Saturday, May 29, 2021

বারাসতে বিশেষ বাসে অক্সিজেন পাবেন মুমূর্ষু করোনা রোগীরা

 হাসপাতাল বেডের অভাবে অক্সিজেন না পেয়ে, বিনা চিকিত্সায় কোনো রোগীর যেন মৃত্যু না হয়। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে বারাসত হাসপাতালে চালু হল অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার বাস। মূলত উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তার উদ্যোগেই চালু করা হল এই অভিনব উদ্যোগ। এর ফলে এবার বাসে বসেই মুমূর্ষু রোগীরা অক্সিজেন পরিষেবা পাবেন। তার সঙ্গে মিলবে আনুষঙ্গিক অন্যান্য পরিষেবাও।


হাসপাতালের সুপার সুব্রত মন্ডল জানান, বারাসত হাসপাতালে এমন ১০টি বেড আছে, যেখানে করোনা আক্রান্তরা আপত্কালীন অক্সিজেন কিওর পরিষেবা পেতে পারেন। এর পরেও অনেক করোনা আক্রান্ত মানুষ আসছেন, যাঁদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন অনেকটাই কমে গিয়েছে। কিন্তু তাঁদের হাসপাতালে রাখার মতো কোনো বেড নেই। অথচ সেই সব রোগীকে সেই মুহূর্তে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া জরুরি। সে ক্ষেত্রে এই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর বাস সেই সাপোর্ট দেবে রোগীদের। বাসে জায়গা বেশি থাকায় একসঙ্গে অনেক রোগীকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া যাবে। 


জেলাশাসক সুমিত গুপ্তার উদ্যোগেই নেওয়া এই অভিনব উদ্যোমে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার বাস সম্পর্কে জেলাশাসক জানান, সাধারণ বাসের মধ্যে যেমন সিট থাকে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার বাসেও তেমনই রয়েছে। সিটে বসে প্রত্যেক রোগী যাতে অনায়াসে অক্সিজেন নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোগীকে শুধু অক্সিজেন সাপোর্টই দেওয়া নয়, সঙ্গে আনুষঙ্গিক সমস্ত চিকিৎসাও চালানো যাবে এই বাসের মধ্যে। তারপর হাসপাতালে বেড খালি হলে সেই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হবে হাসপাতালের বেডে।


হাসপাতালের সুপার জানান, এই বাসটি ২৪ ঘন্টাই বারাসত হাসপাতালে এমার্জেন্সির সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। কারণ যত ক্রিটিক্যাল রোগী হাসপাতালে আসেন, তাঁদের প্রথমে এমার্জেন্সিতেই নিয়ে আসা হয়। তত্ক্ষণাত্ হাসপাতালে বেড না মিললে সময় নষ্ট না করে যাতে শীঘ্রই অন্তত অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে জরুরি চিকিত্সা পরিষেবা শুরু করা যায়, তার জন্যই এই উদ্যোগ। এই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার বাস চালু হওয়ায় এলাকাবাসী উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী জেলাশাসক।


Source: Ei Samay

Saturday, May 15, 2021

মানবিক উদ্যোগ, বিনাপয়সায় করোনা আক্রান্তের বাড়ি খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন বারাসতের মা-মেয়ে

 এ যেন এক অদ্ভুত সময়। এমন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছি আমরা, যেখানে আপন হয়ে যাচ্ছে পর আর, পর থেকে আপন হয়ে উঠতে সময় লাগছে এক মুহূর্ত। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ভয় দূরে ঠেলে মানবসেবায় ব্রতী হয়েছেন ওঁরা। সম্পর্কে মা-মেয়ে, শুভ্রা মুখোপাধ্যায় ও ঋদ্ধি ভট্টাচার্য।



বারাসতের (Barasat) নবপল্লির বাসিন্দা পেশায় হাইস্কুলের শিক্ষিকা শুভ্রাদেবী ও তাঁর মেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী ঋদ্ধি মিলে করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি দু’বেলা খাবার পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে শুনলেই দূরত্ব বাড়িয়ে নিচ্ছেন প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব। ফলে দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের। এই খবর শোনামাত্রই তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন শুভ্রাদেবী। মা ও মেয়ে মিলে নিজের বাড়িতে রান্না করে করোনা রোগীদের বাড়িতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন।


সাত দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেছে তাঁদের এই উদ্যোগ। এখন কুড়ি জনেরও বেশি করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন তাঁরা। তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট পাঠিয়ে আবেদন করলেই পরদিন থেকেই বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে খাবার। মূলত বারাসত পুরসভার এলাকার করোনা আক্রান্তদের পাশে থাকতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। মা-মেয়ের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঋদ্ধির বাবা প্রতীপশংকর ভট্টাচার্য। ঋদ্ধি জানান, হোয়াটসঅ্যাপে কোনও করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত ও তাঁর পরিবার খাবার দেওয়ার কথা বললেই তাঁদের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে তা।


খাবারের জন্য কিংবা খাবার পৌঁছতে কোনও টাকা তো লাগবেই না, প্রয়োজনে ওষুধের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন তাঁরা। আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি খাওয়ার পৌঁছে দেওয়ার কাজটা করছেন বন্ধু ও এলাকার কিছু সহৃদয় যুবক। করোনা আক্রান্তদের পুষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিদিন খাবারের মেনুতে থাকছে ভাত, ডাল, উচ্ছে-আলু ভাজা, শাক, আলু-পটলের তরকারি, আলুপোস্ত, ডিম, মাছ, মাংস। যাঁরা নিরামিষ খান তাঁদের জন্য থাকছে সয়াবিন, পনির। বিনাপয়সায় খাবারের পাশাপাশি ওষুধ কীভাবে তাঁরা বিনামূল্যে দেবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ঋদ্ধি জানালেন, এখনও পর্যন্ত নিজেদের খরচে চালালেও তাঁর আত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবীরা তাঁদের সাহায্যের জন্য তৈরি। তাঁদের ধারণা, দুই-একদিনের মধ্যেই সেই সংখ্যাটা প্রায় শতাধিক ছাড়িয়ে যাবে। কেন এই উদ্যোগ? ঋদ্ধির জবাব, “করোনায় আক্রান্ত হলে অনেকেই অসহায় বোধ করেন। খাবার কীভাবে আসবে, ওষুধ কীভাবে আনবেন এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তাঁদের চিন্তামুক্ত করতেই এই উদ্যোগ।” যতদিন করোনার এই ভয়াবহতা থাকবে, ততদিন তাঁরা এই কাজ চালিয়ে যাবেন বলেও জানান ঋদ্ধি। পাশাপাশি তাঁরা চান, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এগিয়ে আসুন করোনা রোগীদের সাহায্যার্থে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ৯১৪৩১৫৬৬৭০। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ৮৯০২১০৫৮৯৭।


Source: Sanbad Pratidin

Wednesday, May 12, 2021

করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত বারাসত আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক

 করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন বারাসত আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৮। কয়েক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ হয়ে বাগুইআটির হাসপাতালে ভরতি ছিলেন বারাসত আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক সৌমেন্দ্রনাথ রায়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার ভোরে ওই হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

জানা গিয়েছে, মৃত বিচারক সৌমেন্দ্রনাথ রায় বারাসত আদালতে কর্মরত ছিলেন। আদতে হাওড়ার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে সপরিবারে বারাসতেই থাকতেন তিনি। তাঁর স্ত্রী কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। দম্পতির এক মেয়ে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরতা।


গত ১৬ এপ্রিল শেষবারের মতো আদালতের কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তার দু’‌দিনের মধ্যেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন বিচারক। ১৯ এপ্রিল এয়ারপোর্ট সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় সৌমেন্দ্রনাথবাবুকে। এরপর সেখানে করোনা পরীক্ষা করা হলে, রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাঁর।

সেখানেই কিছুদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি ডায়াবিটিসও ছিল। গত কয়েকদিন ধরেই ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। তার পরই সৌমেন্দ্রবাবুকে তড়িঘড়ি বাইপাসের ধারে ওই বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শেষমেশ তাঁকে ইসিএমও সার্পোটে দিয়ে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার ভোর ৫ টা নাগাদ একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা গিয়েছে।

Source: Hindustan Times