম্যানেজমেন্ট (বিশেষত, ডিজিট্যাল ম্যানেজমেন্ট), এন্টারপ্রেনারশিপ ছাড়াও গণিত এবং পদার্থবিদ্যা পড়ানো হবে৷ সেইসঙ্গে সৌরশক্তি, ওয়েব টেকনোলজি, মাল্টিমিডিয়া এবং ই-কমার্স ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা ও উন্নয়নে নজর দেওয়া হবে৷ প্রথম থেকে কর্মসংস্থানমুখী কোর্স খোলা হবে৷ বিধানসভায় বিল সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জবাবি ভাষণে বলেন, ‘রাজ্যের নানা প্রান্তে ১৯৯০ থেকে সংস্থাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে৷’


বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের কাছে আকর্ষণীয় না-হলেও এই উদ্যোগ কেন?

ফাল্গুনীবাবুর জবাব, ‘রাজ্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে প্রশিক্ষিতদের দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান ও উদ্যোগপতি হিসাবে গড়ে তুলেছে এই সংস্থা৷ আমাদের নিজস্ব প্লেসমেন্ট সেল আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর আমরা জেলায়-জেলায় প্লেসমেন্ট হাব গড়ে তুলব৷ প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনার পর কর্মসংস্থান নিশ্চিত হওয়ায় আমাদের প্রতিষ্ঠান সাড়া ফেলবেই৷ তাই আমাদের প্রথম থেকেই লক্ষ্য অল্প ছাত্র ও ভালো শিক্ষক৷’


পাঁচ বছর আগে বারাসতেই ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট এবং তথ্যপ্রযুক্তি কলেজ শুরু করেছিল সংস্থা৷ সেগুলি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে৷ তার পরের বছরই পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরও একটি পেশাদার কলেজ চালু করে৷ সংশ্লিষ্ট কলেজ থেকে উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের স্নাতক ডিগ্রিও দেওয়া হয়৷ বারাসতেই ৯ একর জমির একাংশে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ যা সরকারি নিয়মের তুলনায় বেশি বলেই তাঁর দাবি৷

Source: Ei Samay

Sunday, May 17, 2015

পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার বেনজির নিয়ম, সিদ্ধান্ত বদল করল বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

 চব্বিশ ঘণ্টার খবরের জের। সিদ্ধান্ত বদল করল বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার বেনজির নিয়ম করেছিল কর্তৃপক্ষ।

চব্বিশ ঘণ্টায় সেই খবর প্রচারিত হওয়ার পরই নিন্দার ঝড় ওঠে শিক্ষা মহলে। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, পরীক্ষার্থীদের নাম খাতায় লিখতে হবে না। এই সংক্রান্ত চিঠিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপকদের। সম্প্রতি বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম চালু করে শুধু রেজিস্ট্রেশন নম্বর  আর রোল নম্বরই নয়। পরীক্ষার খাতায় লিখতে হবে নামও। বিএ, বিএসসি পার্ট থ্রি পরীক্ষার খাতায় লিখতে হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেনজির এই নির্দেশিকায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়। পক্ষপাতের সম্ভাবনা এড়াতে পরীক্ষার  খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার নিয়ম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু নেই। স্বভাবতই রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নয়া নির্দেশিকা ঘিরে শিক্ষামহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়।

পরীক্ষার খাতায় সাধারণত পরীক্ষার্থীর রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বরই লিখতে হয়। পক্ষপাতের সম্ভাবনা এড়াতে পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার নিয়ম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু নেই। স্বভাবতই রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নয়া নির্দেশিকা ঘিরে শিক্ষামহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। এই বেনজির নিয়ম নিয়ে সাফাই দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক অভিজিত্‍ তলাপাত্র।


Source: Zee 24 Ghanta

Saturday, May 16, 2015

পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার বেনজির নিয়ম চালু বারাসতের রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে

 রেজিস্ট্রেশন নম্বর আর রোল নম্বরই শুধু নয়। পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার বেনজির নিয়ম এবার চালু হল বারাসতের রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি বিএ, বিএসসি পার্ট থ্রি পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীদের নিজেদের নাম লিখতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেনজির এই নির্দেশিকায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

পরীক্ষার খাতায় সাধারণত পরীক্ষার্থীর রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বরই লিখতে হয়। পক্ষপাতের সম্ভাবনা এড়াতে পরীক্ষার খাতায় পরীক্ষার্থীর নাম লেখার নিয়ম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু নেই। স্বভাবতই রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নয়া নির্দেশিকা ঘিরে শিক্ষামহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

এই বেনজির নিয়ম নিয়ে সাফাই দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক অভিজিত্‍ তলাপাত্র।

Source: Zee 24 Ghanta

Monday, May 11, 2015

বারাসতে ‘প্রয়াস’ উদ্যোগে সামিল সহৃদয় ডাক্তাররা

 এ যেন ছোটখাটো হাসপাতাল! হার্টের ডাক্তার থেকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ-রবিবার সকালে সবাই হাজির উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত সঃলগ্ন হৃদয়পুরে৷


অস্থায়ী শামিয়ানা টানানো হয়েছে হৃদয়পুরের প্রণবানন্দ আশ্রম লাগোয়া একটি মাঠে৷ তার মধ্যেই বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍সকদের চেম্বার৷ কেউ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, কেউ কিডনি চিকিত্‍সক, কেউ বা শিশুরোগের ডাক্তার৷ তাঁরা সবাই এ দিন রোগী দেখেছেন পারিশ্রমিক ছাড়াই৷ প্রতি বছরের মতো এ বছর ‘প্রয়াস’-এর কর্ণধার শ্যামল কুমার দাসের ডাকে সাড়া দিয়ে বিনামূল্যে হৃদয়পুরে রোগী দেখতে এসেছিলেন ২৯ জন চিকিত্‍সক৷


হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বিভু চক্রবর্তী রোগী দেখতে দেখতে বললেন, ‘শ্যামল অসাধারণ মানুষ৷ সমাজসেবাই ওঁর জীবনের ব্রত৷ তাই শ্যামল যখন বললেন, না করতে পারলাম না৷ একদিন না-হয় পারিশ্রমিক ছাড়াই রোগী দেখলাম৷’ বিভুবাবুর মতো ‘প্রয়াস’-এর স্বাস্থ্যশিবিরে চিকিত্‍সা করতে আসা অন্যান্য ডাক্তারদের মুখেও শোনা গেল শ্যামলবাবুর ভূয়সী প্রশংসা৷ তবে তাতে কোনও হেলদোল নেই আয়কর আধিকারিক শ্যামল কুমার দাসের৷ রোগীদের দেখভাল করা, চিকিত্‍সকদের গরমে কোনও কষ্ট হচ্ছে কি না, এ সব নিয়েই মাথাব্যথা তাঁর৷ কথায় কথায় শ্যামলবাবু বললেন, ‘সেই ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর এই স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করে আসছি৷ মানুষের জন্য কাজ করতে ভালো লাগে৷ কিন্তু আমি সামান্য সরকারি চাকুরে৷ কাজের ফাঁকে যতটা সময় পাই, সহ-নাগরিকদের বিপদে পাশে দাঁড়াই৷’


বছরে শুধু একটি স্বাস্থ্যশিবিরই নয়, স্বাস্থ্যশিবিরে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শ্যামলবাবুর নেতৃত্বে ‘প্রয়াস’-এর সদস্যরা রোগীদের নিয়ে হাসপাতাল, নার্সিংহোমে পর্যন্ত ছোটাছুটি করেন৷ বারাসতের বাসিন্দা ১৭ বছরের তিথি রায় ভুগছে মারাত্মক ‘অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া’ রোগে৷ এদিন সে হৃদয়পুরে এসেছিল, কিন্ত্ত ডাক্তার দেখাতে নয়৷ তার প্রিয় শ্যামলকাকুর কাণ্ডকারখানা দেখতে৷ যেদিন থেকে তার মারাত্মক এই রোগ ধরা পড়েছে, সেদিন থেকেই তিথির লড়াইয়ের সঙ্গী শ্যামল৷ তিথিকে ভোকাল টনিক থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍সকদের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা সবই নিজের হাতে করেছেন শ্যামলবাবু৷ এদিন তিথির মতো আরও ১৪ জন ক্যান্সার রোগীর লড়াই করার সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে ‘প্রয়াস’৷ এই প্রসঙ্গে শ্যামলবাবু বলেন, ‘তিথি, সীমা মণ্ডল, সুপর্ণা রায়, বিশ্বনাথ ঘোষরা ক্যান্সারে ভুগছেন৷ তবুও দেখুন, হাসিমুখে বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন ওঁরা৷ আমাদের শেখার আছে এই মানুষগুলির কাছ থেকে৷ যুবরাজ কিংবা মনীষা কৈরালাদের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইকে আমরা কুর্নিশ জানালে এঁদের কেন জানাব না? হতে পারে এঁরা তারকা নন, কিন্ত্ত এই মানুষগুলির লড়াইও কোনও অংশে কম নয়৷’


শ্যামলবাবুর এই প্রয়াসে এদিন শামিল হয়েছিলেন ফুটবলার শিল্টন পাল এবং অ্যাথলিট সুস্মিতা সিংহ রায়৷ তাঁরাও মুগ্ধ ‘প্রয়াস’-এর কর্মকাণ্ড দেখে৷ শিল্টন বলেন, ‘চাইলে যে কোনও মানুষই যে অনেক বড় কাজ করতে পারেন, শ্যামলদা তার জলন্ত উদাহরণ৷’ সুস্মিতা জানান, তিনি অভিভূত৷ ‘প্রয়াস’-এর এদিনের স্বাস্থশিবিরে হৃদয়পুর এবং সংলগ্ন এলাকার প্রায় ১২০০ জন রোগী এদিন বিভিন্ন চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিতে এসেছিলেন৷ হৃদয়পুরের বাসিন্দা শান্তি নন্দীর ক’দিন ধরেই বুকে ব্যথা৷ তিনিও এসেছিলেন ‘প্রয়াস’-এর স্বাস্থ্যশিবিরে৷ বললেন, ‘বহু বছর ধরেই আমাদের পরিবারে কারও অসুখ-বিসুখ হলে চিকিত্‍সকের আগে শ্যামলের খোঁজ পড়ে৷ এত পরোপকারী মানুষ খুব কম দেখেছি৷ সারা বছরই প্রয়াসের সদস্যরা রোগীদের নিয়ে এ হাসপাতাল সে হাসপাতাল করে বেড়ায়৷’ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সৌরভ দাস তার বাবার সঙ্গে এসেছিল চিকিত্‍সক প্রণব বিশ্বাসকে দেখাতে৷ ডাক্তারবাবুর ‘চেম্বার থেকে বেরিয়ে বিস্মিতমুখে সৌরভ বলল, ‘এরকম ডাক্তারখানা আগে দেখিনি৷ মাঠে প্যান্ডেলের মধ্যে চেম্বার৷ দারুণ তো!’ এ দিনের স্বাস্থ্যশিবিরে বিভু চক্রবর্তী, প্রণব বিশ্বাস ছাড়াও ছিলেন সুপ্রিয় সরকার, হিমাদ্রি সাহা, জয়ন্ত দাসের মতো আরও অনেকে৷

Source: Ei Samay

Thursday, February 5, 2015

সংস্কারের অভাবে ‘হানাবাড়ি’ বারাসত স্টেডিয়াম

 এক সময় যা পাওয়ার জন্য আইএফএ কর্তারা হন্যে হয়ে উঠেছিলেন, এখন হাতে পেয়েও তা ‘গলার কাঁটা’ হয়ে উঠেছে৷


বারাসতের বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গন এখন বাংলার ফুটবলের অভিভাবক সংস্থার ‘গলার কাঁটা’৷ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই স্টেডিয়াম এখন কার্যত হানা বাড়িতে পরিণত৷ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আইএফএ অ্যাকাডেমিও৷


সবথেকে আশঙ্কার কথা, এখানে আই লিগের ম্যাচ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷ এ বার এপ্রিল থেকে যুবভারতীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ আই লিগে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের বাকি দু’মাসের হোম ম্যাচ হওয়ার কথা এই স্টেডিয়ামেই৷ বর্তমানে স্টেডিয়াম ও তার আশেপাশের যা হাল তাতে এই বড় টিমের ম্যাচ দেওয়া হলে বিরাট দুর্ঘটনা ঘটে যাবে৷ এআইএফএফ যদি এই স্টেডিয়াম এখন পরিদর্শন করে তাহলে নিরাপত্তার অভাব দেখিয়ে তারা ম্যাচ তুলে নেবেই৷ মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে তাহলে আর ঘরের মাঠে ম্যাচ খেলার সুযোগই থাকবে না৷ কারণ যুবভারতীর বিকল্প হিসেবে বারাসত ছাড়া রয়েছে কল্যাণী৷ কিন্তু কল্যাণীতেও সংস্কারের কাজের জন্য স্টেডিয়াম বন্ধ৷


বছর চারেক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের থেকে ২৫ বছরের লিজে এই স্টেডিয়াম ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছিল আইএফএ৷ এর জন্য স্টেডিয়াম রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্বই বর্তেছিল আইএফএর ওপর৷ চুক্তির শর্তে পরিষ্কার বলা হয়েছিল, স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও এর পরিকাঠামোর উন্নয়ন, পথঘাট নির্মাণ, আলো ও সৌন্দর্যায়ন করার কাজও করতে হবে আইএফএকে৷ তৈরি করতে হবে আধুনিক মানের প্রেসবক্সও৷


কিন্তু এই চার পাঁচ বছরের মধ্যে সুইমিং পুল ছাড়া পরিকাঠামোগত উন্নয়ন কিছু হয়নি৷ আর এই সুইমিং পুলটাই একমাত্র এই স্টেডিয়ামে রোজগারের একমাত্র পথ আইএফএর৷ একটা টেনিস কোর্ট করা হয়েছিল৷ তাতে কোনও দিনই খেলা না হওয়ায় এখন আপাতত তা আগাছার জঙ্গলে মুখ ঢেকেছে৷ ব্যাডমিন্টন কোর্টে ঢোকার অবস্থা নেই৷ কারণ সেখানে মাথার উপর ভেঙে পড়ছে সিমেন্টের চাঙর৷


আইএফএ তার অ্যাকাডেমি গত আড়াই বছর থেকে এখানেই চালাচ্ছে৷ কিন্তু ফুটবলারদের থাকার স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থাও যেমন করা হয়নি, তেমনই হয়নি সংস্কারও৷ ফলে বাথরুম থেকে শুরু করে থাকার জায়গা এত বেহাল হয়ে পড়েছিল যে চলতি সপ্তাহ থেকে সেই অ্যাকাডেমিও অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল৷


স্টেডিয়াম চত্বর ঘুরে দেখা গেল, যেন এক ভগ্নস্তুপ৷ আগাছার জঙ্গল, গ্যালারির বাইরের দিকে খসে পড়া চাঙর৷ অ্যাকাডেমির ছেলেদের থাকার ঘরের জানলা দিয়ে দেখা গেল, চারদিকে নোংরা ছেঁড়াখোঁড়া অগোছালো বিছানাপত্র, ঘরের মধ্যে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে বৈদ্যুতিক তার৷ তাদের থাকার জায়গার বাইরেও বৈদ্যুতিক কেবল ঝুলছে আরও বিপজ্জনকভাবে৷ জলের ট্যাপগুলো সবই খারাপ৷ গ্যালারির ভিতরের দিকে বাথরুমগুলোর অস্তিত্ব নেই বললেই চলে৷ রাস্তাঘাটও পাল্লা দিয়ে খারাপ৷ সন্ধে নামার পর চারদিকে নেমে এল অন্ধকার৷ গেটের সামনে কয়েকটা আলো৷ ভিতরটা পুরো অন্ধকারে ডুবে রয়েছে৷


স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, দীর্ঘদিনের উদাসীনতার ফলে বারাসতের গর্বের এই স্টেডিয়ামের আজ হাল৷ ফিফার টাকায় তৈরি অ্যাস্ট্রো টার্ফ দেখা আর সুইমিং পুল চালিয়ে রোজগার করা ছাড়া আইএফএ আর কিছুতেই নজরদারি করতে পারছে না৷ অথচ স্টেডিয়াম দেখাশুনোর জন্য গত কয়েক বছরে কর্মী সংখ্যা অনেক বেড়েছে৷ অভিযোগ, জেলবন্দি ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের সুপারিশে ঢোকা চার কর্মচারী আইএফএ কর্মীদের থেকেও বেশি মাইনে পেতেন৷ এঁদের মধ্যে


তিনজন এখন কাজেই আসেন না৷ বাকিরাও তত্ত্বাবধানের অভাবে কাজ করেন না৷ তাই এই বেহাল অবস্থা৷


জানা গেল, স্টেডিয়ামকে ম্যাচ করানো ও অ্যাকাডেমি চালানোর জন্য উপযোগী করে তুলতে প্রায় দু’কোটি টাকা দরকার৷ স্পনসরহীন কলকাতার ফুটবলের এমনিতেই ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা৷


আইএফএ-ও তার নিয়মিত কাজকর্ম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে৷ সেখানে এই টাকা পাওয়া খুব কঠিন৷ এর মধ্যে অবশ্য আশার আলো দেখাচ্ছেন আইএফএ সচিব উত্‍পল গঙ্গোপাধ্যায়৷ স্টেডিয়ামের বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েও তিনি বললেন, ‘সংস্কারের কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি৷ অ্যাকাডেমি বন্ধ রাখা হয়েছে সে জন্যই৷ মার্চ মাসের মধ্যে আমরা ফের তা ব্যবহার উপযোগী করে তুলব৷ আই লিগের ম্যাচ আয়োজনের কোনও সমস্যা হবে বলে মনে করি না৷’


সচিব আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতি বলছে, আগের মতো এ বারও হয়তো বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ঢেলে জোড়াতালি দিয়ে আইএফএ আই লিগ ম্যাচ উতরে ফেলবে৷ কিন্তু সামগ্রিক উন্নয়ন বা রক্ষণাবেক্ষণের পাকা ব্যবস্থা কিছুই হবে না৷ অদূর ভবিষ্যতে আইএফএর হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে এই স্টেডিয়াম৷


Source: Ei Samay