Wednesday, August 5, 2020

সম্প্রীতির বাংলা, বারাসাতে রামের পুজো করলেন মুসলিমরা!

 সব অপেক্ষার অবসান। ধূমধাম করে অযোধ্যায় হয়ে গেল রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে সামনে থেকে উপস্থিত থাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর হাতে দিয়েই হয়ে শিলান্যাস। অনুষ্ঠানের সময় নিজের বক্তৃতায় স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে রাম মন্দির আন্দোলনের তুলনা করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বুধবার তিনি বিশ্বজুড়ে রামের প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টিও তুলে ধরেন। ভারত তথা বিশ্ব, এমনকী মুসলিম প্রধান দেশেও রামায়ণের অস্তিত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি। আর সেখানেই যেন সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিল বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ।


বুধবার অযোধ্যায় যখন ধূমধামের সঙ্গে চলছে ভূমিপুজো, তখন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের নতুনপল্লিতে হিন্দু মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই একযোগে রামের পুজো করলেন। তাঁদের কথায়, রাম কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতিভূ নন। রাজা হিসেবে রামচন্দ্রের প্রধান ধর্ম হল দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। নতুনপল্লির স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব আহমেদ খানের নেতৃত্বে আয়োজিত হয়েছিল ওই পুজো। অবশ্য রাজীব আহমেদ খান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিজেপি সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি। ফলে এর সঙ্গে বিজেপির নাম জুড়ে গেলেও হিন্দু-মুসলিম একযোগে রাম পুজো করছে, বিষয়টির প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষও।


শুধু রাজীব আহমেদ খানই নন, বিজেপি কর্মী মোহম্মদ বাবলু মোল্লা ও রহিম মণ্ডলদের পাশাপাশি বহু হিন্দু ধর্মাবলম্বীও এই পুজোয় যোগদান করেছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার এ এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই।


এদিন নিজের ভাষণেও প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'রাম ঐক্যের প্রতীক। যেভাবে ভগবান রামের জন্যে জয় পেতে সকলে একসঙ্গে এত বছর ধরে চেষ্টা করেছেন, যেভাবে সকলে স্বাধীনতার লড়াইয়ে গান্ধীজির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই আজ দেশবাসীর প্রচেষ্টায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হল।'


অপরদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরাসরি রাম মন্দির প্রসঙ্গে কিছু না বললেও ট্যুইটে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে লেখেন, 'হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান -একে অপরের ভাই-ভাই! আমার ভারত মহান, মহান আমার হিন্দুস্তান! আমাদের দেশ তার চিরায়ত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে, এবং আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবে এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষিত রাখব।' রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর আবহে সেই সম্প্রীতির ছবিটাই যেন ফুটে উঠল। হয়ত তা একটি জায়গাতেই, কিন্তু সেটারও প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য।


Source: Ei Samay

Thursday, July 30, 2020

করোনায় আয় বন্ধ, বাদ্যযন্ত্র ছেড়ে দুধ বিক্রিতে শিল্পী

 গানবাজনাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। প্রথাগত শিক্ষা সে ভাবে না পেলেও অধ্যাবসায়ের জোরে বারাসতের হৃদয়পুরের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ মুখোপাধ্যায় রীতিমতো নামকরা শিল্পী। পার্কাশন বাজান। তবলা, কঙ্গো-সহ একাধিক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানেন। দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে কলকাতা, মুম্বইয়ের নামজাদা গায়ক-গায়িকাদের সঙ্গে বাজিয়েছেন। সঙ্গীতের সূত্রে বিদেশেও গিয়েছেন তিনি। কয়েক মাস আগেও জলসায় চুটিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন। কিন্তু করোনার কারণে শহরতলির সফল এই সঙ্গীতশিল্পীর জীবন ওলোটপালট হয়ে গিয়েছে। লকডাউন তাঁকে বাধ্য করল পেশা বদলাতে। পেটের টানে গৌরাঙ্গ এখন দুধ বিক্রি করেন।


বারাসতের পশ্চিম হৃদয়পুর হরিহরপুর এলাকায় থাকেন গৌরাঙ্গ মুখোপাধ্যায়। সুযোগ পেয়েছেন মহম্মদ আজিজ, বিনোদ রাঠোর থেকে বাপ্পি লাহিড়ির অনুষ্ঠানে বাজানোর। কলকাতায় শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, অরুন্ধতী হোমচৌধুরী থেকে হালফিলের শিল্পীদের সঙ্গেও বাজানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর। কিন্তু পরিস্থিতিতে জলসা-সহ সব রেকর্ডিং বন্ধ। ফলে কাজ হারিয়েছেন গৌরাঙ্গ। মাস তিনেক বসেই ছিলেন। কিন্তু এই ভাবে সংসার চলবে না। ছেলের পড়াশোনোর খরচও রয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই পেশা বদলের সিদ্ধান্ত। শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতায় এখন তিনি দুধ বিক্রির ব্যাবসায়।


এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বর্ষীয়ান শিল্পী শিবাজি চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'শিল্পীদের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। গৌরাঙ্গবাবু একা নন, ওঁর মতো আরও অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন অন্য রাস্তা খুঁজে নিতে। তবে উনি তো তাও অন্য কাজের সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু বহু শিল্পী এমন শারীরিক অবস্থায় বা বয়সে পৌঁছে গিয়েছেন, যাঁদের পক্ষে অন্য কাজেও যাওয়া সম্ভব নয়।' শিবাজির আশঙ্কা, 'মানুষের পেটে খাবার থাকলে তবেই তাঁরা বিনোদনের কথা ভাবেন। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার একেবারে শেষ পর্যায়ে শিল্পজগৎ পুরোনো গতি ফিরে পাবে। তার আগে নয়। তত দিন পর্যন্ত বহু শিল্পীকে মারাত্মক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।' তাঁর আবেদন, গৌরাঙ্গর মতো বা তাঁর চেয়েও দুঃস্থ শিল্পীদের বিপিএল কার্ডের আওতায় এনে বিনামূল্যে খাবারটুকু পৌঁছে দেওয়া গেলে ভালো।



তবে শিবাজি যে মারাত্মক দুঃস্থ শিল্পীদের কথা ভেবে আশঙ্কায় রয়েছেন, গৌরাঙ্গ এখনও তেমন সাফাই কর্মী অবস্থায় পড়েননি। বদলে তিনি জলাঞ্জলি দিয়েছেন তাঁর স্বপ্নের জায়গাটা। ভোর সাড়ে চারটেয় সাইকেল নিয়ে ছুটতে হয় বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম। প্যাকেটের দুধ নিয়ে এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করেন। এক শুভাকাঙ্ক্ষী নিজের দোকান ছেড়ে দিয়েছেন তাঁকে। বেলার দিকে গৌরাঙ্গ সেখানে দই, লস্যি, পনির বিক্রি করেন। গৌরাঙ্গ বলেন, 'কলকাতা, মুম্বইয়ে ফাংশন বন্ধ। টুকটাক কিছু কাজ হয়, কিন্তু পারিশ্রমিক কম। সাড়ে তিন মাস বসেই ছিলাম। ফলে সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে। বন্ধুর পরামর্শে পেশা বদল করে ফেললাম।' আপাতত তালবাদ্য নয়, ডেয়ারি প্রোডাক্টাই তাঁর এবং পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। আর তাই রাতে এখনও ঘুমোতে পারছেন তিনি। যে ঘুমের ভিতর স্বপ্নে এখনও দেখতে পাচ্ছেন, সেই সব মঞ্চ, সেই সব জলসা- আলোর রোশনাইয়ে যেখানে এখনও শোনা যাচ্ছে গান, এখনও পড়ছে হাততালি। শুধু অতীতের নয়, গৌরাঙ্গ চোখ বন্ধ করে তাকিয়ে আছেন ভভিষ্যতের সেই সোনালি স্বপ্নের দিনগুলোর দিকে।

Source: Ei Samay

Sunday, July 26, 2020

লকডাউনের জের, বারাসতে উচ্চমাধ্যমিক মার্কশিট প্রদান নিয়ে ধোঁয়াশা

সাতদিনের লকডাউনে বারাসাতের উচ্চমাধ্যমিক মার্কশিট প্রদান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মধ্যে। ৩১ তারিখ উচ্চমাধ্যমিকের জন্য নির্দিষ্ট স্কুলের ক্যাম্প অফিস থেকে স্কুলগুলিকে উচ্চ- মাধ্যমিকের মার্কশিট দেওয়ার কথা।


অথচ সেদিনও লক ডাউন থাকছে বারাসাত পৌরসভা এলাকা জুড়ে। যেকারণে সময়মত মার্কশিট দেওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে। বারাসাতের অধিকাংশ স্কুলই মার্কশিট সঠিক সময়ে দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বারাসাত পৌরসভার প্রশাসক মন্ডলীর প্রধান সুনীল মুখার্জী জানিয়েছেন, স্কুলগুলি যেন ক্যাম্প অফিস থেকে উচ্চমাধমিকের মার্কশিট সুষ্ঠ ভাবে তুলতে পারে সেজন্য সহযোগিতা করা হবে। এবং এক্ষেত্রে ক্যাম্প অফিস থেকে মার্কসিট দেওয়ার জন্য লক ডাউনের নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞায় থাকছে না।


Source: OneIndia 


Wednesday, July 22, 2020

বারাসত স্টেডিয়ামে এবার সেফ হোম

 সরকারি হাসলপাতালে বেড পেতে কালঘাম ছুটছে। খরচের গুঁতোয় বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার উপায় নেই অনেকেরই। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় বারাসতে তাই দ্বিতীয় কোভিড হাসপাতাল করতে চেয়েছিল স্বাস্থ্য দপ্তর। কিন্তু স্থানয়ীদের চাপে তা আর হয়ে ওঠেনি। শেষপর্যন্ত কোথাও কোনও জায়গা না পেয়ে বারাসত স্টেডিয়ামে ৫০ শয্যার সেফ হোম তৈরি করছে পুরসভা। সেফ হোমে উপসর্গ নেই এমন করোনা আক্রান্তদের রাখা হবে। বুধবার থেকে চালু হবে এই সেফ হোম।


বারাসত ও সংলগ্ন এলাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অথচ হাতে একটি কোভিড হাসপাতাল। কদম্বগাছির হাসপাতালটি বাদ দিলে ছিল বারাসতে অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ারান্টিন সেন্টার। সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় দ্বিতীয় হাসপাতাল খোলার চেষ্টা করেও স্থানীয়দের বাধায় পিছিয়ে আসতে হয় প্রশাসনকে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এলাকায় কোভিড হাসপাতাল হলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। এ অবস্থায় শহরের মধ্যে অথচ তুলনামূলক ফাঁকা, বারাসত স্টেডিয়ামে সেফ হোম তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।


সেফ হোমে রোগীদের খাওয়ারদাওয়ার বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। সকালে চা ও বিস্কুট। প্রাতরাশে থাকবে রুটি, সব্জি, ডিমসেদ্ধ। কোনও দিন থাকবে মাখন-পাউরুটি। সঙ্গে কলা এবং ডিম। দুপুরে চার দিন মাছ, দু'দিন মাংস। নিরামিষ একদিন। মেনু ভাত, ডাল, আলুভাজা, সব্জি। এ ছাড়া মাছ অথবা মাংস বা পনির। শেষপাতে চাটনি। রাতের মেনুতে ভাত,ডাল, সব্জি, পনিরের পাশাপাশি মিষ্টিও দেওয়া হবে।


স্টেডিয়ামের দুটি ড্রেসিং রুম এবং একটি বড় হলঘরকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। দু'টি ড্রেসিংরুমে ৪২ জন পুরুষ আক্রান্তকে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। হলঘরে থাকবেন দশ জন মহিলা। থাকছে পুরুষদের জন্য তিনটি এবং মহিলাদের জন্য দুটি স্থায়ী শৌচালয়। স্টেডিয়ামের মধ্যে পাম্প থাকলেও জলের লাইন বা ট্যাঙ্ক ছিল না। সেই সমস্যা মেটাতে দু'হাজার লিটারের নতুন জলের ট্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে। জলের পাইপ লাইনের কাজও শেষ।


তিনটি ঘর মিলিয়ে কুড়িটি স্ট্যান্ড ফ্যান ও ৪৫টি টিউবলাইট লাগানো হয়েছে। রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্টেডিয়ামের লনকে বাহারি গাছ ও ফুলের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে। এই লনে পায়চারি করতে পারবেন আক্রান্তরা। লনের এক প্রান্তে চেয়ার পেতে দেওয়া হয়েছে। রয়েছে এলইডি টিভি। তিনটি ঘরেই বক্স লাগানো হয়েছে। একঘেয়েমি কাটানোর জন্য প্রতিটি ঘরে সাউন্ড সিস্টেম লাগিয়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। রয়েছে তাস, লুডো ক্যারামের ব্যবস্থাও।


পুরসভার বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা সেফ হোম নিয়ে পুরোপুরি তৈরি। তৈরি ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। বুধবার স্টেডিয়ামের সেফ হোম চালু হয়ে যাবে।'


Source: Ei Samay

Monday, July 20, 2020

বারাসত হাসপাতালে নতুন কন্ট্রোল রুম

 এই রাজ্যে সম্প্রতি চিকিৎসা না পেয়ে করোনা আক্রান্ত একাধিক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সেই কথা মাথায় রেখে এ বার করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুবিধার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নতুন করে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু করা হল। মূলত করোনা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে এই কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। 


উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। করোনা পরিস্থিতির উপরে নজরদারি রাখতেই ১৫ জন চিকিৎসক ও কর্মী নিয়ে শুরু হল করোনা কন্ট্রোল রুম। প্রশাসন সূত্রে খবর, বারাসত হাসপাতালের পুরনো ব্লাড ব্যাঙ্কটিকে কন্ট্রোল রুম হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ, সোমবার থেকে এই কন্ট্রোল রুম চালু হচ্ছে।


জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই কন্ট্রোল রুমে তিনটি শিফটে এক জন করে মেডিক্যাল অফিসার এবং এক জন করে চিকিৎসক থাকবেন। কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং এই জেলার করোনা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার উপরে নজর রাখা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে আরও খবর, মূলত উপসর্গহীন রোগীদের ঘরে থাকতেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা পজ়িটিভ হয়েছে এই আতঙ্কে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে অনেকের। সেই কারণেই জেলার করোনা পজ়িটিভ রোগী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখা হবে এই কন্ট্রোল রুম থেকে। প্রয়োজনে তাঁদের কাউন্সেলিং করা হবে। করোনা ভীতি কাটিয়ে কী ভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে কন্ট্রোল রুমে থাকা চিকিৎসক সবই বুঝিয়ে দেবেন।


প্রশাসন সূত্রের আরও খবর, জেলার কোন কোভিড হাসপাতালে কত শয্যা রয়েছে, তার কতগুলি ফাঁকা হল, সবই এই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কোনও রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কন্ট্রোল রুম থেকেই মেডিক্যাল অফিসার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করবেন। এ ছাড়াও গোটা জেলার করোনা রোগীদের আনা-নেওয়ার জন্য মোট ২১টি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার ব্যবস্থাও থাকছে।


রবিবার এ বিষয়ে বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার করোনা আক্রান্ত মানুষের জন্যই এই কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বরও রাখা হয়েছে। কখনও কোনও সমস্যা বা অসুবিধা হলে কন্ট্রোল রুমে ফোন করে জানালে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’


এ দিন বারাসত এবং মধ্যমগ্রামে কড়া পুলিশি পাহারা ছিল। লকডাউন মেনে দুপুর ১টার পর থেকে বন্ধ ছিল সমস্ত দোকানপাট। এ দিন রাস্তায় মাস্ক না পরে বার হওয়া মানুষের সংখ্যাও ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। পুলিশ জানিয়েছে, কড়া নজরদারি চলবে। কোনও সমস্যা হলে হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Source: Anandabazar


Thursday, July 9, 2020

বারাসাত মেগাসিটি নার্সিংহোম হচ্ছে কোভিড হাসপাতাল, বিজ্ঞপ্তি জারি স্বাস্থ্যভবনের

বারাসাত মেগাসিটি নার্সিংহোম হচ্ছে কোভিড হাসপাতাল। আগামী সপ্তাহ থেকে এই নার্সিংহোম হবে কোভিড হাসপাতাল। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হচ্ছে মেগাসিটি নার্সিংহোম। বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্যভবন।

Source: ABP Live

Saturday, June 27, 2020

কন্যাশ্রীর টাকায় সাফাইকর্মীদের মাস্ক-গ্লাভস দিল দশমের পড়ুয়া

 কন্যাশ্রী থেকে পাওয়া এবং জমানো টাকায় সাফাইকর্মীদের হাতে মাস্ক, গ্লাভস এবং টুপি তুলে দিল দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া।

করোনা পরিস্থিতিতে জীবন বাজি রেখে প্রতিদিন কাজ করে চলেছেন সাফাইকর্মীরা। তাঁদের পাশে দাঁড়াল প্রেরণা সমাদ্দার। কন্যাশ্রীর টাকা এবং নিজের সঞ্চয় থেকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে মাস্ক, গ্লাভস কিনে তা বারাসত পুরসভার সাফাইকর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছে সে। প্রেরণার এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়।



১৫ বছরের প্রেরণা থাকে বারাসতের টাকি রোডের ধারে শ্রীনগরে। বারাসত গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া সে। গত তিন বছরের কন্যাশ্রীর টাকা তার অ্যাকাউন্টে জমেছে। শুধু তাই নয়, নিজের হাতখরচা থেকে টাকাও জমিয়েছে সে। বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে সেই টাকা দিয়ে সে কিনেছে মাস্ক, গ্লাভস এবং টুপি। যা এই করোনা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। করোনা সংক্রমণে লকডাউনে ঘরবন্দি থেকেছে পুরো দেশ। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যায়নি। ব্যতিক্রম করোনা যোদ্ধারা। করোনার হাত থেকে সমাজ এবং সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে দিনরাত কাজ করছেন সাফাইকর্মীরা। প্রতিদিনের জমে থাকা নোংরা, আবর্জনা পরিষ্কার করে তাঁরা পরিবেশ বাসযোগ্য রেখেছেন। এই কর্মীদের জন্য মাস্ক, গ্লাভস খুবই প্রয়োজনীয়।


বৃহস্পতিবার ৬০ জোড়া গ্লাভস, ৫০টি মাস্ক এবং ৫০টি টুপি নিয়ে স্কুলের পোশাকেই প্রেরণা হাজির হয় বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়ের অফিস ঘরে। সেখানেই সে তার আনা সামগ্রী তুলে দিয়েছে সাফাইকর্মীদের হাতে। প্রেরণার এর জন্য খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা। প্রেরণার কথায়, ‘করোনা পরিস্থিতিতেও বারাসত পুরসভার সাফাইকর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। তাঁদের মাস্ক ও গ্রাভস ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এর জন্যই আমার এই উদ্যোগ।’ প্রেরণা জানিয়েছে, কন্যাশ্রী থেকে ৩ হাজার টাকা পয়েছে। বাকিটা জমানো। মেয়ের এই উদ্যোগে খুশি প্রেরণার মা রীতা সমাদ্দার। তিনি বলেন, ‘মেয়ের এই চিন্তা-ভাবনা এবং কাজে আমাদের পুরো সমর্থন রয়েছে। আমি চাই প্রেরণা নিজের কাজের মধ্যে অন্যের প্রেরণা হয়ে উঠুক।’


Source: Ei Samay

Thursday, June 25, 2020

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেখতে এসেছিলেন এই রথের মেলা ! করোনার জন্য বন্ধ বারাসতের রথের মেলা

 রথের মেলাকে ঘিরেই জায়গাটার নাম হয়েছে রথতলা। নকশাল অন্দোলনের পর থেকেই আর রথ টানা হয় না এই রথতলায়। উত্তর ২৪ পরগনার প্রাচীন তম রথের মেলার একটি বারাসতের রথতলা। এই প্রাচীন মেলার মাঠে গতকয়েক বছর ধরে  আসে রথ। তবে রথতলা থেকে প্রথা মেনে আর রথে যাত্রা হয় না। নবীন প্রজন্ম রথ ছাড়া রথের মেলা মানতে নারাজ ছিল। তারাই স্থানীয় জগবন্ধু আশ্রমের দারস্থ হন। জগন্নাথের পূজারীরা যে  রথ বের করেন জগবন্ধু আশ্রম থেকে, সেই রথকে নিয়ে আসা হবে বারাসাত রথতলাতে। তবে মাঠে মেলা বসে। সময়ের সঙ্গে মাঠের জায়গাও ছোট হয়েছে। তাই জগবন্ধু আশ্রম থেকে নিয়ে আসা রথ রাখা হবে কোথায়?


মুকুল চ্যাটার্জী, মেলা আয়োজক জানান, সবাই মিলে ঠিক হয় কাছে জোড়া শিব মন্দিরে সামনে রাখা হবে রথ।জোড়া মন্দিরে রাখা রথই গত কয়েক বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে। আর এবার করোনার প্রকোপের জেরেই সেই রথ ও এল না রথতলায়।এই মেলায় পাঁপড়, বাদাম আর খেলনার জিনিসের পাশাপাশি নানা ধরনের গাছ বিক্রি হল অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক সময় এই রথের মেলায় উল্টো রথের শেষ দিন হত বৌ মেলা।ঐতিহ্যের সেই মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।কিন্তুু বর্তমান সময় গাছ বিক্রি ও কেনাতেই ছিল শহর তথা জেলার মানুষের কাছে আসল আকর্ষণ। এবছর করোনার প্রকোপে রথতলার মেলার আয়োজকরা মেলা বন্ধ রেখেছে।আমফান ঝড়ের পর গাছ পড়েছে বহু।কিন্তুু গাছ কিনে বসানোর সেই বাসনা থেকে শহর বাসি বঞ্চিত রইল এবার।মেলার আয়োজক মুকুল চ্যাটার্জী এদিন জানান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এক সময় এই মেলায় এসে পূজা দিয়ে গিয়েছেন। এমন ঐতিহ্য মেলা এবার বসল না। আর ভরা বর্ষাতে গাছ বেঁচে দু পয়সা দেখল না বিক্রেতা।সবচেয়ে বড় কথা এই মেলার গাছেই গৃহস্থের উঠান সবুজ হয়।পরিবেশ তরতাজা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা মগরা থেকে আসা গাছ বিক্রেতা পরিতোষ মন্ডলের কথায়, মহাজন থেকে গাছ তো দিন ১৫ আগেই কিনেছেন এই মেলার জন্য। মেলা বন্ধে তাদের মাথায় হাত।মহাজন তো আর গাছ ফিরিয়ে নেবে না। সব লস শুধুই তার।


Source: News18

Wednesday, June 10, 2020

লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও মাসিক ফি কমছে না, প্রতিবাদে বারাসতে পথ অবরোধ অভিভাবকদের

 লকডাউনে প্রায় মাস তিনেক স্কুল বন্ধ থাকলেও, বেঁধে দেওয়া মাসিক ফি-ই নিচ্ছে স্কুল। যার প্রতিবাদে আজ বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে এক বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করলেন। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে চলে অবরোধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকরা কথা বলতে চাইলেও অভিযোগ, কেউ কথা তো বলেনইনি, উলটে অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। অবরোধের ফলে এদিন কিছুক্ষণের জন্য ডাকবাংলো মোড়ে যানজট তৈরি হয়।


তিন মাস ধরে স্কুল বন্ধ। ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। এই অবস্থায় স্কুলগুলির অনেক খরচই কমেছে। যেমন, ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহার না হওয়ায় কমেছে বিদ্যুতের খরচ। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে না যাওয়ায় পরিবহণ খরচ একেবারেই শূন্য। এই পরিস্থিতিতে সব হিসেবনিকেশ মাথায় রেখে বেসরকারি স্কুলগুলো কম মাসিক ফি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, বারাসতের ওই বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলটি সরকারের আবেদনে কর্ণপাত না করে বরাবরের মতো মাসিক ফি ৪৩০০ টাকাই নিচ্ছে। এই অঙ্ক কমাতে বললেও, তারা নারাজ। অভিভাবকদের তরফে এক প্রতিনিধি দল স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, দেখা করে এ বিষয়ে আলোচনা করার। বহুবার আবেদন সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।


ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে আজ সকালে তাই অভিভাবকরা স্কুলে যান। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান। অভিযোগ, কেউ তো তাঁদের সঙ্গে কথা বলেনইনি, উলটে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এরপরই ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এমনিতে যতক্ষণ ক্লাস হয়, তার অর্ধেক সময়েও অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। কোনওক্রমে ১ থেকে ২ ঘণ্টা ক্লাস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তাই অভিভাবকদের দাবি, শুধুমাত্র টিউশন ফি তাঁরা দিতে রাজি। অন্য যে কোনও ফি মকুব করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। যদিও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।


Source: Sanbadpratidin

Saturday, June 6, 2020

অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত উত্তম কুমারের স্মৃতিবিজড়িত বারাসতের মিষ্টির দোকান

 মাত্র কয়েক দশক আগের কথা। বারাসতের উপর দিয়ে গেলে একটি মিষ্টির দোকানে অবশ্যই দাঁড়াতেন উত্তম কুমার ও কিশোর কুমার। মিষ্টিমুখ করতেন, দোকানের মালিকের সঙ্গে খানিক খোশগল্প করতেন, তারপর আবার গন্তব্যে রওনা দিতেন। শনিবার বারাসতের সেই মিষ্টির দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেল। মুছে গেল ১৫৬ বছরের স্মৃতি।




ওই মিষ্টির দোকানের নাম রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার। বারাসতের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই নাম। সেই দোকান শনিবার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। এদিন ভোরে হঠাৎই ওই মিষ্টির দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। কিন্তু নিমেষের মধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে আগুন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা দোকানটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। দমকলের কর্মীরা শত চেষ্টাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে দমকল ও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।


কিন্তু কেন ওই দোকানে আগুন লাগল বা কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নয় এলাকাবাসী। বরং ১৫৬ বছরের স্মৃতি যে অগ্নিগর্ভে চলে গেল, তা নিয়েই মূহ্যমান তারা। লোকমুখে প্রচলিত, বারাসতের উপর দিয়ে গেলে উত্তম কুমার ও কিশোর কুমারের মতো নামী ব্যক্তিত্বরা এই রাধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে আসতেন। শত ব্যস্ততা থাকুক, একবার দোকানের মিষ্টি না চেখে যেতেন না। ফলে এই দোকান নিয়ে এলাকার মানুষের গর্বেরও সীমা ছিল না। আত্মীয়দের বাড়ি গেলে বা কোনও অনুষ্ঠানে এই দোকানের মিষ্টি খাইয়ে এলাকার মানুষ যে কতবার আত্মসুখ লাভ করেছে, তার হিসেব নেই। রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, বারাসতের দক্ষিণপাড়ার মুখে সেই মিষ্টির দোকানের নামে বাস স্টপও রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ড সেই ঐতিহাসিক দোকান ভস্মীভূত করে দিল, এই নিয়ে মন খারাপ বারাসতের মানুষের।


Source: Sanbadpratidin