Thursday, May 4, 2017

বারাসতের রেজিমেন্ট ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় বিধ্বংসী আগুন

 বারাসতের রেজিমেন্ট ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় বিধ্বংসী আগুন। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত একটি আস্ত বাড়ি। এই ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনায় যদিও হতাহতের কোনও খবর নেই। দমকলের ৪টি ইঞ্জিন দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আগুন আয়ত্বে আনে।

জানা গেছে, আজ বিকেলে বারাসত রেজিমেন্ট ক্লাব সংলগ্ন ওই বাড়িটিতে আগুন লাগে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাড়ির সামনের দোকানঘর ও কোচিং সেন্টারেও। বাড়িটির পিছনে থাকা একটি প্রিন্টিং প্রেসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আগুনে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ৪টি ইঞ্জিন। যে বাড়িটিতে আগুন লাগে তার পাশের দুটি ফ্ল্যাটও এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক অনুমান দমকলের।

Source: Zee 24 Ghanta

Sunday, April 30, 2017

শিগগিরই বারাসতে চালু হয়ে যাবে ই-রিকশা, আশ্বাস পুরপ্রধানের

প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। শহরের ওপর দিয়েই গেছে ৩৪ ও ৩৫ নং জাতীয় সড়ক। অথচ, স্টেশন থেকে শহরে ঢুকতে একমাত্র ভরসা ভ্যান গাড়ি।


চাঁদিফাটা গরম হোক বা অঝোর বৃষ্টি। ভ্যানে চড়েই নিত্যযাত্রীদের পৌঁছতে হয় গন্তব্যে। সে হাসপাতাল হোক, আদালত কিংবা সরকারি অফিস। ভ্যানই একমাত্র ভরসা। ভাড়া বেলাগাম, উপরি পাওনা নিরাপত্তার অভাব। আর দুর্ঘটনা তো লেগেই আছে।


গোদের ওপর বিষফোঁড়া বেআইনি টোটো। যানজটে নাজেহাল বারাসতের মানুষ ভ্যান যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পুরপ্রধানও। তাঁর আশ্বাস, ই -রিকশাই একমাত্র ভরসা। শিগগিরি তা চালু হয়ে যাবে।


Source: Zee 24 Ghanta

Sunday, April 16, 2017

নববর্ষে পথের কুকুরদের অবাক জলপান বারাসতে

 অন্য নববর্ষ পালিত হল বারাসতে৷ রাস্তার সারমেয়দের জলপানের সুবিধা করে দিতে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনই এগিয়ে এলেন বারাসতের কয়েকজন পশুপ্রেমী৷ শহরজুড়ে রাস্তার পাশে রাখা হল পাত্র ভর্তি জল৷ প্রচণ্ড দহনেও পথের সারমেয়রা যাতে জলপান করতে পারে , সে জন্যই এই ব্যবস্থা৷ ইংরেজি নববর্ষে পথের সারমেয়দের মাংস -ভাত খাওয়ানোর পরে গরমে নতুন এই উদ্যোগ পশুপতি অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির৷ সকাল হতেই বাংলার নববর্ষ পালন শুরু হয়ে গিয়েছিল৷ রাজনৈতিক নেতারাও বাদ দেননি এই দিনটিকে৷ গতানুগতিক পন্থা ছেড়ে একটু অন্য রকম ভাবে পথের সারমেয়দের কথা ভাবলেন পশুপ্রেমীরা৷


পোষ্যরা যত্নে থাকলেও রাস্তার কুকুরদের অবহেলাই এখন স্বাভাবিক৷ তাদের জোটে উপেক্ষা৷ এই সময়ে গরমে নানা ধরনের রোগ হয় সারমেয়দের৷ তেষ্টার জলও পায় না অনেক সময়৷ নর্দমার জলই পান করতে হয় তাদের৷ তাই এই উদ্যোগ৷ বারাসতের কলোনি মোড় , তারকেশ্বর মোড় , ছোট বাজার থেকে হাটখোলা , সরোজ পার্ক, বনমালিপুর প্রভৃতি এলাকায় রাস্তার পাশে সিমেন্টের কয়েকটি পাত্র রাখা থাকছে , তা ভরে দেওয়া হচ্ছে জল দিয়ে৷ এই গরমে রাস্তার কুকুরের পাশাপাশি পাখিরাও এই পাত্র থেকে জল পান করতে পারবে৷ কয়েকটি দোকানের বাইরেও এই ধরনের পাত্র রাখার জন্য দোকানিদের কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা৷ যাতে কেউ ওই সব পাত্রে পিক না ফেলেন , সে দিকে নজর রাখার জন্যও দোকানদারদের কাছে আবেদন করেছেন পশুপ্রেমীরা৷ সংস্থার সম্পাদিক লোপামুদ্রা বসু বলেন , ‘বাংলা নববর্ষ মানেই নতুন জামাকাপড় পরে হালখাতায় যোগ দেওয়া৷


অনেকে অন্য ভাবেও পালন করে থাকেন নতুন বছর৷ আমরা বর্ষবরণ করলাম রাস্তার কুকুরদের কথা মাথায় রেখে৷ ’ তিনি বলেন , প্রতিটা বাড়িতেই যদি একটি করে কুকুর রেখে তাদের নিয়মিত খাবার জল দিয়ে যত্ন করা হয় , তা হলে কিন্ত্ত রাস্তায় কুকুরের ভিড় অনেক কমে যাবে৷ রোদে কুকুরেরও কষ্ট হয় , কেউ কেউ ওদের কথা ভাবেন না বলেও আক্ষেপ পশুপ্রেমীদের৷ অর্পিতা বলেন , ‘আমরা নিয়মিত এসে পাত্রে জল দিয়ে যাব৷ দোকানদারদের কাছেও জল দেওয়ার আবেদনও করেছি৷ আগামী দিনে শহরের সর্বত্র এই জলের পাত্র রাখার ব্যবস্থা করব৷ ’


Source: Ei Samay

Saturday, March 18, 2017

দু’বার শিলান্যাসের পরেও মাতৃসদন হল না বারাসতে

 প্রতিশ্রুতি আছে , দু’বার শিলান্যাসও হয়েছে মাতৃসদনের , যা পরিচালনা করবে পুরসভা৷ প্রথম বার শিলান্যাস হয়েছিল বাম আমলে৷ পরে , বর্তমান তৃণমূল বোর্ডও এক বার শিলান্যাস করেছে , তাও প্রায় তিন বছর আগে৷ কিন্ত্ত দু’বারই কাজ শুরুর পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়৷ স্বাস্থ্য কেন্দ্র আর তৈরি হয়নি৷ পুরপ্রধান থেকে স্থানীয় কাউন্সিলর , সকলের এক সুর , ‘কাজ শুরু হয়েছে৷ ’ কিন্ত্ত শিলান্যাসের তিন বছরের মধ্যে কয়েকটা ইট গাঁথা ছাড়া কিছুই হয়নি৷ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ৷ তাই এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের দ্রুত চিকিত্সাও শুরু করা সম্ভব৷ তৃণমূল বারাসতে পুরবোর্ড গঠনের পরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে দ্বিজহরি নগরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে উদ্যোগী হয়৷


২০১৫ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন৷ ন্যাশনাল হেলথ আরবান মিশনের (এনএইচইউএম ) টাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়৷ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য এনএইচইউএমে ৭২ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়েছে৷ প্রথমে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হলেও পরে কুড়ি আসনের মাতৃসদনের পরিকল্পনা আছে বারাসত পুরসভার৷ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদ্যুত্ ভট্টাচার্য বলেন , ‘প্রথম দিকে এই জমিটা বারাসত পুরসভার অধীনে ছিল না , স্থানীয় কয়েকজন সিপিএম নেতার দখলে ছিল৷ আইনি জটিলতা কাটিয়ে আমরাই বারাসত পুরসভার নামে এই জমি হস্তান্তর করি৷ আগামী দু’মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বারাসতবাসীকে উপহার দিতে পারব৷ ’ সিপিএম নেতা দেবব্রত বিশ্বাস বলেন , ‘জমি হস্তান্তরের পরেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রয়োজনীয় কাজ এগোয়নি৷ আমার মনে হয় , তৃণমূল এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি করতে চাইছে না , ওরা অন্য কোথাও জমির খোঁজ করছে৷ ’ বারাসতের পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য ) চম্পক দাস বলেন , ‘এনএইচইউএম প্রকল্পের অর্থে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির পর এটাকে মাতৃসদন হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে৷


এটি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে হওয়ায় দুর্ঘটনাগ্রস্তদের জন্য একটি ট্রমা কেয়ার সেন্টারও তৈরি করা হবে৷ ’ পুরপ্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন , ‘কাজটা শুরু হয়েছে৷ ’ বারাসত পুরসভার উত্তর দিকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের , বিশেষ করে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া লোকজনের চিকিত্সার স্বার্থে পুরসভা পরিচালিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল৷ এ এই সব অঞ্চল থেকে সরকারি ওই হাসপাতালের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত৷


তা ছাড়া সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপও যথেষ্ট৷ জেলার অধিকাংশ পুরসভার অধীনেই রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মাতৃসদন হাসপাতাল৷ ব্যতিক্রম শুধু বারাসত পুরসভা৷ এই বদনাম ঘোচাতেই বামেদের বোর্ড থাকাকালীন বারাসত পুরসভার বর্তমান ৩ নম্বর ওয়ার্ডে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে মাতৃসদন ও চিকিত্সাকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছিল বামেরা৷ ২০০২ সালের জন্য শিলান্যাস করেছিলেন তত্কালীন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী৷


Source: Ei Samay

Friday, February 10, 2017

শিলিগুড়ি নয়, আই লিগ ডার্বি বারাসতেই!

 রবিবারের বড় ম্যাচ নিয়ে পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছে৷ মরশুমের প্রথম ডার্বিতে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দ্বৈরথ দেখার জন্য ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ির টিকিট কেটে ফেলেছেন শহরের ফুটবলপ্রেমীরা৷ কিন্তু ম্যাচ তো বারাসতে! চমকে গেলেন? নাহ্, দুই দলের সমর্থকদের ধন্দে ফেলার কোনও উদ্দেশ্য নেই এই প্রতিবেদনের৷তবে আই লিগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট কিন্তু এখনও এই তথ্যই দিচ্ছে৷


I-league.org ওয়েবসাইটে গিয়ে যদিও আই লিগের সূচি খুঁজে দেখেন, তাহলেই এত বড় ‘ভুল’টি চোখে পড়বে৷ বড় বড় করে লেখা রয়েছে, আগামী রবিবার বিকেল ৪টে ৩৫ মিনিটে বারাসত স্টেডিয়ামেই আয়োজিত হতে চলেছে মরশুমের প্রথম ডার্বি৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই এই তথ্য ফুটে উঠছে৷ এমন অনেক ক্রীড়াপ্রেমী আছেন, যাঁরা অন্য ওয়েবসাইটে ভরসা না করে অফিসিয়াল সাইট থেকে সঠিক সূচি দেখে নিতে অভ্যস্ত৷ অথচ সেখানেই রয়ে গিয়েছে এত বড় ‘ভুল’৷ ইস্টবেঙ্গলের ঘরের মাঠ হিসেবে শিলিগুড়িতে আয়োজিত হবে ম্যাচ৷ বারাসতের থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের দর্শকাসন বেশি হওয়ায় শিলিগুড়িকেই ডার্বির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু বড় ম্যাচের দিন চারেক আগেও ওয়েবসাইটের ‘ভুল’ সংশোধন করা হল না৷ শুধু ডার্বিই নয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধেও শিলিগুড়িতে খেলবে লাল-হলুদ ব্রিগেড৷ অথচ সেই ম্যাচেরও ভেন্যু দেখাচ্ছে বারাসত স্টেডিয়াম৷


Source: Sanbad Pratidin


Thursday, January 12, 2017

টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে বন্ধুর পাশে বারাসত কালীকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের সহপাঠীরা

 অসম্ভব একটা যুদ্ধ৷ তবু জমি ছাড়তে নারাজ কতগুলো কচিমুখ৷ তারাই জড়ো করেছিল ছোট ছোট হাত৷ যা টেনে এনেছে আরও কিছু শক্তপোক্ত হাতকে৷ তারই জোরে লড়াইয়ের রসদ পাচ্ছেন এক দম্পতি৷ দুর্ঘটনার জেরে এখন তখন মেয়ের চিকিত্সা করাতে গিয়ে যাঁরা নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন প্রায় এক মাস৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার ইএম বাইপাস লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ১৪ বছরের ঐশিকী চট্টোপাধ্যায় (রিনি )৷ দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর চিকিত্সার জন্য প্রয়োজন বিপুল অর্থ৷ বেসরকারি হাসপাতালে বিল উঠেছে ২৫ লক্ষ টাকা৷ ওই পরিমাণ টাকার সংস্থান কোথা থেকে করবেন তা ভেবে রাতের ঘুম উবে যায় পেশায় ঠিকাদার সংস্থার সামান্য কর্মী ভাস্করের৷ বারাসতের নবপল্লি এলাকায় চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা চিকিত্সার খরচ ভেবে যখন ঘোর অন্ধকারে তখন তাদের কাছে এক টুকরো আলো নিয়ে হাজির মেয়েরই স্কুলের সহপাঠীরা৷


দেবর্ষিণি দত্ত , শ্রিয়া চক্রবর্তী, অঙ্কিতা সাধুখাঁ ও সুপর্ণা ঘোষ৷ সবাই মিলে ঠিক করে , বন্ধুর চিকিত্সার জন্য তারা তুলে দেবে প্রতিদিনের টিফিনের পয়সা৷ একই সঙ্গে ঐশিকীর চিকিত্সার জন্য তারা নিজেদের স্কুল বারাসত কালীকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রীর থেকে ইতিমধ্যে সংগ্রহ করে ফেলেছে ১৭ হাজার টাকা৷ কিশোরীদের কেউ কেউ হাত পেতেছে আত্মীয়দের কাছেও৷ হাসপাতাল সূত্রের খবর , মাথার খুলিতে অস্ত্রোপচার , পায়ে অস্ত্রোপচারের হওয়ার পর আগের তুলনায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঐশিকীর৷ কিন্ত্ত দুর্ঘটনায় তার খুলির একাংশ এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে , সেই অংশটি এখন আলাদা করে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে৷


মাথার খুলিহীন অংশে ঢেকে রাখা হয়েছে ফাইবারের আস্তরণ দিয়ে৷ বুধবারই তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট সিস্টেম থেকে বের করে আনা হয়েছে৷ যদিও এখনও সংঙ্কটমুক্ত নয় সে৷কী ঘটেছিল ? ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষা শেষে মা ও পিসির সঙ্গে মামারবাড়ি কৃষ্ণনগরে গিয়েছিল ঐশিকী৷ সেখানেই পড়ে গিয়ে পায়ে গুরুতর চোট লাগে তার৷ বাসে -ট্রেনে ফিরতে একমাত্র মেয়ের সমস্যা হবে ভেবে একটা ইন্ডিকা গাড়ি ভাড়া করে চট্টোপাধ্যায় পরিবার৷ ওই গাড়িতে বসেই ১৫ ডিসেম্বর বারাসতে ফিরছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী৷ বারাসত -জাগুলিয়ার দিকে যাওয়ার পথে একটি বাস হঠাত্ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা সেই গাড়িটির পাশে ধাক্কা মারে৷


আশ্চর্যজনক ভাবে গাড়ির চালক , মা ও পিসি অক্ষত থাকলেও গুরুতর আহত হয় ১৪ বছরের কিশোরী৷ মাথা ও পায়ে ভয়ানক আঘাত লাগে তার৷ তড়িঘড়ি স্থানীয় বাসিন্দাদের তত্পরতায় পরিবারের সদস্যরা প্রথমে তাকে বারাসত মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান৷ তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন , অবিলম্বে মাথার অস্ত্রোপচার না করলে কিশোরীকে বাঁচানো সম্ভব নয়৷ এর পর তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও জানানো হয় একই কথা৷


একমাত্র সন্তানকে বাঁচাতে ওই রাতেই ইএম বাইপাস সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে আসেন বাবা ভাস্কর৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিত্সার খরচ শুনে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের৷ সে সময় আঁধারপথে আলোবর্তিকা হয়ে ওঠে তার সহপাঠীরা৷ আদরের একমাত্র ভাগ্নির চিকিত্সার খরচ তুলতে ফেসবুকে ‘ফাইট ফর রিনি ’ নামে একটি পেজ খুলে ফেলেন মামা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সৌম্যব্রত রায়চৌধুরীও৷ চিকিত্সার জন্য সাহায্য মেলে , এমন একটি ওয়েবসাইটেও অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি৷ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঐশিকীর চিকিত্সার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে৷


বাকি ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছেন আত্মীয় , বন্ধুবান্ধব ও বারাসত পুরসভা৷ সৌম্যব্রত বলছেন ,‘বন্ধুদের পরামর্শেই সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হয়েছিলাম৷ তবে এতটা সাড়া মিলবে তা ভাবিনি৷ সকলের কাছে আমরা ঋণী৷ ’পরিবারের দরজায় সাহায্যের ঝাঁপি নিয়ে হাজির প্রতিবেশী থেকে স্কুলের শিক্ষিকারাও৷ বিপদের দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত মনে করেন বলেই চট্টোপাধ্যায় পরিবারকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছেন বলে জানালেন দমদমের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী জয়ন্ত বাগচী৷ তিনি বলছেন , ‘আমি একা নয় , আমাদের বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে অনেকেই ঐশিকীর চিকিত্সার জন্য সাহায্য করেছেন৷ ’


স্থানীয় কাউন্সিলর দীপক দাশগুপ্তও নিজে উদ্যোগী হয়ে ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে ওই ছাত্রীর চিকিত্সার জন্য ৫০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন৷ যদিও তিনি এতে নিজের কৃতিত্ব মানতে নারাজ৷ ‘ঐশিকীর চিকিত্সায় যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তাতে ওই টাকা সমুদ্রে একবিন্দু জলের মতো ,’ বলছেন দীপক৷ ১ লক্ষ টাকা দিয়েছেন ঠিকাদার সংস্থার মালিক সৌরেন দেও৷ পেশায় ঠিকাদার সংস্থার কর্মী বাবা ভাস্কর বলছেন , ‘আমার যা ক্ষমতা তাতে সকলে সাহায্য না করলে মেয়েটাকে হয়তো এত দিন বাঁচাতে পারতাম না৷ ’ আর কান্নাভেজা গলায় বারাসতের বাড়িতে বসে মা সোমা বলছেন , ‘মেয়েটাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারব কি না জানি না৷


তবে বিপদের দিনে যে ভাবে সবাই পাশে দাঁড়ালেন তা দেখে এটা বুঝেছি , ভালো মানুষ যে এখনও আছে৷ ’শহুরে মধ্যবিত্তরা এখন ছেলেমেয়েদের এলাকার বাংলা মাধ্যম স্কুলে পাঠান না৷ মফস্সলের একটি বাংলা মাধ্যম স্কুলও জীবন -মরণের এই যুদ্ধে জড়িয়ে উঠে এসেছে আলোর বৃত্তে৷ এ ভাবে সহপাঠীকে বাঁচাতে ছাত্রীরা এগিয়ে আসায় খুশি স্কুলের শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা বসু৷ ইংরেজির এই শিক্ষিকা বলছেন , ‘ভেবেও ভালো লাগছে যে , আমি এই স্কুলের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত৷ তবে ঐশিকী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলে আরও ভালো লাগবে৷ ’ স্কুল থেকে অর্থ সংগ্রহের কাজ এখনও চলছে৷ যে উদ্যোগে জড়িয়ে আছে একটা আকুতিও --- ‘ফাইট রিনি ফাইট৷ 

Source: Ei Samay

Tuesday, November 1, 2016

বারাসতে মাতৃ বন্দনায় আলো ও থিমের উত্সব

 মাতৃ রূপেন সংস্থৃতা। মাতৃ আরাধনায় মেতে উঠেছে দেশ। বারাসতে মাতৃ বন্দনায় আলো ও থিমের উত্‍সব।


শতদল ক্লাব- এবারের পুজো চুয়াল্লিশ বছরে পড়ল। ঝিনুক, কাঠের গুড়ো, নারকেলের ছোবরা দিয়ে অক্ষয় ধামের আদলে তৈরি হয়েছে শতদল ক্লাবের মণ্ডব।  প্রতিমাতে ধরা পড়েছে মহামায়া থেকে কালী রূপের সৃষ্টি রহস্য।


বিদ্রোহী ক্লাব- প্লাইউড,ফাইবার, শোলা দিয়ে  সেজে উঠেছে বারাসতের বিদ্রোহী ক্লাবের মণ্ডপ। আদতে ভেলোরের মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডব। এবার পঞ্চাশ বছরে পড়ল বিদ্রোহী ক্লাবের পুজো।


সন্ধানী ক্লাব- নীরবে বন্দি শৈশব। শিশু মনের কত কথা। মনে পড়ে বড় হলে। সেইসব শৈশব স্মৃতিকে নিয়ে থিম সন্ধানী ক্লাবের। সন্ধানী ক্লাব মণ্ডব সজ্জায় উঠে এসেছে কিভাবে নেট দুনিয়া কেড়ে নিচ্ছে শৈশব।


Source: Zee 24 Ghanta

Wednesday, October 26, 2016

শিল্পাঞ্চলে মূর্তি বেচতে এসেছেন বারাসতের শিল্পীরা

 আর একটা গোটা সপ্তাহ বাকি নেই৷ চলে এসেছে কালীপুজো৷ সেই উপলক্ষে সুদূর বারাসত ও দত্তপুকুর থেকে শিল্পাঞ্চলে চলে এসেছেন পাঁচ জন শিল্পী৷ তাঁদের সঙ্গে রয়েছে পোড়ামাটির কালীমূর্তি, প্রদীপ বিশেষ ধরনের ছোট ঘোড়া , গণেশ -লক্ষ্মীর মূর্তি-সহ সুন্দর কাজ করা ফুলদানি৷ সালানপুরের গ্রামে গ্রামে বা বরাকর কুলটি অথবা চিত্তরঞ্জন শহরে তিন জন শিল্পী তাঁদের পোড়ামাটির শিল্পসামগ্রী নিয়ে বিক্রির জন্য ঘুরছেন৷ ওদের দু’জন সাহেব পাল আর অমিত পাল বলেন , ‘আমাদের মধ্যে একজনের বাড়ি বারাসতে৷ অন্য জনের দত্তপুকুরে৷ গত বছর আমরা শিল্পাঞ্চলে এসে এভাবে দীপাবলির আগে পোড়ামাটি দিয়ে তৈরি নানা রকমের জিনিস রং করে বিক্রি করেছিলাম৷


বার আসানসোল মহকুমার রূপনারায়ণপুর , চিত্তরঞ্জন৷ সালানপুর , কুলটি , বরাকর -সহ বিভিন্ন এলাকায় ৭ -৮ দিন ধরে ফেরি করব৷ ডাবরমোড়ের কাছে আমরা তাবু করে রয়েছি৷ ভালো বিক্রিবাট্টা হলে আরও দু’জন আসবেন৷ একটা প্রদীপের দাম পাঁচ টাকা৷ কালী মায়ের মুখ ১২০ টাকা৷ আর দীপাবলিতে উপলক্ষে আরও নানা ধরনের মাটির মূর্তি পাওয়া যাবে৷ সেগুলোর আলাদা আলাদা দাম৷ ’যেখানে তাবু খাটিয়ে শিল্পীরা মূর্তি-প্রদীপ তৈরি করে , রং করে করছেন সেখানে ক্রেতার সংখ্যা কম৷ কেন ? উত্তরে শিল্পী সাহেব পাল বলেন , ‘এখনও তেমন করে প্রচার হয়নি৷ তিন দিন হল এসেছি৷ এখানে তেমন বিক্রিবাট্টা না হলেও আমাদের কয়েক জন গ্রামে ও শহরে ঘুরে ঘুরে জিনিস ফেরি করছেন৷ তাঁদের কাছ থেকে প্রচুর জিনিস বিক্রি হচ্ছে৷ ’


যাঁরা ঘুরে ঘুরে পোড়ামাটির জিনিস ফেরি করছেন , তাঁদের এক জন হলেন রমেন পাল৷ তিনি বলেন , ‘আজ বাসে করে যাওয়ার সময়েই ২টো কালীর মুখ আর ১০টা প্রদীপ বিক্রি হয়ে গেল৷ ’ কিন্ত্ত অনেকেই বলছেন দাম অনেক বেশি৷ কেন ? উত্তর এল , ‘দাম তো বেশি হবেই৷ গঙ্গা থেকে মাটি এনে তা দিয়ে শিল্প হচ্ছে৷ তার উপরে ৫ -৭ জনের থাকা -খাওয়ার খরচ রয়েছে৷ ’এ দিকে বাইরে থেকে এভাবে শিল্পীরা এসে পোড়ামাটির জিনিস বিক্রি করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মৃত্শিল্পীরা৷ বরাকরের মৃত্শিল্পী পাপ্পু পাল বলেন , ‘আমরা দীপাবলি আর কালীপুজো উপলক্ষে প্রদীপ তৈরি করি৷ এছাড়াও ছোটখাট লক্ষ্মী -গণেশের মূর্তি গড়ি৷ এমনিতেই চিনে আলোর জন্য বাজার মন্দা৷ এখানে এসে যেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে সেগুলোর ডিজাইন আমাদের চেয়ে বেশি ভালো৷ ফলে আমাদের যেটুকু বাজার ছিল , সেটাও নষ্ট হচ্ছে৷ তবে এটাও ঠিক যে ওগুলোর দাম অনেক বেশি৷ সবাই তো আর অত বেশি দাম দিয়ে ওদেরটা কিনবেন না৷ আমজনতার জন্য আমরা আছি৷ ’


Source: Ei Samay

Wednesday, October 12, 2016

বারাসতের কিশলয় হোমের আবাসিকদের পুজো রঙিন করল পুলিশ

 রাস্তার দু’ধারে কাশফুলের বন আর আকাশে পেঁজা তুলোর মেঘ৷ তার মধ্যে দিয়েই ছুটে চলেছে বাস৷

 

বাসের জানলা দিয়ে আবাক দৃষ্টিতে এই অপরূপ দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে এক দল কুঁচোকাঁচা৷ “কী সুন্দর মেঘ…”৷ “রাস্তার পাশেও কত প্যান্ডেল..”৷  “দারুণ মজা হচ্ছে!”


হবেই তো৷ কারণ ওদের জগৎ চার দেওয়ালের মধ্যে৷ সারা বছর কুড়ি ফুট উচু পাঁচিলে ঘেরা হোমের মধ্যেই ওদের দিনরাত একাকার৷ সারা বছরই পড়শোনা, খেলাধুলা ও অন্যান্য কাজ নিয়ে মেতে থাকলেও পুজোর সময় ঢাকে কাঠি পড়তেই ওদেরও মন কেমন করে৷ পুজো মণ্ডপের থেকে ভেসে আসা মাইকের আওয়াজ ওদের কানেও আসে৷ রাতভর রাস্তা দিয়ে গাড়ির আওয়াজ আর মানুষের গুঞ্জন শুনে ওরাও বুঝতে পারে সবাই ঠাকুর দেখতে যাচ্ছে৷ কারও বয়স ছয়, কারও দশ, কারও আবার ষোলো৷ ওরা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের কিশলয় ও মধ্যমগ্রামের নিজলয় হোমের আবাসিক৷ দুর্গাপুজোর সময় হোমের বড় বড় পাঁচিলের বাইরের জগৎটা যে একেবারে অন্যরকম সেটা তারা জানে৷ দেখার ইচ্ছেও খুব৷ কিন্তু প্রতিবছরই আইনের বেড়াজাল বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওদের সামনে৷ তবে এবারের পুজোয় যেন সব পালটে গেল৷


অষ্টমীর সকালে উঠেই স্নান করে প্রত্যেকে সেজেগুজে ‘রেডি’৷ দুপুরে খাওয়া দাওয়া, তার পর বড় বাসে চেপে বেড়িয়ে পড়া৷ ঠাকুর দেখতে৷ কাছে পিঠে নয়, দূরে৷ বারাসত ও মধ্যমগ্রাম ছেড়ে দু’ধারে কাশ ফুলের মহড়ার মধ্যে দিয়ে সেই বাস ওদের নিয়ে গেল সুদূর বনগাঁয়৷ কিশলয় ও নিজলয় হোমের আবাসিকদের এবছরের পুজোকে এমনই রঙিন করে তুলেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ৷ এই দুই হোমের আবাসিকদের বাসে করে হাবড়া ও বনগাঁর পুজো দেখানোর আয়োজন করে তারা৷ প্রায় দু’শোর বেশি কুঁচোকাঁচাদের, দুই ভাগে অষ্টমী ও নবমীর দিন প্রথমে জেলা পুলিশ লাইনে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়৷ তারপর বাসে করে পুজো পরিক্রমা৷ সঙ্গে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়-সহ দুই হোমের আধিকারিকরা৷


কিশলয় হোমের সুপার মলয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এর আগে কয়েকবছর বাচ্চাদের নিয়ে বারাসতের কয়েকটা পুজো দেখানো হয়েছে৷ ওদের নিরাপত্তার ব্যাপার থাকে৷ তাই বেশি দূরে কোথাও যাওয়া যায় না৷ তবে বাসে করে ওদের ঠাকুর দেখতে যাওয়া এই প্রথম৷ জেলা পুলিশের জন্যই এই অসম্ভব কাজটা সম্ভব হয়েছে৷ বাচ্চারা খুব আনন্দ করেছে৷” অষ্টমী ও নবমীতে হাবড়া ও বনগাঁর বিভিন্ন প্যান্ডেল ঘুরে দেখে এই কুঁচোকাঁচারা৷ উত্তর ২৪ পরগনায় দুর্গাপুজোয় বিখ্যাত বনগাঁর বড় বড় পুজো দেখে একেবারে তাক লেগে যায় তাদের৷


কেউ বলল, “এত বড় প্যান্ডেল, এত বড় ঠাকুর আগে দেখিনি কখনও৷” আবার কেউ বলে, “বাসের থেকে আকাশটা কত সুন্দর লাগছিল, আমাদের হোম থেকে তো এত সুন্দর লাগে না৷” জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “হোমের ছেলে ও মেয়েরা তো পুজোর সময় এই সুযোগটা পায় না৷ তাই আমরা চেয়েছিলাম ওদের পুজোটা একটু ভাল করে দেখাতে৷ পুলিশের যে সামাজির দায়িত্ব সেটাই একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে আমরা পালন করার চেষ্টা করেছি৷ বাচ্চারা যে আনন্দ করেছে এটাই আমাদের প্রাপ্তি৷”


Source: Sanbad Pratidin


Wednesday, August 24, 2016

রণক্ষেত্র বারাসত স্টেডিয়াম, রেফারিকে ফেলে মারলেন সেনা ফুটবলাররা

 লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে হামেশাই এমন ঘটনা ঘটে৷ ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা, পেরু, বলিভিয়ার মতো দেশগুলিতে স্থানীয় ক্লাব ফুটবলে খেলার মাঠে হাতাহাতি-মারামারি গড়পরতা বিষয়৷ দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে মারামারি গড়ায় ড্রেসিং রুম পর্যন্ত৷ তাতে কর্তাব্যক্তিরাও যোগ দেন৷ হিংসা ছড়ায় গ্যালারির দর্শকদের মধ্যেও৷ পরে বোমাবাজি, গুলিবৃষ্টি, দাঙ্গার আখার নেয় তা৷ একবার তো রেফারিই নিজেই পকেট থেকে রিভলবার বের করে ফুটবলারকে গুলি মেরে দিয়েছিল৷ আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে ফুটবল ম্যাচে হিংসার বলি হয়ে ফি বছর মারা যান বহু মানুষ৷


কিন্তু এসবই তো বহির্বিশ্বের ঘটনা৷ তা নিয়ে শহরবাসীর মাথাব্যাথা কী? তবে মঙ্গলবার কলকাতা ফুটবল লিগের একটি ফুটবলে ম্যাচে যা হল তা এই দেশগুলির ঘটনারই সমান৷


এরিয়ান বনাম আর্মি একাদশের ম্যাচ ঘিরে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বারাসতের বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গন৷ তাও গ্যালারিতে নয়, একেবারে মাঠের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় মারামারি-হাতাহাতি৷ চলতি কেন, কলকাতা লিগে এমন দৃশ্য এর আগে চোখে পড়েনি৷


সেনা দলের তরফে অভিযোগ, প্রথম থেকেই এরিয়ানকে টেনে খেলাচ্ছিলেন কোচ৷ এরিয়ানের ডাগআউট ও সমর্থকদের দিক থেকে সেনাদের তাক করে লাগাতার গালিগালাজ ভেসে আসছিল৷ রেফারিকে সে কথা জানালেও তিনি তা কানে নেননি৷ ঘটনা চরম পর্যায়ে পৌঁছয় ম্যাচের শেষ দিকে৷ তখন খেলার বয়স ৮৯ মিনিট৷ কোনও পক্ষই তখনও গোলের মুখ খুলতে পারেনি৷


এরিয়ানের পরিবর্ত নামার জন্য সময় নষ্ট হচ্ছিল৷ তখনই রেফারি অজিত দত্তর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সেনা দলের কোচ বিবি কার্কি ও কোচিং স্টাফরা৷ কার্কির অভিযোগ, রেফারির সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোচকে ধাক্কা মারেন৷ রেগে গিয়ে সেনা দলের ফুটবলাররা রেফারিকে মারতে শুরু করেন৷ সেনাদের ক্ষোভের হাত থেকে রক্ষা পাননি চতুর্থ রেফারি উত্তম সরকারও৷ এমনকী রেফারিকে মাটিতে ফেলে পেটানো হয়৷ রেফারির গায়ে হাত তোলার ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন কোচ৷ গোলশূন্যভাবে শেষ হয় ম্যাচ৷


গোটা ঘটনা ইতিমধ্যেই আইএফএ-এর কানে পৌঁছেছে৷ আইএফএ-এর তরফে জানানো হয়েছে, রেফারির রিপোর্ট ও ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷


Source: Sanbad Pratidin