• রবার্ট ক্লাইব বারাসাতের পাঁচ মাইল দঃ কামারডাঙায় প্রসাদোপম বাড়ি কেনেন।
• কম্পানি শাসনের আমলে গভর্নর ওয়ারেন্ট হেস্টিং –এর আত্যন্ত প্রিয় জায়গা ছিল বা শিক্ষার জায়গা ছিল বারাসাত। তখন বারাসাত জঙ্গল বহুল আঞ্চল ছিল। তিনি বারাসাতের উত্তরাঞ্চলে ইংলিশ স্টাইলে একটি দতলা বাড়ি করেন যা হেস্টিং ভেলি নামে পরিচিত। বাড়িটির মেঝে ওক কাঠের, দেয়ালে ইটের গাঁথনি, বড় বড় প্রকাণ্ড দরজা জানালা ইত্যাদি। শোনাজায় ট্রেজারি পর্যন্ত গুপ্ত সুড়ঙ্গ রয়েছে, তার দরজা সরকার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।• ভ্যান্সিতার্ট যিনি লর্ড ক্লাইভের পর গভর্নর হন, তার তিনতলা ভিলাটিতে আছে বৃহৎ ও প্রশস্ত কক্ষসকল, তিরিশ বিঘা আয়তন জুড়ে এই বাড়ি- যা বর্তমানে মহাকুমা শাসকের কার্যালয়।
• মি. ল্যাম্বার্ট বাড়ি করলেন ‘মধুমুরালী’ দীঘির দক্ষিণ-পূর্বে ১৭৬৪ সালে। মিসেস ল্যাম্বার্ট একটি বাজার স্থাপন করেন যার নাম ‘বিবির হাট’।
• শুকর শিকার, তাসখেলা, বলড্যান্স, ডিনারের আসর, রেসকোর্স ইত্যাদি ইস্ট ইন্ডিয়ার শাসক দের সুনিবেন হতে থাকত।
• ফিটনগাড়ি, পালকি ইত্যাদি ছিল ইংরেজ দের বারাসাতে আসার যানবহন।
• এই সময় শাসক দের স্বর্নময় দিনে জন্মেছিলেন এ্যান্টনি কবিয়াল, যিনি ছিলেন একজন এংলো ইন্ডিয়ান।
• ১৭৭৪ সালে বারাসাতের ইংরেজরা ঘোড়ার দৌড় বা রেসকোর্স খেলার সুচনা করে।
• এই সময় বারাসাতের চারপাশে শুরু হয় নীল চাষ। ডাচেরা প্রথম নীল চাষ শুরু করে বারাসাতের পশ্চিমাংশে কলপুকুরে। নিকটবর্তী নীলগঞ্জে বাংলার প্রথম নীল কারখানা তৈরি হয় (১৭৭৯), সমগ্র মহাকুমা ‘Blue Distric’ বা ‘নীল জেলা’ নামে খ্যাত হয়। বারাসাত স্টেশনের কাছে নীলপুকুর, নীলকর সাহেবদের বাংলো ও থাকার জায়গা। এঁদের দুই বোন চাঁপা বা চম্পা ও ডালি যারা ‘চাঁপাডালি’ বা ‘চম্পাডালি মোড়’ নামে বেঁচে আছেন।
• এই সময় নীল কর সাহেবরা নিজেদের ও বারাসাতের গ্রাম বাসীর স্বার্থের জন্য হাটখোলায় ছোট হাসপাতাল নির্মাণ করেন।
• বারাসাত, বাদু ও মহেশ্বরপুর আঞ্চল এখানে ১২০০ ব্রাহ্মন এর বাস ছিল। প্রাচীন অধবাসিরা এর সাপেক্ষে বলেন আগে হাটখোলা মোড়ে রেলস্টেশন বিদ্যমান ছিল। যা হাটখোলার “বারাশত” বানানযুক্ত হোর্ডিং প্রমানের সাক্ষ্য দেয়।
• বারাসাতের মধ্যস্থলে ১৮০২ সালে, সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য ২৫২ বিঘা ২ কাঠা জমির উপর স্থাপিত হয় ক্যাবেট কলেজ বারাসাত ঘষিত হল- “The Sundhurst of Bengal” নামে।
• Licut Charls Paton ৯ই অক্টোবর ১৮১০ সালে Cabit ট্রেনিং শেষ করেন (The Cabit Institute of Barasat under The East India Company )।
• ক্যাবেট দের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারনে ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে ক্যাডেট কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। স্থানটি হস্তান্তরিত হয় নীল কর সাহেবদের হাতে। পরে ১৮৪৪ সালে তা জেলখানায় রূপান্তরিত হয়।
• এর কিছু পরেই বারাসাত থেকে জ্বলে উঠে সাম্রাজ্যবাদি শ্বাসনের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহের ধ্বনি, তিতুমিরের নেতৃত্ব ১৮৩১ সালে বারাসাত বিদ্রোহ। বিদ্রোহ দমনের জন্য বারাসাত ফৌজ নিয়োগ করা হয়। সরকারী নথিপত্রে এই বিদ্রোহ বারাসাত বিদ্রোহ নামে খ্যাত। আরতের এটাই প্রথম কৃষক বিদ্রোহ যেখানে কামান ব্যবহার করা হয়েছিলো।
• জেলা ভবনের খালি জায়গায় ১৮৪৬ সালে ১লা জানুয়ারি সুচনা হয় জেলা স্কুলের। যার বর্তমান নাম “বারাসাত প্যারিচরন সরকার গভার্নমেন্ট স্কুল”। প্যারিচরন সরকার ছিলেন এই স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক, তখন তার বয়স মাত্র ২২। তার সাথে যুক্ত হলেন ডেভিড হেয়ারের ছাত্র কালীকৃষ্ণ মিত্র, তাঁর দাদা ডঃ নবিনকৃষ্ণ মিত্র, প্রতি সপ্তাহে ঘোড়ার গাড়িতে করে আসতেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়, মদনমোহন তর্কলঙ্কার, হরপ্রশাদ শাস্ত্রী প্রমুখ। সাহায্যের হাত বাড়ালেন বিন্নী ট্রেভর, তখনকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। প্যারিচরন লিখলেন 1st and 2nd for Reading।