Saturday, June 27, 2020

কন্যাশ্রীর টাকায় সাফাইকর্মীদের মাস্ক-গ্লাভস দিল দশমের পড়ুয়া

 কন্যাশ্রী থেকে পাওয়া এবং জমানো টাকায় সাফাইকর্মীদের হাতে মাস্ক, গ্লাভস এবং টুপি তুলে দিল দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া।

করোনা পরিস্থিতিতে জীবন বাজি রেখে প্রতিদিন কাজ করে চলেছেন সাফাইকর্মীরা। তাঁদের পাশে দাঁড়াল প্রেরণা সমাদ্দার। কন্যাশ্রীর টাকা এবং নিজের সঞ্চয় থেকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে মাস্ক, গ্লাভস কিনে তা বারাসত পুরসভার সাফাইকর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছে সে। প্রেরণার এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়।



১৫ বছরের প্রেরণা থাকে বারাসতের টাকি রোডের ধারে শ্রীনগরে। বারাসত গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া সে। গত তিন বছরের কন্যাশ্রীর টাকা তার অ্যাকাউন্টে জমেছে। শুধু তাই নয়, নিজের হাতখরচা থেকে টাকাও জমিয়েছে সে। বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে সেই টাকা দিয়ে সে কিনেছে মাস্ক, গ্লাভস এবং টুপি। যা এই করোনা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। করোনা সংক্রমণে লকডাউনে ঘরবন্দি থেকেছে পুরো দেশ। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যায়নি। ব্যতিক্রম করোনা যোদ্ধারা। করোনার হাত থেকে সমাজ এবং সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে দিনরাত কাজ করছেন সাফাইকর্মীরা। প্রতিদিনের জমে থাকা নোংরা, আবর্জনা পরিষ্কার করে তাঁরা পরিবেশ বাসযোগ্য রেখেছেন। এই কর্মীদের জন্য মাস্ক, গ্লাভস খুবই প্রয়োজনীয়।


বৃহস্পতিবার ৬০ জোড়া গ্লাভস, ৫০টি মাস্ক এবং ৫০টি টুপি নিয়ে স্কুলের পোশাকেই প্রেরণা হাজির হয় বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়ের অফিস ঘরে। সেখানেই সে তার আনা সামগ্রী তুলে দিয়েছে সাফাইকর্মীদের হাতে। প্রেরণার এর জন্য খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা। প্রেরণার কথায়, ‘করোনা পরিস্থিতিতেও বারাসত পুরসভার সাফাইকর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। তাঁদের মাস্ক ও গ্রাভস ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এর জন্যই আমার এই উদ্যোগ।’ প্রেরণা জানিয়েছে, কন্যাশ্রী থেকে ৩ হাজার টাকা পয়েছে। বাকিটা জমানো। মেয়ের এই উদ্যোগে খুশি প্রেরণার মা রীতা সমাদ্দার। তিনি বলেন, ‘মেয়ের এই চিন্তা-ভাবনা এবং কাজে আমাদের পুরো সমর্থন রয়েছে। আমি চাই প্রেরণা নিজের কাজের মধ্যে অন্যের প্রেরণা হয়ে উঠুক।’


Source: Ei Samay

Thursday, June 25, 2020

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেখতে এসেছিলেন এই রথের মেলা ! করোনার জন্য বন্ধ বারাসতের রথের মেলা

 রথের মেলাকে ঘিরেই জায়গাটার নাম হয়েছে রথতলা। নকশাল অন্দোলনের পর থেকেই আর রথ টানা হয় না এই রথতলায়। উত্তর ২৪ পরগনার প্রাচীন তম রথের মেলার একটি বারাসতের রথতলা। এই প্রাচীন মেলার মাঠে গতকয়েক বছর ধরে  আসে রথ। তবে রথতলা থেকে প্রথা মেনে আর রথে যাত্রা হয় না। নবীন প্রজন্ম রথ ছাড়া রথের মেলা মানতে নারাজ ছিল। তারাই স্থানীয় জগবন্ধু আশ্রমের দারস্থ হন। জগন্নাথের পূজারীরা যে  রথ বের করেন জগবন্ধু আশ্রম থেকে, সেই রথকে নিয়ে আসা হবে বারাসাত রথতলাতে। তবে মাঠে মেলা বসে। সময়ের সঙ্গে মাঠের জায়গাও ছোট হয়েছে। তাই জগবন্ধু আশ্রম থেকে নিয়ে আসা রথ রাখা হবে কোথায়?


মুকুল চ্যাটার্জী, মেলা আয়োজক জানান, সবাই মিলে ঠিক হয় কাছে জোড়া শিব মন্দিরে সামনে রাখা হবে রথ।জোড়া মন্দিরে রাখা রথই গত কয়েক বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে। আর এবার করোনার প্রকোপের জেরেই সেই রথ ও এল না রথতলায়।এই মেলায় পাঁপড়, বাদাম আর খেলনার জিনিসের পাশাপাশি নানা ধরনের গাছ বিক্রি হল অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক সময় এই রথের মেলায় উল্টো রথের শেষ দিন হত বৌ মেলা।ঐতিহ্যের সেই মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।কিন্তুু বর্তমান সময় গাছ বিক্রি ও কেনাতেই ছিল শহর তথা জেলার মানুষের কাছে আসল আকর্ষণ। এবছর করোনার প্রকোপে রথতলার মেলার আয়োজকরা মেলা বন্ধ রেখেছে।আমফান ঝড়ের পর গাছ পড়েছে বহু।কিন্তুু গাছ কিনে বসানোর সেই বাসনা থেকে শহর বাসি বঞ্চিত রইল এবার।মেলার আয়োজক মুকুল চ্যাটার্জী এদিন জানান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এক সময় এই মেলায় এসে পূজা দিয়ে গিয়েছেন। এমন ঐতিহ্য মেলা এবার বসল না। আর ভরা বর্ষাতে গাছ বেঁচে দু পয়সা দেখল না বিক্রেতা।সবচেয়ে বড় কথা এই মেলার গাছেই গৃহস্থের উঠান সবুজ হয়।পরিবেশ তরতাজা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা মগরা থেকে আসা গাছ বিক্রেতা পরিতোষ মন্ডলের কথায়, মহাজন থেকে গাছ তো দিন ১৫ আগেই কিনেছেন এই মেলার জন্য। মেলা বন্ধে তাদের মাথায় হাত।মহাজন তো আর গাছ ফিরিয়ে নেবে না। সব লস শুধুই তার।


Source: News18

Wednesday, June 10, 2020

লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও মাসিক ফি কমছে না, প্রতিবাদে বারাসতে পথ অবরোধ অভিভাবকদের

 লকডাউনে প্রায় মাস তিনেক স্কুল বন্ধ থাকলেও, বেঁধে দেওয়া মাসিক ফি-ই নিচ্ছে স্কুল। যার প্রতিবাদে আজ বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে এক বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করলেন। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে চলে অবরোধ। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিভাবকরা কথা বলতে চাইলেও অভিযোগ, কেউ কথা তো বলেনইনি, উলটে অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। অবরোধের ফলে এদিন কিছুক্ষণের জন্য ডাকবাংলো মোড়ে যানজট তৈরি হয়।


তিন মাস ধরে স্কুল বন্ধ। ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। এই অবস্থায় স্কুলগুলির অনেক খরচই কমেছে। যেমন, ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহার না হওয়ায় কমেছে বিদ্যুতের খরচ। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে না যাওয়ায় পরিবহণ খরচ একেবারেই শূন্য। এই পরিস্থিতিতে সব হিসেবনিকেশ মাথায় রেখে বেসরকারি স্কুলগুলো কম মাসিক ফি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযোগ, বারাসতের ওই বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলটি সরকারের আবেদনে কর্ণপাত না করে বরাবরের মতো মাসিক ফি ৪৩০০ টাকাই নিচ্ছে। এই অঙ্ক কমাতে বললেও, তারা নারাজ। অভিভাবকদের তরফে এক প্রতিনিধি দল স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, দেখা করে এ বিষয়ে আলোচনা করার। বহুবার আবেদন সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।


ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে আজ সকালে তাই অভিভাবকরা স্কুলে যান। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান। অভিযোগ, কেউ তো তাঁদের সঙ্গে কথা বলেনইনি, উলটে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এরপরই ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা যশোর রোড অবরোধ করেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এমনিতে যতক্ষণ ক্লাস হয়, তার অর্ধেক সময়েও অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না। কোনওক্রমে ১ থেকে ২ ঘণ্টা ক্লাস করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তাই অভিভাবকদের দাবি, শুধুমাত্র টিউশন ফি তাঁরা দিতে রাজি। অন্য যে কোনও ফি মকুব করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তা না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। যদিও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।


Source: Sanbadpratidin

Saturday, June 6, 2020

অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত উত্তম কুমারের স্মৃতিবিজড়িত বারাসতের মিষ্টির দোকান

 মাত্র কয়েক দশক আগের কথা। বারাসতের উপর দিয়ে গেলে একটি মিষ্টির দোকানে অবশ্যই দাঁড়াতেন উত্তম কুমার ও কিশোর কুমার। মিষ্টিমুখ করতেন, দোকানের মালিকের সঙ্গে খানিক খোশগল্প করতেন, তারপর আবার গন্তব্যে রওনা দিতেন। শনিবার বারাসতের সেই মিষ্টির দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেল। মুছে গেল ১৫৬ বছরের স্মৃতি।




ওই মিষ্টির দোকানের নাম রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার। বারাসতের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই নাম। সেই দোকান শনিবার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। এদিন ভোরে হঠাৎই ওই মিষ্টির দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। কিন্তু নিমেষের মধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে আগুন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা দোকানটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। দমকলের কর্মীরা শত চেষ্টাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তবে দমকল ও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।


কিন্তু কেন ওই দোকানে আগুন লাগল বা কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নয় এলাকাবাসী। বরং ১৫৬ বছরের স্মৃতি যে অগ্নিগর্ভে চলে গেল, তা নিয়েই মূহ্যমান তারা। লোকমুখে প্রচলিত, বারাসতের উপর দিয়ে গেলে উত্তম কুমার ও কিশোর কুমারের মতো নামী ব্যক্তিত্বরা এই রাধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে আসতেন। শত ব্যস্ততা থাকুক, একবার দোকানের মিষ্টি না চেখে যেতেন না। ফলে এই দোকান নিয়ে এলাকার মানুষের গর্বেরও সীমা ছিল না। আত্মীয়দের বাড়ি গেলে বা কোনও অনুষ্ঠানে এই দোকানের মিষ্টি খাইয়ে এলাকার মানুষ যে কতবার আত্মসুখ লাভ করেছে, তার হিসেব নেই। রাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, বারাসতের দক্ষিণপাড়ার মুখে সেই মিষ্টির দোকানের নামে বাস স্টপও রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ড সেই ঐতিহাসিক দোকান ভস্মীভূত করে দিল, এই নিয়ে মন খারাপ বারাসতের মানুষের।


Source: Sanbadpratidin